লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডভুক্ত টংগঝিরি পাড়া। এখানে প্রায় শতাধিকের কাছাকাছি পরিবারের বসবাস। আশপাশে আরো বেশ কয়েকটি ত্রিপুরা পাড়া রয়েছে। কিন্তু নেই কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এতে বহু কোমলমতি শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষাগ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে কোমলমতি শিশুদের পায়ে হেঁটে দূরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে হচ্ছে। নিকটবর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়টির দূরত্ব পাড়া হতে ৩ কিলোমিটারের মতো।
পাড়ায় একটি স্কুল থাকলেও সেটি পর্যাপ্ত নয় মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের জন্য। পাড়ায় ২০০৮ সালে একটি কমিউনিটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও গত এক দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সরকারিকরণ হয়নি। অবহেলায় অযত্নে বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। অধিকাংশ আসবাবপত্র বর্তমানে ব্যবহারের অযোগ্য।
আজকের শিশু যেহেতু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ তাই শিশুদের মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা দরকার। ছোটবেলা হতে যদি শিশুদের পর্যাপ্ত পরিচর্যা না করা হয় তাহলে পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ হয় না। তাই প্রত্যেকটি গ্রামে দরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার ক্ষেত্রে পাহাড়ের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ বিদ্যালয়ের অভাব।
পাহাড়ের জাতিগোষ্ঠীর গ্রামগুলোর শিক্ষার্থীদের অনেক দূরদূরান্তে অবস্থিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হেঁটে গিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে হচ্ছে। তাছাড়াও শিশুদের ছোটবেলা হতে দূরে হোস্টেলে গিয়ে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। এর ফলে শিশুরা অল্প বয়স হতে পরিবারের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মাতৃস্নেহ হতে বঞ্চিত হয়। এর মাধ্যমে শিশুদের পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারমূলক কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে প্রাথমিকে মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান। সরকার যে স্মার্ট বাংলাদেশের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে এই শিশুদের মান সম্পন্ন শিক্ষা ছাড়া সেটি সম্ভব নয়। এমতাবস্থায়, আমাদের গ্রামে একটি স্থায়ী সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং শিশুদের মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিতের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
টনি ত্রিপুরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়