খালেদা জিয়াকে আরও সপ্তাহখানেক পর্যবেক্ষণে রাখবেন চিকিৎসকেরা

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
ফাইল ছবি

তিন মাসের বেশি সময় ধরে ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আরও সপ্তাহখানেক সার্বাক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখবেন চিকিৎসকেরা। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

সোমবার জাহিদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচারের পর কমপক্ষে চার সপ্তাহ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী তিন সপ্তাহ পার হয়েছে।

জাহিদ হোসেন উল্লেখ করেন, এখন আরও এক সপ্তাহ খালেদা জিয়াকে চিকিৎসকদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এরপর তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে অবস্থার পরিবর্তন বা উন্নতি হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে একটি ধারণা পাওয়া যেতে পারে।

চিকিৎসকেরা বলেছেন, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যে জটিলতা কিছুটা কমাতে রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচারের প্রভাবেও তাঁর স্বাস্থ্যে নানা জটিলতা দেখা দেয়। এসব জটিলতা কখনো কিছুটা কমছে, আবার কখনো কিছুটা বাড়ছে।

খালেদা জিয়ার লিভার প্রতিস্থাপন না করা পর্যন্ত তাঁকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা দিতে হবে। কারণ, রক্তনালিতে অস্ত্রোপচারের বিষয়কে সাময়িক চিকিৎসা হিসেবে উল্লেখ করেন চিকিৎসকেরা।

গত ৯ আগস্ট থেকে তিন মাসের বেশি সময় ধরে খালেদা জিয়া এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন।

উন্নত চিকিৎসার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তাঁর পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। তাঁকে বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বিএনপি বেশ কিছুদিন রাজপথে আন্দোলনও করেছে।

এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে ঢাকায় এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি নেত্রীর রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত ২৭ অক্টোবর। অস্ত্রোপচারের পরদিনই বিদেশি চিকিৎসকেরা ফেরত গেছেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা ঢাকায় খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন বিএনপি নেত্রী। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।