আ.লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধেই আন্দোলন হবে: গণ অধিকার

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে সমাবেশে বক্তব্য দেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। জ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরেছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণ নিয়ে গণ অধিকার পরিষদের নেতারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যদি আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ করে দেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধেই আন্দোলন শুরু হবে। আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বিজয়নগরের আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে নেতারা এ কথা বলেন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করেছিল গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।

সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, ‘আমাদের কথা হলো, স্বয়ং প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে যাওয়ার সুযোগ দিলে, তাঁর বিরুদ্ধেই আন্দোলন শুরু হবে। আওয়ামী লীগকে কেউ পুনর্বাসনের চেষ্টা করলে, সেটা আমাদের রক্তের ওপর দিয়ে করতে হবে। আওয়ামী লীগকে আর গণহত্যার সুযোগ দেওয়া যাবে না।’

‘নাৎসি বাহিনী’র মতো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, এখনো আওয়ামী হাইকমান্ড ও শেখ পরিবারের খুনিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। শেখ হাসিনা, কাদেরসহ ভারতে পলাতক খুনিদের ফিরিয়ে আনতে হবে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করা হলে বিচারের নামে প্রহসন হবে। তাঁদের শাস্তি না হলে শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সংলাপে প্রায় প্রতিটি দল ও অংশীজন সরকারের সমালোচনা করেছেন জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘আমি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, আপনি সবার বক্তব্য শুনে নিশ্চয়ই অনুধাবন করতে পারছেন, কীভাবে সরকারের প্রতি মানুষের ক্ষোভ ও অসন্তোষ বাড়ছে। এর অন্যতম কারণ, পাঁচ মাসেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি, নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, ভ্যাট- ট্যাক্স বেড়েছে।’

ঘোষণাপত্র কি শুধু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের? এ প্রশ্ন রেখে রাশেদ খান বলেন, এখন কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম নয়। এটাকে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রকৃত নেতৃত্ব ও আন্দোলনকারীদের মাইনাস করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এসব নিয়ে হট্টগোল হয়েছে। একটি জাতীয় কমিশন গঠন করে সরকারকে সবার মতামত নিয়েই ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে।

দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য হাসান আল মামুন বলেন, অনেক এসআইকে অন্যায়ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। সরকারের প্রতি আহ্বান, যাঁরা ফৌজদারি কোনো অপরাধে জড়িত নন কিংবা আওয়ামী লীগের সুপারিশ ছিলেন না, তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে।

গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের আরেক সদস্য আবু হানিফ বলেন, গণহত্যায় জড়িত অনেকেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অথচ পুলিশ প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুরোপুরি ব্যর্থ। তাঁর প্রতি আহ্বান, না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন।

সমাবেশে গণ অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্ব করেন। মহানগর দক্ষিণের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানার সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে ছিলেন উচ্চতর পরিষদ সদস্য শাকিল উজ্জামান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল আহমেদ, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম প্রমুখ। সমাবেশ শেষে মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড়, ফকিরাপুল, দৈনিক বাংলা মোড় ও পল্টন মোড় ঘুরে আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে গিয়ে শেষ হয়।