খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে তিন মাসের মধ্যে সরকার পরিবর্তন: জাফরুল্লাহ
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে তিন মাসের মধ্যে সরকার পরিবর্তন হবে বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। জনতার অধিকার পার্টি (পিআরপি) নামে নতুন একটি দলের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে এসব কথা বলেন ডা. জাফরুল্লাহ। আজ বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এ অনুষ্ঠান হয়।
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে যেমন করে হোক, আপনারা মুক্ত করে আনেন। তিনি মুক্তি পেলে এই সরকার পরিবর্তন করতে তিন মাস লাগবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে বর্তমান সরকার রাজি হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা হারানোর ভয়ে আছেন দাবি করে জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ভয় পাচ্ছেন কেন? হারলে হারবেন, জিতলে জিতবেন। আপনার প্রতি কোনো অবিচার হবে না, ন্যায়বিচার পাবেন। আমি অন্তত আপনার পাশে থাকব।’
আজকের অনুষ্ঠানে জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, বিভিন্ন বিরোধী দলের দাবি—এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না, ইভিএম প্রতারণার ফাঁদ। খালেদা জিয়াকে মিথ্যা অভিযোগে সাজা দেওয়া হয়েছে দাবি করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করার পরামর্শ দেন তিনি। সম্প্রতি ভোলায় পুলিশের গুলির সমালোচনা করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, গুলি ছোড়ার আগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের লিখিত অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এখন সেই ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকার যত দিন ক্ষমতায় আছে, তত দিন শুধু ভোট নয়, খাদ্য, জীবন, জ্বালানি—কোনো কিছুরই নিরাপত্তা নেই। এই সরকারের কাছে পুরো দেশ অনিরাপদ। আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে বিরোধী দল নির্বাচনে জিতবে—সে আশার গুড়ে বালি। ইভিএমে ভোট হলে, এই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে ভোট হলে, বিরোধী পক্ষ নির্বাচনে জিততে পারবে না। ইভিএমে যেখানেই ভোট দেওয়া হোক না কেন, নির্দিষ্ট একটি প্রতীকে ভোট পড়বে বলেও তিনি দাবি করেন। ইভিএমের বিরোধিতা করে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, প্রথমবার অন্য দলগুলোকে নির্বাচনে আসতেই দেয়নি, দ্বিতীয়বার দিনের ভোট রাতে করেছে। এবার চাইছে ইভিএমে ভোট করতে। ইভিএম ‘কমান্ড’ অনুযায়ী কাজ করবে দাবি করে তিনি বলেন, এবার মেশিন দিয়ে কারচুপি করবে। কারচুপির পর মামলাও করা যাবে না। কারণ, প্রমাণ নেই। নতুন দলের আত্মপ্রকাশ সম্পর্কে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, নতুন দলের মাধ্যমে নতুন নতুন মানুষকে যুক্ত করে অভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিআরপির চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে গণশক্তি আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ মো. তাহের নতুন দলটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে আগামী কয়েকটি মাস জাতীয় জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে আগামী নির্বাচন নিয়ে তিনি দুটি শঙ্কার কথা জানান—জনগণ ভোট দিতে পারবেন কি না এবং আদৌ নির্বাচন হবে কি না।
মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে আবদুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘আমরা মতপ্রকাশের অধিকার পাই ভোটের মাধ্যমে, কিন্তু সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে পিআরপির নেতা-কর্মীসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।