যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে কতজন গুম হয়, পিটার হাসকে প্রশ্ন ওবায়দুল কাদেরের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নিষেধাজ্ঞার জন্য বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন। সেই মিশন ফেল।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভার সূচনা বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিরোধীদের নিষেধাজ্ঞার মিশন ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এসব গুমের কাহিনি শুনিয়ে লাভ নেই। নিষেধাজ্ঞা আরোপ করাবেন বাংলাদেশের ওপর। আমীর খসরুর ওয়াশিংটন মিশন ফেল। নিষেধাজ্ঞা দিতে চেয়েছিল, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ২০ দেশের ৭০ জনের বিরুদ্ধে। সেখানে বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশ কিন্তু নেই। তবু তারা লবিস্ট নিয়োগ করে।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সাহেব আজ (১৪ ডিসেম্বর) সকালে বুদ্ধিজীবী দিবসে সাজ্জাদুল সুমনের বাড়িতে গেলেন। ২০১৩ সালে গুম হয়েছিল। তার বাড়িতে উনি গেলেন। আমি সবিনয় তাঁকে জিজ্ঞেস করি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি মাসে কতজন গুম হয়, কতজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়, কতজন খুন হয়, সেই চিত্র কিন্তু সিএনএনে আমরা দেখেছি।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পিটার হাস সাহেব, আজ ১৪ ডিসেম্বর...যদি দেখতাম আপনি বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে গেছেন, সেই চিত্র বেশি ভালো লাগত।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘বিএনপির অসংখ্য কর্মী আছেন, যাঁরা মামলা থেকে রক্ষা পেতে নিখোঁজ। চকরিয়ার সালাউদ্দিন, কত অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। সালাউদ্দিন গুম হয়ে গেলে, নিজে নিজেই চলে গেল ভারতে। এসব গুমের কাহিনি আপনাদের জানা উচিত।’
সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমীর খসরু একা যাননি। লবিস্ট নিয়োগ করেছেন তাঁরা। তাঁর নাম কী, তা জানেন, টোবি ক্যাডম্যান। তিনি ব্রিটিশ আইনজীবী।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করেন, ‘টোবি ক্যাডম্যান সাক্ষাৎকারে আল-জাজিরাকে বলেছেন, আমি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য, পুলিশ ও র্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যকে অনুরোধ করেছিলাম। যুক্তরাষ্ট্র কথা রেখেছে, যুক্তরাজ্য আমার অনুরোধ রাখেনি।’
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘টাকাপয়সা দিয়ে এসব করছেন, কোথা থেকে আসে টাকা? কারা দেয় টাকা, ব্যবসায়ী-শিল্পপতি। সব খবর আসে। একটা মিটিং করেন, সাত দিন আগে থেকে পিকনিক। টাকা আসে কোথা থেকে?’
এ ছাড়া সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি বক্তব্য দেন। আলোচনা সভা যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, একাত্তরের রাজাকার জামায়াত ও পঁচাত্তরের খুনি বিএনপি যত দিন এই দেশে রাজনীতি করবে, তত দিন দেশে শান্তি থাকবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়তে হলে বিএনপি-জামায়াতকে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন, নির্মূল করার অঙ্গীকার করতে হবে।