ছাত্রদল নেতা আতিকুর ১১ দিন ধরে নিখোঁজ, সন্ধান চায় পরিবার
কথা বলার একপর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন আবুল হোসেন সরদার। তাঁর ছেলে ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা কলেজ শাখার সহসভাপতি আতিকুর রহমান ১১ দিন ধরে নিখোঁজ।
ছেলের বিষয়ে বলতে গিয়ে আবুল হোসেন সরদার বলেন, ‘আমার নম্র, ভদ্র ছেলে। বকা দিলেও কান্না করত। আমার সোনার ছেলে ১১ দিন ধরে কোথায় আছে, কী খায়। আমার ছেলেকে আমার বুকে ফেরত চাই।’
আজ বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ছাত্রদল আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আবুল হোসেন৷ ছেলের নিখোঁজ হওয়ার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে ১ জুলাই সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ। সাদাপোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে গেছে৷’
ছেলে নিখোঁজ হওয়ার কথা জানিয়ে তাঁর আবুল হোসেন সরদার ২ জুলাই লালবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি বলেন, পুলিশের কাছে বারবার গিয়েছি। ফলাফল শূন্য৷ ওই এলাকার সিসিটিভি খুঁজে দেখলেই জানা যাবে কারা নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সবাই জানি আতিকুর আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আছে। কিছুটা বিরতি দিয়ে সরকার গুমের সংস্কৃতিতে ফিরে আসছে৷ বিএনপি-ছাত্রদল যেন সরকারের অনিয়ম, দুর্নীতি নিয়ে উচ্চকিত না হয়, তাই মনোযোগ সরাতে এসব গুম করা হচ্ছে। মাফিয়া-সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোনো আয়নাঘরে আতিকুরকে বন্দী রাখা হয়েছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ডিসি-এসপিতে এত ছাত্রলীগ কীভাবে আসে? প্রশ্নফাঁসের মধ্য দিয়েই তারা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরের প্রসঙ্গে রুহুল কবির বলেন, ‘রাজকোষ এখন শূন্য। ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে দেশে দেশে ঘুরছেন। ফিরে আসছেন খালি হাতে। ২০ বিলিয়ন ডলার চাইলেন৷ ১ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি পেলেন। যাত্রা সংক্ষিপ্ত করে চলে এসেছেন। এখন অন্য অজুহাত দিচ্ছেন। রাষ্ট্রীয় অপকর্ম ঢাকতে একের পর এক ইস্যু সামনে আনছে সরকার।’
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম দাবি করেন, তাঁদের সঙ্গে কয়েকজন ডিবি কর্মকর্তার কথা হয়েছে। তাঁরা বলেছেন, আতিকুর তাঁদের কাছে রয়েছে। কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ স্বীকার করছে না। চলমান কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনে অংশ নেওয়া থেকে ছাত্রদলকে বিরত রাখতে এই গুমের ঘটনা হতে পারে।
চলমান কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রদল অংশ নিয়েছিল। তখন সবাই সংস্কার চেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বাতিল করে দিয়েছিলেন। আদালতকে ব্যবহার করে কোটাকে পুনঃস্থাপন করেছে সরকার৷ কোটার বিষয়ে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা।