বাম জোটসহ বিভিন্ন সংগঠনের বিবৃতি
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে
দেশে খুন-ধর্ষণ-ছিনতাই-ডাকাতি ও মব সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ বিভিন্ন সংগঠন। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ, নির্যাতন, খুন, রাহাজানি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও মব সন্ত্রাস জনগণের জানমালের নিরাপত্তাকে দুর্বিষহ করে তুলেছে। এ ক্ষেত্রে সরকার চরম দায়িত্বহীনতা ও ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এসব ঘটনার দায় অন্তর্বর্তী সরকারকেই নিতে হবে।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, বাসদ মার্ক্সবাদী ও সমাজতান্ত্রিক পার্টির যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন স্থানে নৈরাজ্যকর অবস্থার পর গত রাত (২৩ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে) সাড়ে তিনটায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর বাসভবনে নাটকীয় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শুধু দায়িত্বহীন নয়, সত্যের অপলাপ মাত্র। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার পর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আর দায়িত্ব পালনের নৈতিক অধিকার নেই।’
ধর্ষণসহ দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে উদ্বেগ জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, ‘কয়েক মাস ধরে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে নাগরিকদের, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েছি। দুর্ভাগ্যবশত, আমরা কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি দেখিনি, বরং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে, যেখানে নারী ও মেয়েরা যৌন হামলার ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে।’
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতিও। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, বর্তমান সময়ে ঘরে–বাইরে কোথাও নারী ও শিশুরা নিরাপদ নয় বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। জুলাই–পরবর্তী স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর এ ধরনের অরাজক অবস্থায় দেশ ও জাতি মর্মাহত।
এদিকে অব্যাহত নারী ধর্ষণ ও নিপীড়নের ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র। সোমবার গণমাধ্যমকে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজশাহীগামী চলন্ত বাসে ভয়াবহ ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনা, পুলিশের কাছে গিয়ে আরও হেনস্তা, একুশে ফেব্রুয়ারিতে ফুল তুলতে গিয়ে শিশু ধর্ষণসহ সারা দেশে নারী নিগ্রহের ঘটনা জনমনে নিরাপত্তাহীনতা ও ভীতি তৈরি করেছে।