১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ: সরকার দিতে চায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, নয়াপল্টনে অনড় বিএনপি
সরকার আগামী ১০ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দিতে চায়। তবে আগের চাওয়া অনুযায়ী নয়াপল্টনেই সমাবেশ করার দাবিতে অনড় বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে দেওয়ার বিষয়টি জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
তারপরই বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। বিএনপি বলেছে, এর আগের দুই দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই ছাত্রলীগের সম্মেলন আছে। তাই ওই স্থানে সমাবেশ করতে গেলে ‘সাংঘর্ষিক’ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ করতে চেয়ে ১৫ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অনুমতি চায় বিএনপি। ওই দিন বিএনপির কয়েকজন নেতা সমাবেশের অনুমতির আবদেন নিয়ে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে যান।
সেখান থেকে বের হওয়ার পর বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘ছয়টি বিভাগীয় শহরে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সেই সমাবেশের জন্য আমরা অনুমতি চেয়েছি। তাঁরা বলেছেন, তাঁরা আলাপ-আলোচনা করে সেটা বলবেন, আমাদের জানাবেন।’
তবে বিএনপি যাতে তাদের সমাবেশের রাজধানীর বাইরে করে এ ধরনের বার্তা সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার দেওয়া হয়েছে। ঢাকায় সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ঢাকায় ১০ লাখ লোকের সমাবেশ করলে নয়াপল্টনে এর সংকুলান হবে না। বিএনপি তুরাগ বা পূর্বাচলের কথা ভাবতে পারে। তবে মঙ্গলবার ঢাকায় এক সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়াপল্টনে সমাবেশ করার বিষয়ে তাঁদের অনড় অবস্থানের কথা জানান।
এ বিষয়ে গতকাল রাজধানীর সদরঘাটে এক সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিএনপি কিছু শর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আগামী ১০ ডিসেম্বর সমাবেশের অনুমতি পাবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বলছি একটা বড় কোনো জায়গায় যান। তাদের সর্বশেষ একটা দাবি ছিল যে তারা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ চায়। আমাদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা কমিশনারকে বলে দিয়েছি। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরও নির্দেশনা তাই।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচারের পর প্রতিক্রিয়া জানায় বিএনপি। দলটির মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী (এ্যানী) আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি চায়নি। আমরা নয়াপল্টেনর জন্য অনুমতি চেয়েছি।’
আগামী ৮ ও ৯ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের সম্মেলন আছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। ইতিমধ্যে ছাত্রলীগে পক্ষ থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয় উল্লেখ করেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘ছাত্রলীগের সম্মেলন চলবে দুই দিন ধরে। এর মধ্যে কেমন করে আমাদের সমাবেশ হবে। এটা সাংঘর্ষিক হবে। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। তাই নয়াপল্টনই চাই।’
তবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সমাবেশের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্য বিএনপির মহাসচিবকে জানানো হয়েছে বলে জানান শহীদ উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘শীর্ষ নেতৃত্ব বিষয়টি নিয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত জানাবেন।’