পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে ভোট চাওয়ায় ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমানের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী রোববার বেলা তিনটায় ব্যক্তিগতভাবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসিতে হাজির হয়ে এই ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
আজ শুক্রবার ইসির পক্ষে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয়-২ শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ শাহজালাল স্বাক্ষরিত চিঠিতে এই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়। পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান যে তিন প্রার্থীর জন্য ভোট চেয়েছিলেন, তাঁদের কাছেও ব্যাখ্যা চেয়েছে ইসি। তাঁদেরও রোববার বিকেল চারটায় ইসিতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
মহিববুর রহমানকে দেওয়া ইসির চিঠিতে বলা হয়, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপে ৫ জুন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩১ মে পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার ছোট বাইশদিয়া ইউনিয়নের কোড়ালিয়া ঘাট নামক স্থানে ও চালতাবুনিয়া ইউনিয়নের চালতাবুনিয়া বাজারে ত্রাণ বিতরণের সময় তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান। ওই তিন প্রার্থী হলেন চেয়ারম্যান পদে মু. সাইদুজ্জামান মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে রওশন মৃধা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বেগম ফেরদৌসী পারভীন।
ইসির চিঠিতে বলা হয়, উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬–এর বিধি ২২ অনুসারে একজন সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে মহিববুর রহমানের প্রচারণা বা নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ আচরণবিধি লঙ্ঘন। এই আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে কেন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য ইসি সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান মাইক্রোফোন হাতে বক্তব্য দিচ্ছেন। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের সব সমস্যার সমাধান করে দেব। আমি যে তিনজনকে ভোট দিতে বলেছি, এই উপজেলা নির্বাচনে প্রত্যেককে আপনারা ভোট দেবেন। সবাই হাততালি দেন। বাকি আপনাদের সমস্যা আমি দেখব।’
প্রতিমন্ত্রী যে তিন প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছেও আলাদা চিঠি দিয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে ইসি। ওই প্রার্থীদের দেওয়া ইসির চিঠিতে বলা হয়, ত্রাণ বিতরণের সময় প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান আপনার উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন, যা উপজেলা পরিষদ (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর লঙ্ঘন।