পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ভিটামিন এ-এর অভাব দূরীকরণ
আলোচনায় সুপারিশ
* বাড়িতে গিয়ে গর্ভবতী মায়েদের খোঁজখবর নিতে হবে
* জন্মের পর শিশুকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে
* শিশুদের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে
* পার্বত্য চট্টগ্রাম, হাওর ও প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে ভিটামিন এ সম্পূরক পৌঁছানো জরুরি
* ভিটামিন এ–এর গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে
* অস্বাস্থ্যকর খাবার থেকে শিশুদের দূরে রাখা জরুরি
* ভিটামিন এ–এর ক্যাম্পেইন যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে
* নিয়মিত ভিটামিন এ নিয়ে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন
আলোচনা
আব্দুল কাইয়ুম
স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশ বেশ সাফল্য অর্জন করেছে। তবে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে আরও কাজ করতে হবে। শিশুর সুস্থতা, স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও দৃষ্টিশক্তির জন্য ভিটামিন এ প্রয়োজন। ভিটামিন এ– এর অভাবে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের অসুখে পড়তে হয়। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ভিটামিন এ-এর অভাব কীভাবে দূর করা যায়, তা নিয়ে আজকের আলোচনা। এখন এ বিষয়ে আলোচনা করবেন জাকী হাসান।
জাকী হাসান
নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল (এনআই) শিশুদের নিয়ে কাজ করে থাকে। পৃথিবীর ভিটামিন এ সম্পূরক চাহিদার ৭৫ শতাংশ এনআই সরবরাহ করে থাকে। বর্তমানে আমরা গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার মাধ্যমে ৬০টিরও বেশি দেশে ভিটামিন এ নিয়ে কাজ করছি।
দেশের শিশুস্বাস্থ্য, মাতৃস্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিষয়ক সমস্যা নিয়ে আমরা অাগেও গোলটেবিলের আয়োজন করেছি। সরকারের ভিটামিন এ কর্মসূচির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করাই আমাদের এবারের গোলটেবিলের উদ্দেশ্য।
শিশুমৃত্যু প্রতিরোধ, রাতকানা রোগ ও অপুষ্টি দূরীকরণে সারা বিশ্বে ভিটামিন এ–এর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
বাংলাদেশে বছরে দুইবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। এটা একটা সফল কর্মসূচি, যা বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সংস্থাও সরকারকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে।
কিন্তু এই সফল কর্মসূচির মধ্যেও কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। এই কর্মসূচি যেহেতু বছরে দুইবার আয়োজিত হয়, ভিটামিন এ নিয়ে আলোচনাও দুই দিনের জন্য সীমাবদ্ধ থাকে। বছরের অন্য সময় এ নিয়ে কারও মাথাব্যথা থাকে না।
জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ ছোট কোনো রাষ্ট্র নয় বরং কয়েকটি কানাডার সমান। আমরা শিশুদের ভিটামিন এ–এর অভাব পূরণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল বছরে দুইবার দুই কোটির অধিক শিশুকে ভিটামিন এ খাওয়াতে সহায়তা করে। বছরের পর বছর এটা চালিয়ে যাওয়া একটা বড় সফলতা। এটা যথেষ্ট সাহসিকতা ও দৃঢ়তার পরিচয় বহন করে।
তবে এত বড় কর্মসূচি চালাতে গিয়ে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। যেমন, ঠিকমতো ক্যাপসুলের জোগান পাওয়া, ক্যাম্পেইনের সময় যথেষ্ট পরিমাণ কর্মী পাওয়া ও দুর্গম এলাকায় সেবা পৌঁছানো ইত্যাদি। সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা বলছে, শুধু প্রত্যন্ত এলাকা নয়, ক্ষেত্রবিশেষে শহরাঞ্চলের সব মানুষের কাছেও এই সেবা পৌঁছানো যাচ্ছে না। শহরাঞ্চল, বস্তিবাসী ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের কাছে ভিটামিন এ পৌঁছানোর ব্যাপারে সরকারের বিশেষ উদে্যাগ এখনই প্রয়োজন।
মো. মফিজুল ইসলাম
১৯৭৩ সালে জাতীয় অন্ধত্ব দূরীকরণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভিটামিন এ সম্পূরক কর্মসূচি চালু করা হয়। তখন দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের রাতকানা রোগের হার ছিল ৪ দশমিক ১ শতাংশ। আর ২০০৫ সালে এটি দশমিক শূন্য ৪ শতাংশে নেমে আসে।
নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল ১৯৯৭ সাল থেকে জাতীয় ভিটামিন এ সম্পূরক কর্মসূচিতে যুক্ত হয় এবং ১৯৯৭-২০০৪ সাল পর্যন্ত কর্মসূচিতে প্রয়োজনীয় সব ক্যাপসুল প্রদান করে।
সরকার ২০০৭ সাল থেকে নিজস্ব অর্থায়নে ভিটামিন এ ক্যাপসুল কেনা শুরু করলেও যখনই ক্যাপসুল ক্রয়সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিয়েছে, তখনই এনআই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। এমনকি গত তিন বছরে ভিটামিন এ ক্যাপসুলের পুরোটাই এনআই সরবরাহ করেছে।
এনআই সরকারকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের ভিটমিন এ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়তা প্রদান করে আসছে। এই লক্ষে্য এনআই ২০০৬ সালে পাঁচ বছরমেয়াদি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে, যার আওতায় পাঁচ বছর বয়সী ১৬ লাখের বেশি শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।
জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান এনআইয়ের পাইলট প্রকল্পে উদ্বুদ্ধ হয়ে ২০১৪ সালে পুরো দেশে চাইল্ড টু চাইল্ড (িস–টি–সি) কর্মসূচি নামে একটি বিশেষ ধরনের কর্মসূচি চালু করে। এই কর্মসূচির আওতায় ক্যাম্পেইনের পরবর্তী চার দিন মাঠকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের খুঁজে বের করেন এবং ভিটামিন খাওয়ানো নিশ্চিত করেন।
বর্তমানে এনআইয়ের সহায়তায় দেশের ১২ জেলার ৪৬টি উপজেলার ২৪০টি প্রত্যন্ত ইউনিয়নে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তবে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিশুদের এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত করতে সরকারের অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি প্রয়োজন।
গাজী আহমাদ হাসান
যেকোনো কর্মসূচি বাস্তবায়নের আগে সঠিক পরিকল্পনা করা প্রয়োজন। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান জাতীয় ভিটামিন এ কর্মসূচির আগে একটি পরিকল্পনা তৈরি করে। এতে কাজ করতে সুবিধা হয়।
পরিকল্পনার পরে ছয় মাস থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের তালিকা তৈরি করা হয়। কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা, জেলা ও জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা কর্মশালাও পরিচালনা করা হয়। এর পাশাপাশি কর্মসূচিতে যুক্ত কর্মী বাহিনী ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
এ ছাড়া সবার মধ্যে কর্মসূচি-সম্পর্কিত তথ্য পৌঁছানোর জন্য থিম সংয়ের পাশাপাশি় নাটকের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন, গণমাধ্যমে বিজ্ঞাপন ও মাইকিং করা হয়।
জাতীয় ভিটামিন এ কর্মসূচির সফলতা এর যথাযথ মনিটরিংয়ের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। সরকার এই লক্ষে্য গত বছর ভিটামিন এ সম্পূরক কর্মসূচিতে একটি অ্যাপ ব্যবহার করে। এ সময় বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা থেকে ১০ জন, প্রতি বিভাগ থেকে ৪ জন ও সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে ৫ জনসহ জাতীয় পর্যায়ে ১৩০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এ ধরনের অ্যাপের ব্যবহার কর্মসূচি মনিটরিংয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
বিগত চার দশকে দেশে ভিটামিন এ-এর অভাব অনেকটা কমেছে। কিন্তু পুরোপুরি সফলতা আসেনি। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আমিনুজ্জামান তালুকদার
১৯৮২-৮৩ সালে ভিটামিন এ নিয়ে এক জরিপ করা হয়। সেখানে দেখা গেছে, ভিটামিন এ-এর অভাবে ৩০ হাজার শিশু দৃষ্টিশক্তি হারায়। সেই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। তবে বর্তমান কর্মসূচিকে টেকসই করতে হলে খাদ্য সমৃদ্ধিকরণ ও খাদ্যবৈচিত্র্যের ওপর জোর দিতে হবে।
হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল ভিটামিন এ সম্পূরক কর্মসূচিতে সংযুক্ত রয়েছে। এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কথা বলে থাকে। এ জন্য সবাইকে একত্রে কাজ করতে হবে।
সম্প্রতি ভিটামিন এ-এর অভাব কিছুটা কমেছে। ভিটামিন এ পাওয়া যায়, এমন খাবার উৎপাদনের পরিমাণ ও সহজলভ্যতাও বেড়েছে। কিন্তু এর মানে এটা নয় যে ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণ হয়ে গেছে।
শুধু সম্পূরক খাদ্য কিংবা ক্যাপসুল সরবরাহ করে ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়। এ জন্য খাদ্যের সমন্বয় প্রয়োজন। আমাদের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে ভিটামিন এ, আয়রন ও অন্যান্য পুষ্টির অন্যতম উৎস হতে পারে ডিম। এটা পুষ্টি সরবরাহ ও স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তাই ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের দিনে একটি ডিম খাওয়াতে হবে।
এম ইসলাম বুলবুল
ভিটামিন এ শরীরের জন্য খুবই দরকারি। এটি শরীরের রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়া দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখা ও স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে কাজ করে থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন এ ২৪ শতাংশ সব ধরনের মৃত্যুহার কমিয়ে দেয়। এ ছাড়া হামজনিত ৫০ শতাংশ ও ডায়রিয়া-সংক্রান্ত রোগে ৩৩ শতাংশ মৃত্যুর আশঙ্কা কমিয়ে দেয়।
ষাটের দশকে ভিটামিন এ-এর অভাবকে জনস্বাস্থ্য সমস্যা বলে অভিহিত করা হয়। কিন্তু সে সময় এই সমস্যার পুরোপুরি সমাধান করা সম্ভব হয়নি। স্বাধীনতার পরে ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভিটমিন এ–সহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সমাধানে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।
শিশুদের বছরে দুবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়ে থাকে। এক বছরের কম বয়সী শিশুদের নীল রঙের ও ১ থেকে ৫ বছর বয়সের শিশুদের লাল ক্যাপসুল দেওয়া হয়।
তবে ছয় মাসের কম বয়সীদের খাওয়ানো হয় না। কেননা মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে তাদের ভিটমিন এ–এর অভাব পূরণ হয়ে যায়।
পুষ্টিকর খাদ্যের মাধ্যমেও ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণ হতে পারে। তাই শিশুদের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে। এ জন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। স্কুলপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে অবহিত করতে হবে। এ ছাড়া গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
মোমেনা খাতুন
গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা বাংলাদেশ সরকারের ভিটামিন এ কর্মসূচির সূচনাকাল থেকেই ভিটামিন এ ক্যাপসুল সরবরাহ করে আসছে। এ ছাড়া মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য–সম্পর্কিত সচেতনতা তৈরিতে সরকারকে সহায়তা প্রদান করে আসছে।
টিকা নেওয়ার জন্য এখন আর কাউকে বাড়ি বাড়ি ডাক দিতে হয় না। সময় হলে মায়েরা টিকা নেওয়ার জন্য শিশুদের নিয়ে চলে আসেন।
ভিটামিন এ–এর ব্যাপারেও জনগণকে টিকা নেওয়ার মতো সচেতন করে তুলতে হবে। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা যেন ভিটামিন এ-এর অভাবে না ভোগে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এখানে পরিবারের ভূমিকা প্রধান।
ভিটামিন এ-এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়। এ কথা আমাদের সবারই জানা। কিন্তু এর বাইরে ভিটামিন এ কী কাজ করে, সেটা অনেকে জানে না। এ ব্যাপারে সবাইকে অবহিত করতে হবে।
বিশেষ করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে গর্ভবতী মায়েদের ভিটামিনযুক্ত খাবারের ব্যাপারে সচেতন করতে হবে, যাতে মায়েরা গর্ভকালীন থেকেই শিশুদের জন্য ভিটামিন এ–এর প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারটি উপলব্ধি করতে পারেন। তবে এই লক্ষ্যগুলো একা কারও পক্ষে অর্জন করা সম্ভব নয়। তাই সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
মো. আবদুস সালাম
ভিটামিন এ আমাদের শরীরে দীর্ঘদিন সঞ্চিত থাকে। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করে। এ জন্য শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন এ দরকার। তাই সরকার বছরে দুবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল সরবরাহ করে আসছে।
ছয় মাসের বেশি ও পাঁচ বছরের কম বয়সীদের জন্য ভিটামিন এ-এর ব্যবস্থা করা হয়। জনগণ এটা সাদরে গ্রহণ করেছেন। তাঁরা সময়মতো তাঁদের শিশুদের নিয়ে আসেন এবং সুফল ভোগ করেন।
ভিটামিন এ ক্যাম্পেইনের দিনে উৎসবমুখর পরিবেশ গড়ে ওঠে। সবাই দল বেঁধে শিশুদের নিয়ে আসেন। অনেক অঞ্চলে মসজিদের মাইক দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়। যেসব শিশু বাদ পড়েছে, তাদের জন্য দিনের শেষে আবার মাইকিং করা হয়।
অতীতে ক্যাম্পেইনের সুফল জানতে সরকারকে অনেক দিন অপেক্ষা করতে হতো। কিন্তু এখন অনলাইনের মাধ্যমে জানা যায়।
উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা আমাদের ক্যাম্পেইন মনিটরিং করেন। সম্প্রতি রিয়েল টাইম মনিটরিং অ্যাপ চালু করা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন কেন্দ্রের তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের এখনো অনেক বিষয়ে জ্ঞান নেই। তাদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অবহিত করতে হবে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি একটি জরুরি কাজ। মানুষ সচেতন হলে নিজ উদ্যোগে প্রয়োজনীয় বিষয়ে দায়িত্ব নেবে।
জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ খুব উপকারী। এটা শিশুকে খাওয়াতে হবে। এতে ভিটামিন এ-এর অভাবও পূরণ হবে।
গর্ভবতী নারীকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে নবজাতকও ভালো থাকবে। তা না হলে জন্মের পর শিশুর ভিটামিন এ-এর অভাব দেখা দিতে পারে।
নাজমা শাহীন
এখনো শতভাগ শিশু ভিটামিন এ পাচ্ছে না। ২০ শতাংশ এর বাইরে অবস্থান করছে। এ ছাড়া অনেক নারী গর্ভাবস্থায় ভিটামিন এ-এর স্বল্পতায় ভোগেন। সরকার এ ঘাটতি পূরণের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আমরা শিশুর ভিটামিন এ প্রাপ্তির কথা ভাবছি। কিন্তু গর্ভবতী মায়ের কথা ভাবছি না। আগে গর্ভবতী মায়েদের ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণ করতে হবে। কিন্তু তাঁদের যে পরিমাণ ভিটামিন এ দরকার, সেটা তাঁরা পাচ্ছেন না।
সম্প্রতি জনগণের মধ্যে কিছুটা সচেতনতা লক্ষ করা যাচ্ছে। গর্ভকালে মায়েদের খোঁজখবর নেওয়া হয়। কিন্তু দায়িত্ব এখানেই শেষ না। সন্তান প্রসবের পরও তা অব্যাহত থাকতে হবে। এ সময় মায়েদের বাড়তি ভিটামিন এ-এর প্রয়োজন দেখা দেয়।
শিশুরা বুকের দুধের মাধ্যমে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের কাছ থেকে ভিটামিন সংগ্রহ করে। তাই মায়েরা ভিটামিন এ না পেলে তারাও পাবে না।
বাংলাদেশের মানুষের পুষ্টি পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৬২-৬৪ সালে প্রথম জরিপ করে। এর ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে পুষ্টি নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট থেকে অনেক সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অধ্যাপক কামাল আহমেদের কথা বলতে হয়। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পুষ্টি জরিপ করেন। তাঁরই কল্যাণে ১৯৬৯ সালে পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। আমাদের শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া শেষে পুষ্টিবিদ হিসেবে বের হয়ে আসেন। আর সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রসমূহে তাঁদের জ্ঞান কাজে লাগানো হয়।
ব্রায়ান হ্যারিগান
নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল (এনআই) সারা পৃথিবীতে ভিটামিন এ–এর অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এনআইয়ের সহায়তায় সারা বিশ্বে ৫০টির বেশি দেশে ১৫০ মিলিয়ন শিশু দুই ডোজ ভিটামিন এ ক্যাপসুল পেয়ে থাকে এবং সম্প্রতি এনআই তার ১০ বিলিয়নতম ভিটামিন এ সম্পূরক ক্যাপসুল সরবরাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে।
গত ২০ বছরের অধিক সময় ধরে এনআই পুষ্টি বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারকে সহায়তা করছে। যার মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের িভটামিন এ এবং ডায়রিয়ার চিকিৎসায় ওরস্যালাইনের পাশাপাশি জিংক ট্যাবলেট খাওয়ানো, কিশোরী ও গর্ভবর্তী মায়েদের রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে আয়রন অ্যাসিড ফলিক ট্যাবলেটের ব্যবহার ও জাতীয় পুষ্টি কাউন্সিলের কর্মকাণ্ডগুলো জোরদারকরণে কৌশলগত সহায়তা প্রদান করা উল্লেখযোগ্য।
বছরে দুইবার নির্দিষ্ট মাত্রার ভিটামিন এ সম্পূরক প্রতি ১০ লাখ শিশুর মধ্যে ৪ হাজার জনকে খর্বতা ও ১ হাজার জনকে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকে মুক্ত করে।
বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ কোটি শিশুকে ভিটামিন এ সম্পূরক খাওয়ানোর পাশাপাশি এনআইয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চলমান চাইল্ড টু চাইল্ড (সি–টু–সি) কর্মসূচির মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের ৫০ হাজারেরও বেশি শিশু বছরে দুবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল গ্রহণ করে। এরা হচ্ছে চলমান ভিটামিন এ কর্মসূচিতে বাদ পড়া সেসব শিশু, যাদের মৃত্যুঝুঁকি অন্যান্য শিশুর চেয়ে অনেক বেশি।
এনআই আশা করে, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় একদিন দেশের প্রতিটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে সি–টু–সি কর্মসূচি ছড়িয়ে পড়বে এবং দেশের প্রতিটি পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু নিয়মিত ভিটামিন এ সম্পূরক গ্রহণ করবে।
মো. খলিলুর রহমান
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণ করতে হবে। অর্থাৎ অপুষ্টির বাধা দূর করতে হবে। এ জন্য গণমাধ্যমগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গণমাধ্যমসহ সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।
দেশব্যাপী ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর মতো কর্মসূচি পালন করা হয়। এটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠান কাজ করে থাকে। ভিটামিন এ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান আপ্রাণ চেষ্টা করে। এ জন্য আমরা ক্ষেত্রবিশেষে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সহায়তা গ্রহণ করে থাকি। কিন্তু যে কোনো বড় কাজে কিছু ভুলত্রুটি হতে পারে, এটা স্বাভাবিক। এগুলোকে ছোট করে দেখতে হবে। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ছোট ভুলগুলোকে বড় করে দেখা হয়। ফলে জনগণের ওপর এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ে। তাই আমাদের মধ্যেও অনেক সময় একধরনের অস্বস্তি কাজ করে।
শুধু ভিটামিন এ নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। এটাসহ অন্যান্য অণুপুষ্টি কণার ঘাটতি মোকাবিলা করতে হবে। কেননা, এগুলো এখন সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছে। তারা সেগুলো আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। তাহলে কাজ করতে আরও সুবিধা হবে।
মহিউদ্দীন খান সাদী
ইউনিসেফ প্রথম থেকে ভিটামিন এ সরবরাহের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে আসছে এবং সমর্থনও জুগিয়েছে। এখনো সহায়তা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে আর ভবিষ্যতেও সেটা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছি।
প্রতিবছর দুই কোটি শিশুকে ভিটামিন এ কর্মসূচির আওতায় আনা হয়। যদি এই কর্মসূচির সফলতার হার ৯৯ শতাংশ হয়, এরপরও ১ শতাংশ বাদ থেকে যায়। আর এই ১ শতাংশ মানে হলো ২ লাখ শিশু। অথচ অনেক দেশে এই পরিমাণ শিশু তাদের লক্ষ্যমাত্রায় থাকে। তবে এরপরও সরকার যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে, তা প্রশংসনীয়।
ভিটামিন এ-এর অভাব পূরণের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে কাজ করা হচ্ছে। সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারলে কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। এ জন্য ইউনিসেফ সর্বদা সরকারের পাশে থাকবে।
ভিটামিন এ-এর ঘাটতি পূরণের জন্য সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ভিটামিন এ ক্যাপসুলও সরকার নিজেই সংগ্রহ করছে। তবে এ ব্যাপারে সঠিক পরিকল্পনার ঘাটতি রয়েছে, যে ব্যাপারে সরকারকে আরও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
মো. সায়েদুর রহমান
একজন চিকিৎসাবিজ্ঞানী হিসেবে ভিটামিন এ–এর পাশাপাশি আমি ভিটামিন ডি নিয়ে কথা বলতে চাই। সম্প্রতি বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে ভিটামিন ডি–এর অভাব লক্ষ করা যাচ্ছে।
পৃথিবীতে প্রায় ১০০ কোটি মানুষের ভিটামিন ডি–এর ঘাটতি রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সংখ্যা এর অন্তর্ভুক্ত। তাই ভিটামিন এ-এর সঙ্গে ভিটামিন ডি নিয়েও চিন্তা করতে হবে। ভিটামিন ডি–এর সঙ্গে আয়রনকে অবহেলার চোখে দেখা হচ্ছে।
আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে আয়রনের অভাব দেখা যায়। এ নিয়ে অনেক বিস্তৃত গবেষণা করা যেতে পারে। কিন্তু হচ্ছে না। ভিটামিন এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করা হচ্ছে। অনেক সময় অবশ্য সরবরাহে ঘাটতি দেখা দেয়। আবার সুষ্ঠুভাবে বণ্টনপ্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয় না। তাই আমাদের পরিকল্পিতভাবে কাজ করতে হবে।
আমাদের কাজে কৌশলগত কিছু ভুল রয়েছে। সেগুলো চিহ্নিত করতে হবে। এরপর এগুলো শোধরানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
দেশে বছরে দুবার ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। এ সময় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। কিন্তু ওই দিনগুলোতে অনেক সময় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ফলে সুষ্ঠুভাবে বণ্টনে ব্যাঘাত ঘটে। পরিবেশটা ঠিক রাখা দরকার। এদিকে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবে।
খুব বেশি গবেষণা করতে হবে। তাহলে ঘাটতি কোথায়, তা দেখা যাবে। কিন্তু আমরা সময়মতো গবেষণাও করতে পারি না। দেখা যাচ্ছে, চার বছর পর একবার জরিপ চালানো হচ্ছে।
নূর মোহাম্মদ
মায়ের গর্ভাবস্থার সময় থেকে ভিটামিন এ-এর অভাবজনিত সমস্যাগুলো দেখা দেয়। পরে শিশুর ওপর এর প্রভাব পড়ে। এটা শিশুদের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে ব্যাঘাত ঘটায়। তাই সবার আগে মায়ের পুষ্টির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
শিশুর জন্মের পর তার যত্ন নেওয়া শুরু করতে হবে। তার বেড়ে ওঠার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মা ও শিশুকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। এ জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবারের মজুত রাখতে হবে।
গর্ভবতী–প্রসূতি মা, নবজাতক ও পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু সবার জন্য বাড়তি ভিটামিন এ প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ডায়রিয়া মোকাবিলায় বিশেষ বার্তা দিয়ে সফল হয়েছিল। এখন ভিটামিন এ সম্পর্কে এমন কোনো কার্যকর উপায় বের করতে হবে।
পাঠ্যবইয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পাঁচবার ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা কেউ তা খাই না।
সমাজে পরিবর্তন আনতে হবে। পুষ্টিকর খাবারের উৎসগুলো হাতের নাগালে আনতে হবে। আর সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই।
গ্রামাঞ্চলে অনেকে জানে না কোন খাবারে কোন ভিটামিন রয়েছে। সেটা হয়তো পাঠ্যবইয়ে রয়েছে। কিন্তু সাধারণ জনগণের কাছে তো বই থাকবে না। তাই সবাইকে এ সম্পর্কে জানাতে হবে।
বর্তমানে শহরাঞ্চলে অস্বাস্থ্যকর িকন্তু মুখরোচক–জাতীয় খাবার বেশ চলছে। অনেক ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েরা বাসায় খাওয়া বন্ধ করে দেয়।
কম বয়সী ছেলেমেয়েরা সেগুলো খুব পছন্দ করে। এর প্রভাব অনেক বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। এগুলো শরীরের কোনো উপকারে আসে না। উল্টো স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়।
তাই শিক্ষার্থীদের এসব খাবারের ক্ষতিকর দিকগুলো জানাতে হবে। ভিটামিন এ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা গেলে এর একটি দীর্ঘস্থায়ী সুফল পাওয়া যাবে।
এই শিক্ষার্থীরা যখন বাবা–মা হবে, ভিটামিন এ সম্পর্কে তাদের এই সচেতনতা তাদের সন্তানদের জন্য সুফল বয়ে আনবে।
আব্দুল কাইয়ুম
আজকের আলোচনায় অনেক সুপারিশ এসেছে। এগুলো মেনে কাজ করা হলে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের ভিটামিন এ–এর অভাব দূর করা সম্ভব হবে বলে আশা করি।
আজকের আলোচনায় উপস্থিত থাকার জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে সবাইকে কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ।
যাঁরা অংশ নিলেন
নূর মোহাম্মদ: লাইন ডিরেক্টর, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
মো. খলিলুর রহমান: পরিচালক, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান, আইপিএইচএন
মো. আবদুস সালাম: পরিচালক, এমআইএস বিভাগ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর
নাজমা শাহীন: অধ্যাপক, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মো. সায়েদুর রহমান: অধ্যাপক, ফার্মাকোলজি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
গাজী আহমাদ হাসান: ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, জাতীয় পুষ্টিসেবা, আইপিএইচএন
এম ইসলাম বুলবুল: ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, জাতীয় পুষ্টিসেবা, আইপিএইচএন
আমিনুজ্জামান তালুকদার: কান্ট্রি ডিরেক্টর, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল
মোমেনা খাতুন: হেলথ টেকনিক্যাল স্পেশালিস্ট
মহিউদ্দীন খান সাদী: নিউট্রিশন স্পেশালিস্ট, ইউনিসেফ নিউট্রিশন বিভাগ
ব্রায়ান হ্যারিগান: ভাইস প্রেসিডেন্ট, স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড গ্রোথ, নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল
জাকী হাসান: কান্ট্রি ডিরেক্টর, নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ
মো. মফিজুল ইসলাম: টেকনিক্যাল ম্যানেজার, নিউট্রিশন ইন্টারন্যাশনাল
সঞ্চালক
আব্দুল কাইয়ুম: সহযোগী সম্পাদক, প্রথম আলো