নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে গুঞ্জন আছে...।
আরিফুল হক: আমার দল বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনেই অংশ নিচ্ছে না। যেহেতু দল করি, তাই দলের সিদ্ধান্ত মানতেই হবে। তবে এটা ঠিক, নগরের ৪২টি ওয়ার্ডের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ধর্মবর্ণ ও দলমত–নির্বিশেষে আমাকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রচণ্ড রকমের চাপ দিচ্ছেন। এ চাপ উপেক্ষা করাও কঠিন।
তবে কি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন?
আরিফুল: বিষয়টি রেজিস্টারি মাঠে অনুষ্ঠেয় নাগরিক সভাতেই স্পষ্ট করব।
বিএনপি তো নির্বাচনে যাচ্ছে না। তাহলে দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসেবে আপনি প্রার্থিতার বিষয়টি স্পষ্ট করতে এত রহস্য রাখছেন কেন?
আরিফুল: ভুলে গেলে চলবে না, আমি যেমন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, তেমনই আমি এ নগরের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাই নির্বাচন করা কিংবা না-করা নিয়ে এখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়াও আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এ কারণেই ঘোষণা দিতে দেরি হচ্ছে। নগরের ৪২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে এরই মধ্যে আলোচনা করেছি। এখন নাগরিক সভায় সবার উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত জানাব।
নির্বাচন না করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে কি চাপ আছে?
আরিফুল: সরকার পাতানো নির্বাচনের আয়োজন করেছে। এটা একটা ‘প্যাকেজ প্রোগ্রাম’। এই প্যাকেজে নির্বাচন কমিশন (ইসি) খেলার পুতুল। পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থাটা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। সঠিকভাবে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের কোনো সুযোগ এখন আর নেই। সেটা ব্যালটেই হোক আর ইভিএমেই হোক।
সরকারের দিক থেকে কি কোনো চাপ আছে?
আরিফুল: সরকারের তো চাপ দেওয়ার দরকার নেই। মূলত এমন পরিবেশ স্থানীয় প্রশাসন সৃষ্টি করেছে, এতে প্রার্থী তো বটেই, সাধারণ ভোটাররা পর্যন্ত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট নিয়ে আতঙ্কিত। যাঁরা আমাকে এত দিন নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন, তাঁদের অনেকেই এখন ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার জন্য আমাকে অনুরোধ করছেন।
তাহলে কি এটাই বলছেন, সিলেটে নির্বাচনী পরিবেশ ভালো না?
আরিফুল: নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব কি করব না, সেটা জানাতে যেদিন নাগরিক সভা আয়োজনের ডাক দিয়েছি, এর পরদিন থেকেই পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ‘ধরপাকড়’ শুরু করেছে। বেছে বেছে আমার কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ হয়রানি করছে। কয়েক দিন আগে কোনো কারণ ছাড়াই আমার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। নাগরিক সভার আয়োজনে পুলিশ বাধা দিয়েছে। যদিও আমার অনড় অবস্থানের কারণে আবার সভা আয়োজনে পুলিশ অনুমতি দিতে বাধ্য হয়েছে। আসলে ভয় আর আতঙ্কে ভীত হয়ে আমাকে একের পর এক বাধা দেওয়া হচ্ছে।
এর বাইরে সিলেটে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে সরকারি কর্মকর্তারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রতীক বরাদ্দের আগেই ঢালাওভাবে প্রচার চালাচ্ছেন। ইসির চোখে কি এসব পড়ছে না? স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে অতি উৎসাহী হয়ে পড়েছে। আমি নির্বাচনে যাব কি যাব না, সে সিদ্ধান্ত জানানোর আগেই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে পরবর্তী সময়ে কী হবে? এসব কি নির্বাচনে যাওয়ার মতো পরিবেশ?
তাহলে তো মোটামুটি ধরেই নেওয়া যাচ্ছে, আপনি নির্বাচনে যাবেন না...।
আরিফুল: সেটা নাগরিক সভায় জনগণের সামনেই প্রকাশ করব।