বেনজীরকে বাঁচাতে তাঁকে গোপনে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে সরকার: মির্জা ফখরুল
সাবেক পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদকে বাঁচানোর জন্য সরকার গোপনে তাঁকে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘জাতিসত্তার রূপকার: রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমান’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগ করেন। জিয়াউর রহমানের ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম ফোরাম এ সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী।
আওয়ামী লীগ সরকারের কড়া সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তারা লুট, চুরির রাজত্ব কায়েম করেছে। পুলিশ বাহিনীর সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন পত্রিকার পাতাজুড়ে দুর্নীতির খবর বের হচ্ছে। দেশের এমন কোনো জায়গা নেই, দখল করেননি। এমনকি হিন্দু সম্প্রদায়ের জায়গাও দখল করেছেন। আর তাঁকে বাঁচানোর জন্য সরকার গোপনে দেশের বাইরে পাচার করে দিয়েছে। লজ্জা হওয়া উচিত।
সাবেক সেনাপ্রধানের প্রসঙ্গে টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। দুর্নীতিতে জড়িত থাকা ও গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার কারণে এই নিষেধাজ্ঞা।
বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেন, একজন-দুজন নয়, সরকার অসংখ্য বেনজীর, আজিজ তৈরি করেছে। মাফিয়া চক্র তৈরি করে গোটা দেশটাকে গিলে খাচ্ছে এই আওয়ামী লীগ সরকার। অথচ দুর্নীতি ও মাফিয়ামুক্ত একটি গণতান্ত্রিক দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই দেশ স্বাধীন হয়েছিল। যেখানে আইনের শাসন থাকবে। ভোট ডাকাতি হবে না।
দেশের মানুষ এখন আর আওয়ামী লীগকে সহ্য করতে পারছে না, উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল তাঁর বক্তব্যে বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি যেসব কাজ করে যেতে পারেননি, তা বাস্তবায়নের জন্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে আত্মত্যাগ করতে হবে। তীব্র থেকে তীব্রতর আন্দোলন গড়ে তুলতে নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
দেশের স্বাধীনতা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, উন্নয়নে জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কথায় কথায় আওয়ামী লীগ জিয়াউর রহমানকে নিয়ে মিথ্যা কথা বলছে। তাঁর অবদানগুলোকে অস্বীকার করা হচ্ছে; কিন্তু আমরা শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তা করি না। জাতির নতুন আইডেনটিটি বা পরিচিতি এনে দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এ কারণে তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। পাকিস্তানের চর ছিলেন, যুদ্ধ করেননি—অপপ্রচার চালায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন আক্রমণ করল, সবাই পালিয়ে ছিলেন।
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও ড্যাবের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ডা. এস এম সারোয়ার আলমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবে রহমান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন নগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম, স্বাগত বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম ফোরামের আহ্বায়ক একরামুল করিম প্রমুখ।