চট্টগ্রামের বাঁশখালী-আনোয়ারা সীমান্তে সাঙ্গু নদের ওপর নির্মিত তৈলারদ্বীপ সেতুতে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ যেন নতুন কিছু নয়। সেতুটি নির্মিত হওয়ার পর থেকেই চলছে এই টোল আদায়ের নামে গলাকাটার মতো হিসাব–নিকাশ। যা নিয়ে প্রায়ই দেখা যায় যানবাহনের মালিক-শ্রমিকের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ।
বাঁশখালী-চট্টগ্রাম পিএবি সড়কের তৈলারদ্বীপ সেতুটি উদ্বোধন হয় ২০০৬ সালে। উদ্বোধনের পর থেকে এই সেতুর ওপর নির্ধারিত টোল ধার্য করা হলেও ইজারাদারগণ কৌশলে যানবাহন থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় করতে থাকেন।
এর মধ্যে বেশ কয়েকবার এই টোল আদায় বন্ধে অনেক প্রতিবাদ থেকে শুরু করে আদালতে রিট পর্যন্ত করতে দেখা যায় স্থানীয় লোকজনের পক্ষ থেকে। এ বিষয়ে আরও স্পষ্টতা হচ্ছে, সাবেক সংসদ সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট মামলা করেন। পরে তিনি এটাও আশ্বস্ত করেছিলেন যে, উচ্চ আদালতের আদেশের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম-বাঁশখালী সড়কের তৈলারদ্বীপ সেতু টোলমুক্ত হচ্ছে। কিন্তু ২০১৭ সালের দিকে এ কথাটি তিনি বললেও এখনো তার কোনো বাস্তবিক বিহিত হয়নি।
প্রকৃতপক্ষে যানবাহনের মালিক, সমিতি আর স্থানীয় লোকজনের দাবি, বাঁশখালী-আনোয়ারা সীমান্তের তৈলারদ্বীপ সেতুটি নির্মাণে কোনো বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের প্রয়োজন হয়নি। সম্পূর্ণ দেশি অর্থায়নে এ সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। সুতরাং স্বাভাবিক নিয়মেই এ সেতুতে কোনো টোল আরোপের সুযোগ নেই।
পাশাপাশি তারা মনে করে যে একই নদে একই সাইজের দোহাজারী ও খোদারহাট সেতু দুটিতে কোনো ধরনের টোল আদায় করা না হলেও বাঁশখালী-আনোয়ারা সীমান্তের তৈলারদ্বীপ সেতুতে গলাকাটা টোল আদায় করছেন ইজারাদার। এটা কি আমাদের ওপর জুলুম নয়? এটা কতটুকু বৈধতার কাতারে পড়ে? এখন এটিই তাদের মনে প্রশ্ন।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই টোল আদায়ের নামে গলাকাটা সিস্টেম, তা বরাবরই স্থানীয় জনগণ তথা যানবাহন মালিক সমিতির মধ্যে একটা প্রশ্ন রেখেই যায়—কেন প্রকাশ্যে এই অবৈধ সিস্টেম? এসব বন্ধে কি কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার কেউ নেই? তাদের মনের কোণে এখনো একটি আক্ষেপ থেকে যায় যে, তারা কি টোল আদায়ের ইজারাদার থেকে মুক্তি পাবে না? সমাধান কি হবে না এ বিষয়ের?
তৌহিদ-উল বারী
শিক্ষার্থী
বাকলিয়া সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম।