সেন্ট মার্টিনে মিয়ানমারের গোলাগুলি, প্রয়োজনে জবাব দেওয়া হবে: ওবায়দুল কাদের
সেন্ট মার্টিনে মিয়ানমারের গোলাগুলি নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত-সংকটে আমরা ভুক্তভোগী হলে, সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। যুদ্ধকে পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে এবং চলবে। তবে আমাদের কেউ আক্রান্ত হলে, সেই আক্রমণের জবাব দেওয়া হবে।’
ওবায়দুল কাদের আজ শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নিজেদের এত খাটো করে দেখব কেন? আমরাও প্রস্তুত। আক্রমণ করব না, কিন্তু আক্রান্ত হলে কি ছেড়ে দেব? আক্রান্ত হলে প্রতিরোধ করতে হবে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মিয়ানমারের সরকারের সঙ্গে আমাদের কোনো বৈরিতা নেই। আলাপ-আলোচনার দরজা খোলা আছে। আমরা কথা বলতে পারি। যতক্ষণ কথা বলা যাবে, আলাপ-আলোচনা করা যাবে। আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি এবং করে যাব। আমাদের যেন কোনো উসকানি না থাকে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ কিছু সংকট আছে। তাদের ৫৪টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী রয়েছে। তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তবে রোহিঙ্গা সমস্যা জেঁকে বসেছে। বিশ্ব প্রশংসা করছে তাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য; কিন্তু এই রোহিঙ্গাদের জন্য যে সাহায্যের পরিমাণ ছিল, সেটি অনেক কমে গেছে। তিনি বলেন, ‘চলমান বিশ্ব সংকটে আমরা নিজেরাই সংকটে আছি। নিজেদের দুশ্চিন্তামুক্ত হওয়ার কারণ নেই। সেখানে ১১-১২ লাখ রোহিঙ্গা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে আছে। দুনিয়ার বড় বড় দেশ যারা রোহিঙ্গা নিয়ে কথা বলে, তাদের লিপ সার্ভিসের (মুখের কথা) দরকার নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দরকার রোহিঙ্গা চাপ সরিয়ে নেওয়া। সার্বিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি। শেখ হাসিনার সরকার সব জায়গায় প্রথমে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। এটা দুঃখজনক, জাতিসংঘের মতো প্রতিষ্ঠান নখদন্তহীনে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েল বড় বড় দেশের কথা শোনে না। জাতিসংঘের অনুরোধ-উপরোধগুলোর কোনো কার্যকারিতা বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি না।’
সড়কে যানজট নিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ঈদযাত্রায় কিছু জায়গায় যানজট হলেও কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি। এবারের ঈদটা ভিন্ন। ধীরগতির পশুবাহী গাড়ি, সড়কের পাশে পশুর হাট একটা সমস্যা। রাস্তা কোনো সমস্যা নয় যানজটের জন্য। এবার সড়কে অনেক বেশি যানবাহন। ফলে ভিড়টা অনেক বেশি। কোথাও কোনো যানজট হচ্ছে না— অস্বীকার করে লাভ নেই। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি। তিনি বলেন, ‘আশা করি, সামনের দিনগুলো ভালো যাবে। আজ ও আগামীকাল গার্মেন্টস ছুটি হলে কোনো কোনো জায়গায় চাপটা বাড়তে পারে।’
যেকোনো সময় সরকারের পতন হবে, বিএনপির এমন দাবির জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এককথায় বলব, এটা তাদের দিবাস্বপ্ন। সরকার পরিবর্তন হয় গণ-অভ্যুত্থানে, নাহয় নির্বাচনে। ২০২৪-এর ৭ জানুয়ারিতে নির্বাচন হয়ে গেল। গণ-অভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটবে, এটা হাস্যকর।’
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।