প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রানিখ্যাত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ শ্যামল রূপে এক পলকেই মুগ্ধ হয় সবাই। চারদিকে পাহাড়-পর্বত, ঝরনা, আর সবুজ শ্যামল গাছপালায় ঘেরা এ বিশ্ববিদ্যালয়টির সৌন্দর্য যেন প্রকৃতির এক আশীর্বাদ। কিন্তু এই সৌন্দর্যকে পুঁজি করে একটি দুষ্টচক্র লিপ্ত হয়েছে বৃক্ষনিধন আর পাচারের রমরমা ব্যবসায়।
অতি বৃষ্টিতে যখন চট্টগ্রামের অবস্থা বেশ করুণ, পানিতে তলিয়ে গেছে শহরের বিভিন্ন এলাকা, তখন ব্যতিক্রম নয় আশপাশের এলাকাও। শহর থেকে কিছুটা দূরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতিও সুখকর নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় পাহাড় ধস হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ঝরনার দুর্বার গতি যেন অপ্রতিরোধ্য।
প্রাকৃতিক এই দুর্যোগকেই কাজে লাগাচ্ছে একটি অসাধু চক্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পাহাড় থেকে গাছ কেটে সে গাছগুলোকে পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতে ভাসিয়ে দিয়ে অভিনব কায়দায় গন্তব্যে পাঠাচ্ছে তারা। মনে হতে পারে এ যেন দক্ষিণী সিনেমা পুষ্পার হুবহু বাস্তবিক রূপ। ঘটনাটি নজরে আসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর স্বেচ্ছায় পানি থেকে গাছ উদ্ধারের মাধ্যমে।
কিন্তু এই সমস্যার সমাধান কোথায়? বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষনিধন ও চোরাকারবারিতে জড়িত একটি চক্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ রয়ে গেছে। সচেতন মহলের চোখকে ধুলো দিয়ে এভাবে চলতে থাকলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তা একদা মরুভূমির মরিচীকায় পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। গুরুতর এই সমস্যা সমাধানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সজাগ দৃষ্টি অবশ্যই কাম্য, একইসাথে পাহাড়ের বৃক্ষনিধনের অনাচারে সরাসরি বা অগোচরে যারা যুক্ত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনাও এখন সময়ের দাবি।
কারিশমা ইরিন
শিক্ষার্থী, বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।