পেশাগত দক্ষতার উন্নয়নে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ: সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব
>১৩ অক্টোবর প্রথম আলোর আয়োজনে এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সহযোগিতায় ‘পেশাগত দক্ষতার উন্নয়নে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্ব’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আলোচকদের বক্তব্য সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশিত হলো।
আলোচনায় সুপারিশ
■ সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্ব মডেল পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি বাজেট সুনির্দিষ্ট হওয়া উচিত
■ কারিগরি িশক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনবল সৃষ্টিতে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে হবে
■ শ্রমিকদের পর্যাপ্ত মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ–সুবিধা প্রদান করে কাজের ক্ষেত্রে আগ্রহী করে তুলতে হবে
■ কারিগরি শিক্ষায় শিল্পকারখানার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ শিক্ষানীতি প্রয়োজন
■ শ্রমিকের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ বজায় রাখতে হবে
■ সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্ব মডেলের আওতায় প্রশিক্ষণ প্রদানের পর সনদ প্রদান করা উচিত
■ কম মজুরির পেশাকে ছোট করে না দেখার জন্য জনসচেতনতা গড়ে তুলতে হবে
আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম
প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদেরও কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা প্রয়োজন। সাধারণ শিক্ষার দিক থেকে আমরা এগিয়ে থাকলেও দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে পারিনি।
এ জন্য কর্মক্ষেত্রের সঙ্গে সংগতি রেখে কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা চালু করার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে যে ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করা দরকার, সেটাই আজকের আলোচ্য বিষয়। এখন এ বিষয়ে আলোচনা করবেন টুমো পোটিআইনেন।
টুমো পোটিআইনেন
সময়োপযোগী একটি আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। বাংলাদেশে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে। গোটা বিশ্ব পরিবর্তিত হচ্ছে। ইতিবাচক পরিবর্তন সবাই প্রত্যাশা করে। এ জন্য প্রত্যেকের উচিত ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নিয়মিত কাজ করা।
বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে দক্ষতাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। এ খাতে আরও বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত এসডিজির লক্ষ্য অর্জন করা যাবে না।
আইএলও তার নিজস্ব উন্নয়ন কর্মসূচি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, ইউনিসেফ, বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও বিভিন্ন দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে থাকে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে আসতে পারে।
সরকারের একার পক্ষে প্রতিটি পেশার দক্ষতা উন্নয়ন সম্ভব না। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ থাকা জরুরি। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বেসরকারি খাতের সম্পদ, অভিজ্ঞতা ও মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া দরকার। অন্যথায় যেকোনো উদ্যোগ সফলতা থেকে বঞ্চিত হতে পারে।
শ্রমিক ও বিনিয়োগকারীদের সুবিধা-অসুবিধাগুলো প্রাধান্য দিতে হবে। সাময়িক প্রশিক্ষণের কথা চিন্তা না করে বেসরকারি খাতে প্রয়োজনীয় জনশক্তি সৃষ্টি বা তাদের সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হবে।
জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। প্রয়োজন সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে বিনিয়োগ। বিনিয়োগ ছাড়া কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে এসডিজির নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। গার্মেন্টস বা রপ্তানি–সংশ্লিষ্ট কারখানার শ্রমিক ছাড়াও অন্যান্য খাতে শ্রমের চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ শ্রমিক গড়ে তুলতে হবে। এ জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা দরকার।
কিশোর কুমার সিং
পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর এটা একটা ভালো সুযোগ। বাংলাদেশে সুসংগঠিত অংশীদারত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তেমন সফলতা নেই। এ বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। তবে আমাদের কর্মসূচি সরকারি ও বেসরকারি খাতে সম্পর্কোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
এ ধরনের অংশীদারত্ব সরকারি ও বেসরকারি খাতকে আরও বেশি সম্পর্কযুক্ত করবে। দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টিতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। কাজের ধারা অনুযায়ী কর্মকৌশল পরিবর্তিত হয়। প্রযুক্তির ব্যবহারেও বদলে যায়। কর্মক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার এ ধরনের পরিবর্তনকে আরও গতিশীল করে তুলছে। প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের সঙ্গে তাল রেখে দক্ষতা উন্নয়ন খুব জরুরি। আমাদের উচিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা।
বাংলাদেশে কর্মসংস্থানের বিভিন্ন সুযোগ রয়েছে। এগুলো কর্মক্ষম মানুষের সামনে আনতে হবে। কী ধরনের দক্ষতা অর্জন করলে এসব পেশায় নিযুক্ত হওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে, তা স্পষ্ট করা জরুরি।
অ্যালেক্সসিউস চিছাম
বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ অন্যতম চালিকাশক্তি। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে উঠছে বিভিন্ন ধরনের শিল্পকারখানা। কিন্তু কারখানা সঙ্গে প্রয়োজনীয় বা সংগতিপূর্ণ শ্রমিক গড়ে উঠছে না। আবার দেশের প্রচলিত কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থায় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হলেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন কারখানায় কাজ করতে পারছে না।
অন্যদিকে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। গোটা বিশ্বে চলছে নব শিল্পবিপ্লবের উৎসব। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে না পারলে অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে যেন বেশি উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা যায়। এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর একসঙ্গে কাজ করা জরুরি।
সরকার–বেসরকারি অংশীদারত্ব মডেলে পাঁচটি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পাঁচটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করা হয়েছে।
পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের আদলে সমুৎসুক প্রিন্টার্স লিমিটেড গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউটের একটি অব্যবহৃত প্রিন্টারের ব্যবহার সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের ধারণা দেওয়া হয়। এ ছাড়া রংপুর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সঙ্গে রাজশাহী উড পয়েন্ট ফার্নিচার লিমিটেড, পঞ্চগড় জেম জুট মিলস লিমিটেডের সঙ্গে পঞ্চগড় টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, নারায়ণগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সঙ্গে জননী ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ, বরিশাল টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সঙ্গে মাহিন ফার্নিচার লিমিটেডের পিপিপি মডেল বাস্তবায়িত হয়েছে। এসব মডেলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক শিক্ষা। এসব প্রতিষ্ঠানের কারিগরি ও অন্যান্য সম্পদ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করার চেষ্টা করা হয়েছে।
সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্ব মডেল পরিচালনার ক্ষেত্রে উভয় প্রতিষ্ঠানের লাভের বিষয়টি চিন্তা করা উচিত। অন্যথায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের আগ্রহ হারানোর আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।
এ ধরনের মডেল বাংলাদেশে আরও পরিচালিত হলে বেকারত্ব কমে যাবে। আধুনিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
সৈয়দ আবদুল আজিজ
পেশাগত দক্ষতার উন্নয়নে দেশে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। কিন্তু এসব কাজের সমন্বয় না হওয়ায় আমরা পিছিয়ে পড়ছি। সুষ্ঠু সমন্বয় থাকা উচিত। পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ শেষে সনদ প্রদান করা হয় না। এতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমে যায়।
দেশে সনদপ্রাপ্ত শিক্ষিত মানুষের অভাব নেই। কিন্তু পেশাগত জ্ঞানের অভাবে তাঁদের বেকারত্ব বরণ করতে হচ্ছে। কিছুদিন আগে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক ১০ হাজার ফ্রিল্যান্সার চেয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে। প্রাথমিকভাবে ৩৩ হাজার গ্র্যাজুয়েট আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সাক্ষাৎকার ও ব্যবহারিক পরীক্ষার পর মাত্র ১৭ জন ওই পেশার জন্য নির্বাচিত হন। এটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার রুগ্ণ চিত্র। এখান থেকে বের হতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই।
পাট আমাদের দেশের ঐতিহ্য। কিন্তু এখনো পাটশিল্পের ওপর স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু হয়নি। পেশাগত দক্ষতার অভাবে পাটশিল্পের অসংখ্য পদ দিনের পর দিন খালি থেকে যাচ্ছে।
পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ উন্নয়নের ক্ষেত্রে কর্মপরিধি আরও বাড়ানো দরকার। সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্ব মডেল পরিচালনার ক্ষেত্রে সরকারি বাজেট সুনির্দিষ্ট হওয়া উচিত।
অনেক ক্ষেত্রে সরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থনৈতিক ঘাটতির কারণে মডেলগুলো সফল হতে পারছে না। এটি নিয়েও কাজ করতে হবে।
মো. আবদুল মোনায়েম
পাটশিল্প বাংলাদেশের ২০০ বছরের পুরোনো ঐতিহ্য। এটি ধরে রাখতে হবে। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এ কারখানাটি পরিচালনা করতে হয় অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে। ২০১১ সালে জেম জুট মিলের দায়িত্ব গ্রহণ করি। ওই সময় বেশির ভাগ শ্রমিক ছিলেন অদক্ষ।
পেশা সম্পর্কে পাটশিল্পের শ্রমিকদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই বললেই চলে। তাঁরা কর্মক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে জানেন না। কারখানায় কাজ করতে করতে দক্ষতা অর্জন করেন। এ জন্য দুর্ঘটনা বন্ধ করা যাচ্ছিল না। অনেক শ্রমিক কাজ ছেড়ে ভিন্ন পেশায় চলে যান।
২০১৫ সালে সৈয়দ আবদুল আজিজ পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণের প্রস্তাব প্রদান করেন। প্রস্তাবে রাজি হই। প্রশিক্ষণ শেষে সবাইকে চাকরিতে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু দুই–তিন মাস পর কর্মত্যাগ করে অনেকেই কারখানা ছেড়ে চলে যান।
শ্রমিক হিসেবে তাঁরা কাজ করতে আগ্রহী নন। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হতে চান। পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপ চুক্তি করে লাভবান না হলে এ ধরনের চুক্তি করার দরকার কী?
প্রতিটি পেশার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা উচিত, যেন অন্য পেশার মানুষ বিব্রত না হয়।
নীহার রঞ্জন দাস
সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্ব কর্মসূচির কারণে ছাত্ররা পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষা ও আয় করার সুযোগ পাচ্ছেন। পরবর্তীকালে তাঁদের কাছ থেকে অন্যরাও পেশাগত জ্ঞান লাভ করছে। এভাবেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
গ্রাফিক আর্টসের ওপর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাতটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। সমুৎসুক প্রিন্টার্স লিমিটেডের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। পিপিপির আদলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সুসম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আরও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
পিপিপির মাধ্যমে শ্রমিকের দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব। বর্তমানে আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্ম আউটসোর্সিংয়ে বেশ প্রভাব ফেলেছে। পিপিপি সাহায্য করলে তারা আরও উৎসাহিত হবে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব।
আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় চারটি কম্পিউটার ল্যাবে ৯৫টি কম্পিউটার রয়েছে। গত সপ্তাহে একটা জরিপ করে দেখা গেছে, শতাধিক ছাত্র বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করে অর্থ উপার্জন করছেন।
পিপিপির মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের কাজগুলো সন্ধ্যা সাতটা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত চালু করলে অনেক ছাত্র কাজ করতে আগ্রহী হবেন। এর মাধ্যমে একদিকে ছাত্রদের আয়ের সুযোগ হবে এবং অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের মাধ্যমে দেশ এগিয়ে যাবে।
ফরিদ আহমেদ
যত দিন পৃথিবী থাকবে প্রিন্টিংয়ের কাজও তত দিন থাকবে। সমস্যা হলো, একটা ইনস্টিটিউটের বেশির ভাগ প্রিন্টিং মেশিন যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয় না। অধিকাংশ মেশিন নষ্ট। মেরামত করার উদ্যোগ নেই। এগুলো চালু রাখতে হবে।
মেশিনের মধ্যে সমস্যা দেখা দেওয়ার পরপরই মেশিনটিকে মেরামতের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত। অন্যথায় ছাত্ররা ঠিকমতো কাজ শিখতে পারবেন না। প্রিন্টিং বিভাগের সঙ্গে তাৎক্ষণিক মেশিন মেরামতের বিষয়টি যুক্ত হওয়া উচিত। অন্যথায় একটা মেশিনে সমস্যা দেখা দিলে মেরামতের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা পালন করতে গিয়ে প্রকৃত শিক্ষা বাধাগ্রস্ত হয়।
বর্তমানে পিপিপির মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করে অনেক ছাত্র উপকৃত হচ্ছেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে এসে অনেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হচ্ছেন। কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ধরনের মেশিন ঠিক রাখা জরুরি। এতে শিক্ষার্থীরা নিজ প্রতিষ্ঠানে হাতে–কলমে শেখার সুযোগ পাবেন।
তাসমিয়া তাবাসসুম রহমান
আইএলও এবং ইউনিসেফের উদ্যোগে শুরু হওয়া এপ্রেনটিস (শিক্ষানবিশ) মডেলের আদলে তিন বছরে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে কারিগরি শিক্ষা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে।
কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার পর অনেকে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেন। অনেক মা–বাবা নিজের সন্তানকে শ্রমিক হিসেবে দেখতে চান না। কারিগরি শিক্ষায় কোর্স করার পর স্বল্প বয়সীরা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে না। বিশেষ করে নারীদের বেলায় এ সমস্যা আরও প্রকট।
এমনিতে শিল্পের ক্ষেত্রে মেয়েদের চাকরি দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূলতা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ মনে করে, নারী কর্মচারী রাখা মানে তাঁকে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে। আবার তাঁদের নিরাপত্তার বিষয়েও নানা ধরনের প্রশ্ন থেকে যায়।
এ ধরনের মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আবার মালিকপক্ষ যখন মনে করবে নারী কর্মচারী রেখে লাভ হচ্ছে, তখনই তিনি রাজি হবেন। একটি পলিসির মাধ্যমে নারী কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার জন্য মালিকপক্ষকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করা দরকার। অন্যথায় মেয়েদের কারিগরি শিক্ষা দিয়ে তেমন ফলপ্রসূ হওয়া যাবে না।
শ্রমিকের চাকরি ছেড়ে দেওয়ার কারণগুলোর ওপর বিশেষ জোর দেওয়া উচিত। যেকোনো পেশায় নিযুক্ত হওয়ার পর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ না থাকলে চাকরি ছেড়ে দেওয়া স্বাভাবিক।
পোশাক খাতে অনেক দিন থেকে মেয়েরা কাজ করছেন। কিন্তু মধ্যম শ্রেণির পদগুলোতে তাঁদের উপস্থিতি ৩০ শতাংশের নিচে। অনেক সময় বলা হয়, মেয়েরা বকাঝকা দিয়ে কাজ আদায় করতে পারেন না বলে উচ্চপদে তাঁদের উপস্থিতি কম। এটি আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ করে। সমস্যাগুলো নিয়ে আমাদের কাজ করা উচিত।
মোখলেছুর রহমান
শিক্ষাব্যবস্থায় পেশাগত দক্ষতার বিষয়টি যুক্ত করা উচিত। এতে পেশার সঙ্গে পরিচিত বা দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি হবেন; যা দেশের শ্রমবাজারের চাহিদা ও জোগানের মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে সাহায্য করবে।
অনেকের মধ্যে পেশাকে ছোট করে দেখার মানসিকতা লক্ষ করা যায়। এটা পরিবর্তন করতে হবে। সঠিক পারিশ্রমিক প্রদানের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। কাজের পরিবেশ উন্নত করা জরুরি। কারখানার পরিবেশের দিকে তাকিয়েই শিক্ষার্থীরা যেন কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে।
উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রযুক্তিগত শিক্ষার আলাদা বিভাগ রয়েছে। আমাদের দেশেরও ওই ব্যবস্থা চালু করা উচিত। বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক খাতের সুনাম আছে। রপ্তানিতে আমরা প্রায় প্রথম সারিতে রয়েছি। কিন্তু পেশাগত দক্ষতার অভাবে চাকরিতে উন্নতি নেই।
আমরা মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছি। দেশের মানুষের কারিগরি দক্ষতা বা উৎপাদনক্ষমতা না বাড়লে উন্নত দেশে পরিণত হওয়া সম্ভব নয়। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ প্রায় ৪০ বছর ধরে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে রয়েছে। কারণ তাদের জনগণ সে পর্যায়ে আসতে পারেনি।
কাজের প্রাথমিক পর্যায়ে শ্রমিকের অভাব হয় না। কিন্তু মধ্যম পর্যায়ে শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে। এ জন্য অনেককে চাকরি হারাতে হয়। উপযুক্ত কারিগরি শিক্ষা এ অবস্থা থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে। কিন্তু শিক্ষার প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি হলে এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব।
পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক, নীতিনির্ধারক, উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একত্রে কাজ করতে হবে। পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের বিষয়টি দেশের ২২টি মন্ত্রণালয় দেখাশোনা করছে। কিন্তু কাজের সমন্বয় নেই।
ফারুক আহমেদ
কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে সমাজে প্রচলিত নেতিবাচক ধারণা সম্পর্কে আমরা অবগত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছি না। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আইএলও এবং অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় সমাজে ভ্রান্ত ধারণা পরিবর্তনের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বের কোনো বিকল্প নেই। বেশির ভাগ মানুষ বেসরকারি খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ জন্য সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্ব থাকা জরুরি। সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বের ওপর একটি নতুন পলিসি করা যেতে পারে। নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বকে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অনেক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের মাধ্যমে কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে নেতিবাচক মানসিকতা পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের সব পদক্ষেপের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছে। যেকোনো সহযোগিতা আমরা করতে চাই। সার্বিক উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে একটি পরিবর্তন আসুক, সেটাই কাম্য।
অশোক কুমার বিশ্বাস
সাধারণত প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষামূলক কর্মসূচি সফল হলেও পরবর্তী সময়ে বেশির ভাগই বন্ধ হয়ে যায়। বি-সেপ প্রকল্পের মতো বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের স্টেপ প্রজেক্টও পাবলিক–প্রাইভেট পার্টনারশিপের উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের লক্ষ রাখতে হবে, এ ধরনের উদ্যোগ যেগুলো কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়নে কাজে আসবে, সেগুলোকে এগিয়ে নিতে হবে। এ ধরনের পিপিপিকে এগিয়ে নিতে সরকারের বাজেটে অপ্রতুলতা নেই। বর্তমানে আমাদের দেশের মেয়েরা শিক্ষার সময় শতভাগ বৃত্তি পায়।
ভিন্নভাবে সক্ষম শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। দেশের পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটগুলো হওয়া উচিত দক্ষতা বৃদ্ধির একেকটি ক্ষেত্র। প্রশিক্ষণ ও দাপ্তরিক কাজে ব্যবহৃত ইনস্টিটিউটের যন্ত্রপাতির যান্ত্রিক সমস্যার সমাধান করতে হবে।
বাজেট নিয়ে কথা হয়েছে। কিন্তু পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বাজেটের কোনো ধরনের কমতি নেই। কোনো কোনো ক্ষেত্রে একজন জেলা প্রশাসকের চেয়ে অনেক বেশি বাজেট পায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রত্যেক শিক্ষককে বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয়। তারপরও ওই প্রতিষ্ঠানের মেশিনগুলো দিনের পর দিন বন্ধ বা অকেজো থাকবে কেন? কেবল বেতনের বিনিময়ে চাকরি করি—এ মনোভাব থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নিজের মেধাকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তাহলে দেশ এগিয়ে যাবে।
সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে। দক্ষতা বৃদ্ধি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ, মেশিন সরবরাহসহ অনেক ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।
মো. আলমগীর
আমাদের সমাজে প্রচলিত পেশাগত বৈষম্য দূর করতে হবে। উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে সামাজিকীকরণ করা আবশ্যক।
মানুষকে মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করা জরুরি। এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারত্বের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের লাভের বিষয় চিন্তা করতে হবে। উভয় পক্ষের দীর্ঘমেয়াদি লাভের বিষয়ে সচেতন হলে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসবে।
দেশের অর্থনীতির বেশির ভাগ নিয়ন্ত্রণ করে বেসরকারি খাত। এ জন্য বেসরকারি খাতকে বাদ দিয়ে দেশকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে।
সমস্যা হলো, কাজের প্রতি আমরা আন্তরিক নই। যেকোনো কাজ আন্তরিকতার সঙ্গে করলে সফলতা নিশ্চিত। কর্মক্ষেত্রে নারীদের অবহেলা করা হয়। ছোট করে দেখা হয়। কিন্তু নারী-পুরুষ কোনো বিষয় নয়। একজন পুরুষের মতো সমানভাবে একজন নারী তাঁর ব্যক্তিত্ব ও নিষ্ঠার মাধ্যমে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন।
গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তন করা দরকার। দেশের শিল্পকারখানার সঙ্গে সংগতি রেখে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করা জরুরি। অন্যথায় সনদধারী শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাবে।
আমরা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রশিক্ষণ প্রদান করি। প্রশিক্ষিত হওয়ার পর অনেকে কাজ করতে চায় না। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে উৎপাদন বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই। এ জন্য প্রয়োজন পেশাগত দক্ষতা।
গওহার নঈম ওয়ারা
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলো বাইরের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিভিত্তিক কাজ করতে পারে। এতে ছাত্ররা হাতে–কলমে কাজ শেখার সুযোগ পাবে। মানুষ অনেক আস্থার সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে সেবা গ্রহণ করবে। প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর অনেকে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে চান না। কিন্তু তাঁরা জীবিকা নির্বাহের জন্য কোন পেশাটাকে গ্রহণ করছেন?এসব বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে।
যাঁরা শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন, তাঁদের বকাঝকা বা কড়া নির্দেশনার মাধ্যমে কাজ আদায় করতে হবে, এমন মানসিকতা দূর করতে হবে।
আব্দুল কাইয়ুম
আজকের আলোচনায় পেশাগত দক্ষতার বিভিন্ন দিক এসেছে। সরকারের একার পক্ষে সবকিছু করা সম্ভব নয়। কারিগরি শিক্ষা ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষায় বেশি করে অংশ নিতে হবে।
আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
যাঁরা অংশ নিলেন
মো. আলমগীর: সচিব, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় (টিএমইডি)
টুমো পোটিআইনেন: কান্ট্রি ডিরেক্টর, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), বাংলাদেশ
অশোক কুমার বিশ্বাস: মহাপরিচালক, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়
ফারুক আহমেদ: সেক্রেটারি জেনারেল, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ)
কিশোর কুমার সিং: চিফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার, বাংলাদেশ স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড প্রোডাকটিভিটি (বি-সেপ) প্রজেক্ট, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)
সৈয়দ আবদুল আজিজ: প্রিন্সিপাল, যশোর টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ
মো. আবদুল মোনায়েম: চিফ নির্বাহী অফিসার, জেম জুট লিমিটেড
নীহার রঞ্জন দাস: প্রিন্সিপাল ইনচার্জ, গ্রাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট
ফরিদ আহমেদ: নকশা বিভাগের প্রধান, সমুৎসুক প্রিন্টার্স লিমিটেড
মোখলেছুর রহমান: সিনিয়র অপারেশনস অফিসার, এডুকেশন গ্লোবাল প্র্যাকটিস, বিশ্বব্যাংক
তাসমিয়া তাবাসসুম রহমান: হেড অব স্কিলস প্রোগ্রাম, ব্র্যাক
অ্যালেক্সসিউস চিছাম: ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো–অর্ডিনেটর, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)
গওহার নঈম ওয়ারা: উপদেষ্টা, প্রথম আলো
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো