ঢাকায় দুই দিনে ২৬ নেতাকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ বিএনপির
বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক-বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলীসহ গত দুই দিনে রাজধানী ঢাকা থেকে দলটির ২৬ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের অভিযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) খন্দকার গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক কিংবা গ্রেপ্তারের তথ্য তাঁর জানা নেই।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সৈয়দ এমরান সালেহ বলেন, বুধবার মধ্যরাতে মীর সরাফত আলীকে তাঁর জিগাতলার বাসা থেকে আটক করে পুলিশ। তিনি পুরোনো সব মামলায় জামিনে আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে নতুন কোনো মামলা নেই। এ ছাড়া বুধবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শাহজাহানপুর থানার ১২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম, নিউমার্কেট থানার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সহসভাপতি জাকির হোসেন, গেন্ডারিয়া থানার ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য গিয়াস উদ্দিন, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের রানা ও সেন্টুকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এমরান সালেহ দাবি করেন, বুধবার আরও গ্রেপ্তার করা হয় গুলশান থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান কবির ও রাশেদ বিন সোলেমান, সদস্য মো. হাসেম, একই থানার ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবদুল মমিন, বাড্ডা থানার ৯৭ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, শাহ আলী থানার ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি আফসার আলম খান, মিরপুর থানা বিএনপির আহ্বায়ক হাজি আবদুল মতিন, যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন ও আবুল বাশার ভূঁইয়া, মিরপুর থানার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সহসভাপতি রিপন তালুকদার, গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক হেলাল মিয়া, উত্তর পীরেরবাগের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মহসীন, খিলক্ষেত থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন, শ্রমিক দলের আহ্বায়ক মো. শুক্কুর আলী, দারুস সালাম থানার যুগ্ম আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির, খিলক্ষেত থানা যুবদলের সহসভাপতি মনির হোসেন, ক্যান্টনমেন্ট থানা বিএনপির সদস্য এস এম খান টিটু ও দারগ আলীকে। এ ছাড়া বৃহস্পতিবার জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক কিংবা গ্রেপ্তারের তথ্য তাঁর জানা নেই। তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া ডিএমপি কাউকে গ্রেপ্তার করে না।
ঢাকার বাইরেও বিএনপির নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত দপ্তর সম্পাদক। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবদলের সভাপতি শামীম মোল্লা, সদর উপজেলার যুগ্ম আহ্বায়ক শামিম রেজা, সুলতানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শেখ মহসিন, নাটাই উত্তর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই মেম্বারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিভাগীয় প্রস্তুতি সভা চলাকালে যশোরের মনিরামপুর থেকে ছয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ছাড়া শেরপুর, কিশোরগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে পাঁচ দিন ধরে পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে হয়রানি এবং বাণিজ্য করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) সারা দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে এবং ১২ ফেব্রুয়ারি (রোববার) ঢাকা মহানগর উত্তরে শ্যামলী থেকে বছিলা পর্যন্ত পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে।