নদী হলো আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি আমাদের পানি সরবরাহ করে, খাদ্য উৎপাদনে সহায়তা করে এবং পরিবহনের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কিন্তু দিন দিন নদীগুলো দূষিত হয়ে যাচ্ছে। কলকারখানার বর্জ্য, ঘরবাড়ির বর্জ্য এবং কীটনাশকের ব্যবহারের ফলে নদীর জল এখন আর পানীয়যোগ্য নয়। এতে জলজ প্রাণীরাও বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি আজকের বাংলাদেশ আর আজ থেকে ৫০ বছর আগের বাংলাদেশের প্রকৃতির অবস্থান কেমন ছিল আর কেমন হবে ৫০ বছর পরের বাংলাদেশের প্রকৃতি? বর্তমান সময় ডিজিটাল প্রযুক্তিতে ছেয়ে গেছে। উন্নত কোম্পানি হচ্ছে, নতুন নতুন নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা তৈরি হচ্ছে।এতে মানুষের কতটুকু উপকার হচ্ছে আর এটা কৃত্রিমভাবে উপকার পেলেও প্রাকৃতিক দিক থেকে আমরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি, তা কাটিয়ে ওঠার জন্য আমরা কী মোকাবিলা করছি। আমরা আজ প্রকৃতিকে ভুলতে বসেছি, এ যেন শহরের বিলাসিতা আর গ্রামে কতিপয় গাছের শৌখিনতা।
এভাবে চলতে থাকলে যেমন অতিরিক্ত রেডিয়েশনের মাত্রার জন্য পাখি নিধন হচ্ছে, তেমনি গাছপালার ক্ষতি হচ্ছে। এ থেকে আমাদের বাঁচার উপায় আছে। তা কেন আমরা অনুসরণ করছি না। আমরা কোনো কিছু করেই, সেই পর্যন্ত কেন? এর প্রতিকার এবং ভবিষ্যতের কথা আমরা চিন্তা করি না। সম্প্রতি লক্ষ করবেন বিল গেটস ও মার্ক জাকারবার্গের মতো ধনী ব্যক্তিরাও কৃষির দিকে নজর দিয়েছেন। এতে আমাদের কৃষিপ্রকৃতি নদীকে বাঁচানো অতীব গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান সময়ে।
বিশ্বের নদীগুলো আমাদের জীবন ও পরিবেশের জন্য অপরিহার্য। তবে বেহাল অবস্থায় থাকা এই নদীগুলো আজ সংকটের সম্মুখীন। শিল্পায়ন, নগরায়ণ এবং অপরিকল্পিত উন্নয়ন নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করছে। ফলে শুধু জলসংকট নয়, বৈচিত্র্যহীনতা ও পরিবেশদূষণও বাড়ছে।
নদীকে বাঁচাতে হলে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। প্রথমত, নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং সঠিক নীতিমালা তৈরি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, নদীর পরিবেশ ও বাস্তুসংস্থানের সুরক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে হবে।
অন্যদিকে গাছ লাগানো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। গাছগুলো কেবল বায়ু পরিষ্কার করে না, বরং মাটি ও পানি সংরক্ষণেও সহায়তা করে। সুতরাং আমাদের উচিত বেশি করে গাছ লাগানো, বিশেষ করে নদীর তীরে, যাতে মাটি ক্ষয় রোধ করা যায় এবং জলপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখা যায়।
সামাজিক সচেতনতা এবং সরকারের সহযোগিতা পেলে নদী ও গাছের সুরক্ষায় একটি স্থায়ী পরিবর্তন আনা সম্ভব। ‘নদীকে বাঁচান, গাছ লাগান স্লোগান’ ধারণ করে আমাদের প্রত্যেককে এগিয়ে আসতে হবে। এটি আমাদের ভবিষ্যৎ এবং পরিবেশের জন্য একটি জরুরি দায়িত্ব।
সৌরভ হালদার
শিক্ষার্থী
অনার্স তৃতীয় বর্ষ (২০-২১)
ব্যবস্থাপনা বিভাগ
সরকারি ব্রজলাল কলেজ, খুলনা