শুধু ছয় হত্যার তদন্ত পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার নামান্তর: মির্জা ফখরুল
অসংখ্য হতাহতের পর শুধু ছয়জনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিএনপি। তারা বলেছে, সরকারি দলের সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শত শত নিরীহ ছাত্রছাত্রীকে হতাহত করেছে। অথচ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন সরকারের ইশারায় শুধু ছয়জনের হত্যাকাণ্ড তদন্ত করবে, যা পুরো হত্যাকাণ্ডকে ধামাচাপা দেওয়ার নামান্তর।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে ছয়জনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন নিয়ে প্রশ্ন তুলে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণ পুরো ঘটনা ও হত্যাকাণ্ড নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি করে। অন্যথায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত বলে মনে করে জনগণ।
বিবৃতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিহত সদস্যদের জন্য সরকারি অর্থ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘নিহত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই লাখ করে টাকা নগদ ও আট লাখ টাকা করে সঞ্চয়পত্র দিয়েছে। অথচ শত শত নিরীহ ও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হলো, যা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। মির্জা ফখরুল বলেন, যারা এই হত্যার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি নিহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও দাবি করছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার মিথ্যা অভিযোগে বিএনপি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সরকার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য ঢালাওভাবে দোষারোপ করছে। যদি তা–ই হয়, তাহলে ঘটনাস্থল থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়নি কেন, এটাই জনগণের প্রশ্ন। এতে প্রমাণিত হয়, বিএনপি কিংবা বিরোধী দলের কেউই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়।
সরকার তার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলো ক্ষতি সাধন করেছে বলে বিবৃতিতে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এই ক্ষতি সাধনের মধ্য দিয়ে একদিকে সরকার দুর্নীতির পথ প্রশস্ত করেছে। অন্যদিকে জনগণ ও বিশ্ববাসীর কাছে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোকে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। সে সঙ্গে বিরোধী মতের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের পথ তৈরি হয়েছে—যা প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য থেকে বোঝা যায়।
বিবৃতিতে বিএনপির মহাসচিব বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমানসহ (পার্থ) গত কয়েক দিনে অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তিনি অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে আড়াল করতে এবং উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর অপকৌশল হিসেবে বিএনপির নির্দোষ নেতা-কর্মীদের বাড়ি বাড়ি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। নেতা- কর্মীদের বাসায় না পেয়ে তাদের সন্তান অথবা পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তার ও অশালীন আচরণ করাসহ ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হচ্ছে।