আবদুল আউয়াল মিন্টু ৭৩ বছর বয়সে মাস্টার্স করলেন

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস লতে মাস্টার ডিগ্রি (এলএলএম) অর্জন করলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক আবদুল আউয়াল মিন্টু। পাশে তাঁর স্ত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়াল
ছবি: সংগৃহীত

এবার ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস লতে মাস্টার ডিগ্রি (এলএলএম) অর্জন করলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক আবদুল আউয়াল মিন্টু। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের কুইন মেরি কলেজ থেকে তিনি এই ডিগ্রি অর্জন করেন। গত সোমবার ইউনিভার্সিটির বার্বিকান সেন্টারে গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান হয়। সেখানে উপস্থিত থেকে আবদুল আউয়াল মিন্টু সনদ গ্রহণ করেন।

আবদুল আউয়াল মিন্টু ২০১৭ সালে ইউনিভার্সটি অব লন্ডনে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস লর ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তি হন। তিনি সাফল্যের সঙ্গে চারটি কোর্স সম্পন্ন করেন। এর আগে আবদুল আউয়াল মিন্টু আরও দুটি বিষয়ে মাস্টার্স করেন। একটি অ্যাগ্রিকালচারাল অব ইকোনমিকস, অন্যটি মেরিন ট্রান্সপোর্টেশন।

আবদুল আউয়াল মিন্টু দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান। তাঁর বয়স ৭৩ বছর। এই বয়সেও বাবার এমন কীর্তিতে অভিভূত ছেলে তাবিথ এম আউয়াল। সোমবার ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস লতে বাবা মাস্টার ডিগ্রির সনদ নেওয়ার পর তিনি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে একটি পোস্ট দেন।

তাবিথ আউয়াল লিখেছেন, ‘আমার বাবা আবদুল আউয়াল মিন্টু প্রতিনিয়ত তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের অনুপ্রাণিত করেন। রাজনীতি, সমাজসেবা, ব্যবসা সবকিছু সামলে এখনো জ্ঞানচর্চার জায়গায় তাঁর বিন্দুমাত্র ছাড় নেই। বরং প্রতিবছরই যেন আমাদের জন্য সফলতার নতুন নতুন মান নির্ধারণ করে দেন তিনি। আজ বাবাকে আবারও অভিনন্দন জানাই তাঁর তৃতীয় মাস্টার ডিগ্রি (মাস্টার অব লজ) অর্জনের জন্য।’

আবদুল আউয়াল মিন্টুর তিন ছেলে। তাবিথ আউয়াল তাঁর বড় ছেলে। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গত দুই নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী ছিলেন তাবিথ আউয়াল। তাঁর আরও দুই ভাই আছেন। তাঁরা হলেন তাফসির এম আউয়াল ও তাজওয়ার এম আউয়াল।

আবদুল আউয়াল মিন্টুর জন্ম ১৯৪৯ সালে ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলায়। তিনি ফেনী পাইলট হাইস্কুল থেকে ১৯৬৪ সালে এসএসসি এবং ১৯৬৬ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রামের মার্কেন্টাইল মেরিন একাডেমি থেকে নৌবিজ্ঞানে ডিপ্লোমা করেন। এরপর মেরিন একাডেমি থেকে জাহাজের ক্যাডেট হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন। ১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে নিউইয়র্ক স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে মেরিন ট্রান্সপোর্টেশন বিজ্ঞানে বিএসসি ডিগ্রি ও ১৯৭৭ সালে মাস্টার্স (এমএসসি) করেন।

যুক্তরাষ্ট্রে পড়ালেখা শেষে মিন্টু সেখানকার একটি জাহাজ কোম্পানিতে চাকরি নেন। ১৯৮১ সালে এই চাকরি ছেড়ে তিনি দেশে ফিরে শিপিং ব্যবসায় যুক্ত হন। তিনি ১৯৮৩ সালে দেশের প্রথম বেসরকারি ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। ১৯৯৫ সালে লাল তীর সিড কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। সেই থেকে দেশে মানসম্পন্ন সবজি বীজ উৎপাদন ও সরবরাহে কাজ করে যাচ্ছেন। লাল তীর সিড এখন দেশের শীর্ষ সবজি বীজ কোম্পানি। বিদেশেও এই বীজ রপ্তানি হচ্ছে।

এ বিষয়ে আবদুল আউয়াল মিন্টু যুক্তরাজ্য থেকে প্রথম আলোকে বলেন, জ্ঞানের, পড়ালেখার কোনো বিকল্প নেই। এর কোনো বয়সসীমাও নেই। বিশেষ করে যারা সমাজসেবা বা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত— তাদের পড়াশোনা করে নিজেদের সমৃদ্ধ করা খুবই জরুরি। কারণ মানুষ আশা করে, ওই রাজনীতিক যা বলছেন, তা সত্যের সঙ্গে বলছেন এবং জ্ঞানের আলোকেই বলছেন।