জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টি আরও স্পষ্ট করার আহ্বান জামায়াতের
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় নির্বাচনের বিষয়টি আরও স্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে সরকারপ্রধান জাতীয় নির্বাচনের ব্যাপারে কিছু কথা জাতিকে বলেছেন। আশা করি, অবিলম্বে বিষয়টি তিনি আরও স্পষ্ট করবেন। তাহলে জাতি এ ব্যাপারে আরও আশাবাদী হবে। প্রতিটি দল নিজেদের নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজানোর সুযোগ পাবে।’
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন শফিকুর রহমান। রাজনৈতিক নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান বলেন, ‘গত সাড়ে ১৫ বছরে বিশেষ করে সংবিধান এবং সাংবিধানিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে জঞ্জাল তৈরি হয়েছে, তার কতিপয় জিনিস অবশ্যই পরিষ্কার হওয়া উচিত। এ জন্য সবাই একমত। এখানে দলমত–নির্বিশেষে কারও দ্বিমত নেই যে কোনো সংস্কারের প্রয়োজন নেই। আমরা সবাই বলছি সংস্কারের প্রয়োজন। কতটুকু প্রয়োজন হয়তো সেটা নিয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু সংস্কার যে প্রয়োজন এ ব্যাপারে কোনো মতপার্থক্য নেই।’
সংস্কারের জন্য বর্তমান সরকারকে যৌক্তিক সময় দেওয়া হবে উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘যৌক্তিক সময় মানে অযৌক্তিক সময় কাটানো নয়। আবার যৌক্তিক সময় মানে চাপ দিয়ে হুড়োহুড়ি করা নয়। যৌক্তিক সময় হচ্ছে মৌলিক সংস্কারের জন্য যেটুকু সময় প্রয়োজন আমরা সরকারকে সেটুকু সময় দেওয়ার পক্ষে।’
২০২৪–এর গণবিপ্লবের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার সম্ভাবনা হাতে ধরা দিয়েছে উল্লেখ করে শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মতের ভিন্নতা থাকবে, মতপার্থক্য থাকা—এটা কোনো অপরাধ নয়। বরং এটি একটি গণতান্ত্রিক সমাজের সৌন্দর্য।’
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে জামায়াতের আমির বলেন, ‘আমাদের মতপার্থক্য যেন মতবিরোধে রূপান্তরিত না হয়। আমরা মতপার্থক্যকে স্বাগত জানাই; কিন্তু মতবিরোধ চাই না। আমরা যার যার জায়গা থেকে দলীয় নীতি, দেশকে গড়ার স্বপ্ন এবং পরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরব। যারটা গ্রহণ করবে, যার প্রতি জাতির ভালোবাসা আস্থা তৈরি হবে, সেই জোটের হাতেই জাতি আগামীতে সেবকের দায়িত্ব তুলে দেবে। এই জায়গায় আমরা সবাই সম্মান প্রদর্শন করি।’
জামায়াতে ইসলামীর এই ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির ভাইস চেয়ারমান জয়নুল আবেদীন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ ও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান ও জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ ও মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, যুগান্তরের সম্পাদক আবদুল হাই শিকদার ও কালবেলার সম্পাদক সন্তোষ শর্মা, চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার ব্যক্তিরা ইফতারে অংশ নেন।