শুধু শমসের মবিন ও তৈমুর আলম নন, আরও অনেকেই বিএনপি থেকে চলে যাবেন: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি থেকে আরও অনেকেই চলে আসবেন, একটু অপেক্ষা করলে দেখতে পাওয়া যাবে।
তথ্যমন্ত্রী আজ বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে বিএনপির সাবেক নেতা শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকারের তৃণমূল বিএনপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু শমসের মবিন চৌধুরী ও তৈমুর আলম খন্দকার নন, আরও অনেকেই বিএনপি থেকে চলে আসবে, একটু অপেক্ষা করুন। কারণ, যে দল নেতাদের সম্মান দিতে জানে না, আর যেই দল কাউকে নির্বাচন করতে দেয় না, সেই দল তো সবাই করবে না।’
এক প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি জনমনে বিভ্রান্তিই সৃষ্টি করতে চায়। গতবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে তারা যেমন বলেছিল; নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না, কিন্তু শেষমেষ অংশ নিয়েছিল। এবারও তাদের এখনকার বক্তব্য আর এক মাস আগের বক্তব্যের মধ্যে কিছুটা তফাৎ আছে। যাঁরা একটু অনুসন্ধিৎসু তাঁরা এটা বুঝতে পারেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘একটি গণমুখী রাজনৈতিক দল যদি ক্রমাগতভাবে নির্বাচন বর্জন করে, তাহলে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বিএনপি নির্বাচনে জেতার নিশ্চয়তা চায়। কাউকে নির্বাচনে জেতার নিশ্চয়তা তো সরকার, নির্বাচন কমিশন কেউ দিতে পারবে না। আমরা চাই তারা নির্বাচনে আসুক। আর মির্জা আব্বাস সাহেবরা গত সাড়ে ১৪ বছর সরকার পতনের কথা বলছেন, এটা নতুন কিছু নয়।’
‘সরকার বিএনপির ওপর নির্যাতন করছে’ বলে বিএনপির মহাসচিবের অভিযোগ খণ্ডন করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে কী করেছিল, সেটা পেছনে ফিরে তাকালেই বুঝতে পারবেন, দেখতে পাবেন। মির্জা ফখরুল সাহেবরা অগ্নিবোমা হামলার হুকুমদাতা। সেগুলোর অডিও রেকর্ড, তথ্য–প্রমাণ সরকারের কাছে আছে। এরপরও তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছেন। এতেই প্রমাণিত হয়, সরকার মোটেই নির্যাতন চালাচ্ছে না; বরং তাঁরা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো থেকে শুরু করে এমপি আহসান উল্লাহ মাস্টার, শাহ এস এম কিবরিয়াসহ আমাদের এমপিদের হত্যা করা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে লাঠিপেটা করা, জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ মতিয়া চৌধুরীকে রাস্তায় টানাহেঁচড়া করাসহ আমাদের নেতা–কর্মীদের যে পরিমাণ অত্যাচার, নির্যাতন চালিয়েছেন, তা বর্ণনাতীত।’
‘সদ্য সমাপ্ত কানাডা সফরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনায় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘টরন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ১৩ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু বায়োপিক ‘মুজিব-একটি জাতির রূপকার’ সিনেমার প্রথম প্রদর্শনী হয়েছে। ২ ঘণ্টা ৫৮ মিনিটের বিরতিহীন এ প্রদর্শনীতে একজন দর্শকও আসন থেকে নড়েননি। সেখানে বাংলাদেশি, ভারতীয় ছাড়াও বিভিন্ন দেশের দর্শকেরা ছিলেন, প্রত্যেকেই সিনেমাটির প্রশংসা করেছেন। সিনেমাটি প্রকৃতপক্ষে আমাদের ইতিহাসের দলিল হয়ে থাকবে। আগামী মাসে আমরা বায়োপিকটি বাংলাদেশে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছি।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘কানাডা সফরে সে দেশের উচ্চকক্ষ সিনেটের মানবাধিকার কমিটির চেয়ার সিনেটর সালমা আতাউল্লাজানের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি একই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এ ছাড়া কানাডা পার্লামেন্টের ইমিগ্রেশন এবং নাগরিকত্ববিষয়ক স্থায়ী কমিটির চেয়ার সালমা জাহিদ এমপির সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশিদের সহজতর ইমিগ্রেশন এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের সহজতর ভিসার জন্য তাঁকে অনুরোধ জানিয়েছি।’
এ সময় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ফেরার পথে আমি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি খুবই ভালো আছেন। দেশে নানা আলোচনা হয়েছে, কিন্তু আমি দেখেছি, তার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা খুবই ভালো।’