খালেদা জিয়া অসুস্থ না হলে কারাগারে থাকতেন, রাজনীতি করার সুযোগ নেই: ওবায়দুল কাদের
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ না হলে কারাগারে থাকতেন, তাঁর রাজনীতি করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মানবিক কারণে খালেদা জিয়া যেটুকু পেয়েছেন, তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদারতার জন্য পেয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে এক যৌথ সভায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সভায় ওবায়দুল কাদেরের কাছে সাংবাদিকেরা জানতে চান, সরকারের মন্ত্রীরা খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার সুযোগ নিয়ে সাংঘর্ষিক বক্তব্য দিচ্ছেন, এ বিষয়ে দলের (আওয়ামী লীগের) বক্তব্য কী? জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়া, তিনি কি দণ্ডাদেশ থেকে মুক্তি পেয়েছেন? তিনি যে দণ্ডিত, যেটুকু পেয়েছেন মানবিক কারণে শেখ হাসিনার উদারতার জন্য পেয়েছেন। কী জন্য, মানবিক কারণটা কেন? অসুস্থ মানুষকে মানবিক কারণে, তাঁকে দণ্ডাদেশ মুক্ত করেননি, স্থগিত করেছেন। কী জন্য—তিনি অসুস্থ। অসুস্থ না হলে তিনি থাকতেন কারাগারে। তাঁর রাজনীতি করার সুযোগ নেই। দণ্ডিত ব্যক্তির রাজনীতি করার সুযোগ কোথায়। দণ্ডিত ব্যক্তি তো জেলে যাবেন।’
এর আগে ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতায় থাকাকালে বিএনপি সন্ত্রাস করেছে এবং সন্ত্রাসের জন্ম দিয়েছে। আজ তাদের মুখে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য শুনতে হয়। তিনি আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনা যেখানেই গেছেন, আক্রমণ ও হামলা হয়েছে। গৌরনদীতে হামলা, বরিশালে যাওয়ার পথে, চট্টগ্রামে হামলা, ঈশ্বরদীতে হামলা, গ্রেনেড হামলা তো আছেই। এসব ঘটনা তো বেশি দিন আগের নয়।
বাংলাদেশে সন্ত্রাসের রাজনীতি বিএনপি শুরু করেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, সন্ত্রাসের সঙ্গে বিএনপির নাম সম্পৃক্ত হয়ে গেছে। সন্ত্রাসের অপর নাম হচ্ছে বিএনপি। বাংলাদেশে নষ্ট রাজনীতির ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। তারাই নষ্ট রাজনীতির হোতা।
খালেদা জিয়ার রাজনীতি করতে পারা না–পারার বিষয়টি হঠাৎই গত জানুয়ারি মাসে সামনে নিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। গত ২৬ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে তিনি দাবি করেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না, এমন মুচলেকা রয়েছে। যদিও তখন বিএনপি তাঁর এ বক্তব্য সত্য নয় বলে জানিয়েছিল। শেখ সেলিমও তাঁর দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। কিন্তু বিষয়টি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা তৈরি করেছে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে তাঁকে ২০২০ সালের ১৯ এপ্রিল মুক্তি দেয় সরকার। তখন দেশে করোনা মহামারি চলছিল। ওই সময় যে দুটি শর্তে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে ছিল খালেদা জিয়া বিদেশে যেতে পারবেন না। দেশে থেকে বাসায় চিকিৎসা নেবেন। এর পর থেকে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাস পরপর তাঁর মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে।