জনগণ আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ দিলে আমাদের কিছু বলার নেই: রিজভী

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীফাইল ছবি

জনগণ যদি আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ দেন, তাহলে তা নিয়ে কিছু বলার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন, ‘যে লোক আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবেন, তিনি যদি অপরাধ না করেন, তিনি যদি ছাত্রহত্যা না করেন, তিনি যদি কোনো অর্থ লোপাট না করেন, টাকা পাচার না করেন; এ রকম লোক যদি নেতৃত্ব আসেন, তাহলে সেই আওয়ামী লীগ কেন রাজনীতি করতে পারবে না। আমার বক্তব্য হচ্ছে এটা।’

রাজধানীর উত্তরার দক্ষিণখানে হাজী শুকুর আলী মাদ্রাসাসংলগ্ন মাঠে আজ শুক্রবার সকালে দুস্থদের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও রশিদ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কফিল উদ্দিন আহমেদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কথা উঠছে যে আওয়ামী লীগ রাজনীতি করতে পারবে কি পারবে না? কিন্তু এই কথা উঠছে না, এই যে যারা গণহত্যা চালাল, তাদের বিচার হবে কি না?’ তিনি বলেন, ‘কারা (গণহত্যা) চালিয়েছে? এটা কি মানুষ দেখেনি? কোন পুলিশ, কোন ওসি, কোন ডিসি, কোন এসি এখানে ভূমিকা রেখেছে? এই গণ-আন্দোলন ধ্বংস করার জন্য দমন করা হয়েছিল কার নির্দেশে, আওয়ামী লীগের কোন নেতাদের নির্দেশে?’

‘আপনারা এগুলোর বিচার দ্রুত নিশ্চিত করতে পারলে...আওয়ামী লীগ পুরোনো দল, এখন সেই দলে যারা অপরাধী, অপরাধের বিচার হলে তার পরে জনগণের কাছে গিয়ে, জনগণ যদি তাদের রাজনীতি করার সুযোগ দেন, সেখানে তো আমাদের কিছু বলার নেই’, বলেন রিজভী।

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, যাঁরা টাকা পাচার করেছেন, যাঁরা শিশু-কিশোরদের হত্যা করেছেন, তাঁদের বিচার হতে হবে। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘শিশু–কিশোর, তরুণ, ছাত্রছাত্রীদের যারা হত্যা করেছে, শ্রমিক, রিকশাচালককে যারা হত্যা করেছে, তাদের বিচারটা আমরা করি না কেন?’

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে রুহুল কবির রিজভী বলেন, এরা মানুষকে নানা প্রলোভন দিয়ে, মিথ্যা কথা বলে, মিথ্যা অঙ্গীকার করে ক্ষমতায় এসে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তাঁর (শেখ হাসিনা) বাবা (শেখ মুজিবুর রহমান) সব দল বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল করলেন। তাঁর মেয়ে নতুন কায়দায় নতুনভাবে আরও জঘন্যতম বাকশাল তৈরি করেছেন। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ন্যূনতম আওয়াজ করলে তাঁর স্থায়ী ঠিকানা হতো কারাগার। সেই রাজত্ব যাতে ফিরে না আসে, সেগুলো নিশ্চিত করেই গণতন্ত্রে যার যার যায়গা, যার যার রাজনীতি করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

ন্যায়সঙ্গত বিচার হলে আর ফ্যাসিবাদের জন্ম হবে না উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘তখন কে রাজনীতি করবেন, কে করবেন না, সেই দায়িত্ব জনগণ নেবেন এবং তাঁকে সেইভাবেই সমর্থন করা হবে।’

বিএনপিকে নিয়ে এখনো অনেক অপপ্রচার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, তাঁরা ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ মুখোমুখি হচ্ছেন। গণমাধ্যম শুধু মারামারি ও চাঁদাবাজির খবর দেয়, দলীয় ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভালো কাজের খবরগুলো সেভাবে তুলে ধরা হয় না। তিনি বলেন, বিএনপি আড়াই থেকে তিন হাজার নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছে। তারেক রহমান এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স (শূন্যসহনশীলতা) দেখিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য ও রশিদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন।