হাইকোর্টের রায় বিজয়ের মাসে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির এক সুসংবাদ: মির্জা আব্বাস

মির্জা আব্বাসফাইল ছবি

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আজ রোববার হাইকোর্টের দেওয়া রায়কে বিজয়ের মাসে ন্যায়বিচারপ্রাপ্তির একটি সুসংবাদ বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা আব্বাস।

রায় ঘোষণার পর আজ দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এ মন্তব্য করেন। প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে বিজয়ের প্রথম দিনে একটি বিজয়ের খবর আপনাদের দিতে চাই। সেটা হলো, আপনাদের মনে আছে, ২১ আগস্ট একটা গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। সেই ঘটনার মামলায় যে তারেক রহমান জড়িত ছিলেন না, তাঁকেসহ সবাইকে খালাস দেওয়া হয়েছে।’

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমরা বিগত দিনগুলোতে ন্যায়বিচার পাইনি। আমি আজকে ডিসেম্বরের প্রথম দিনে প্রথম একটা সুসংবাদ পেলাম। ইনশা আল্লাহ সামনে আরও সুসংবাদ আমরা আশা করছি।’

বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা লাখ লাখ মামলায়ও ন্যায়বিচার আশা করছেন বলে জানান মির্জা আব্বাস।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা লাখ লাখ মামলায়ও ন্যায়বিচার আশা করছেন বলে জানান মির্জা আব্বাস।

ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ২০ বছর আগে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার বহুল আলোচিত ওই মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ আসামিদের সবাইকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ওই মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বিচারিক আদালতের বিচার অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে এ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স নাকচ করে ও আসামিদের আপিল মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ে ৪৯ জনকে সাজা দেওয়া হয়েছিল। ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

‘২১ আগস্টের মামলায় বিদেশি শক্তি যুক্ত’

আলোচনা সভায় মির্জা আব্বাস বলেন, ‘২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছিল পরিকল্পিতভাবে কোনো বিদেশি শক্তি দিয়ে ঘটানো। সেই হামলায় কখনোই বিএনপি ইনভলভ (জড়িত) ছিল না।’

‘একটা বিদেশি শক্তি এই অপকর্ম করে খালেদা জিয়া এবং আমাদের নেতা তারেক রহমানকে ফাঁসাতে চেয়েছিল। শুধু ফাঁসাতে চেয়েছিল না, একটা মিথ্যা মামলা তৈরি করে, সাজানো গল্প বানিয়ে সেই গল্পের ওপর ভিত্তি করে তাঁকে (তারেক রহমান) সাজাও দিয়েছিল। মামলায় আরও অনেককে সাজা দিয়েছিল। আজকে রায় দেওয়া হয়েছে যে তারেক রহমান এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন না,’ বলেন বিএনপির এই নেতা।

‘তারেক রহমান খুব তাড়াতাড়ি দেশে ফিরবেন’

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমি বলব যে তারেক রহমান আমাদের মধ্যে সহিসালামতে ফিরে আসবেন খুব তাড়াতাড়ি। এ জন্য আল্লাহ তাআলা তাঁকে সুস্থ করেছেন, সুস্থ রেখেছেন ও খালাস দিয়েছেন।’

১/১১–এর সময় তারেক রহমানের ওপর তৎকালীন সরকারের নিপীড়ন-নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘আমাদের অ্যাক্টিং চেয়ারম্যান বিদেশে আছেন। উনি অসুস্থ ছিলেন বহুদিন এবং দেশে থাকার সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করে অনেক অত্যাচার করা হয়েছিল।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমাদের সামনে থেকে উনি (তারেক রহমান) আগের রাত্রে বিদায় নিয়ে গেলেন। তাঁকে আর দেখিনি বহুদিন। তারপর যখন ফেরত আনল, তখন তিনি একেবারেই অসুস্থ। চলতে-ফিরতে পারতেন না। এখন বিদেশে আল্লাহর রহমতে মোটামুটি সুস্থ, যদিও সম্পূর্ণ সুস্থ না…সুস্থ হওয়ার কথাও না। কারণ, ওই অন্য ধরনের অত্যাচার। এটার দীর্ঘপ্রসারী ফল আছে।’

স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, নুরুল ইসলাম মনি, যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আরও পড়ুন