জি এম কাদের নয়, রওশনকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান দাবি করে ইসিতে চিঠি

রওশন এরশাদফাইল ছবি

জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান হিসেবে রওশন এরশাদ এবং মহাসচিব হিসেবে কাজী মো. মামুনুর রশিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রওশনপন্থী অংশের মহাসচিব কাজী মামুনুর রশিদ ইসিতে এই আবেদন করেন।

এখন ইসিতে নিবন্ধিত এই দলটির চেয়ারম্যান হিসেবে জি এম কাদের এবং মহাসচিব মুজিবুল হকের নাম রয়েছে। দলীয় কোন্দলের জেরে গত বছর রওশনপন্থীরা সম্মেলন করে আলাদা কমিটি ঘোষণা করেন। এরপর তাঁরা জাপা হিসেবে নিজেদের স্বীকৃতি চেয়ে ইসিতে আবেদন করে। তবে ইসি তখন তাতে সাড়া দেয়নি। এখনো ইসির নথিতে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশই জাপা হিসেবে স্বীকৃত। পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রওশনপন্থীরা আবার ইসিতে আবেদন দিল।

ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা এ আবেদন পেয়েছেন। তবে এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হয়নি। এটি আইনগতভাবে কতটা যৌক্তিক, গ্রহণযোগ্য বা গ্রহণযোগ্য নয়, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে।

ইসি বরাবর করা আবেদনে মামুনুর রশীদ বলেন, ‘বিগত সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আমরা ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হয়েছি। এখন আমরা দেশবাসীর আগামী দিনের গণতন্ত্র সুসংহত করার আশা–আকাঙ্ক্ষার প্রতীক বর্তমান নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছি।’

আবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচনের ফাঁদে পা দেওয়া নিয়ে জাতীয় পার্টির মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। তখন পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুকূল্য নিয়ে তৎকালীন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গংরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। তখন শেখ হাসিনা তাঁর স্বাক্ষরে জাতীয় পার্টির ২৬ জনকে মনোনয়ন প্রদান করেন। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় পার্টি যখন বিলুপ্তপ্রায়, তখন পার্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং পার্টির সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী বেগম রওশন এরশাদ জাতীয় পার্টির বর্ধিত সভা আহ্বান করেন। ২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পার্টির বর্ধিত সভায় সর্বসম্মতভাবে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে এবং মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাঁদের পদ থেকে সাংগঠনিক নিয়মে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই বর্ধিত সভায় ২০২৪ সালের ৯ মার্চ জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

চিঠিতে বলা হয়, সংগঠনের যাবতীয় বিধিবিধান মেনে যথাসময়েই রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে জাতীয় পার্টির ইতিহাসে সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ গণতান্ত্রিক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিপুলসংখ্যক দেশি–বিদেশি সাংবাদিক এবং বিদেশি কূটনীতিকদের উপস্থিতিতে এই সম্মেলনে বেগম রওশন এরশাদ চেয়ারম্যান, কাজী ফিরোজ রশীদ কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান এবং কাজী মো. মামুনুর রশীদ মহাসচিব নির্বাচিত হন।