বিশেষ সাক্ষাৎকার: জি এম কাদের

আমি জাতীয় পার্টিকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম

শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনে মিত্র বা সহযোগী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিল জাতীয় পার্টি। দলটির নেতারা কখনো মন্ত্রিত্ব নিয়ে সরকারের অংশীদার হয়েছেন; কখনো সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসেছেন। সর্বশেষ গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও অংশ নিয়ে দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দলের আসনে বসেছিল দলটি। গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরশাসনের পতনের পর জাতীয় পার্টির অতীত নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। এসব প্রশ্ন নিয়েই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে প্রথম আলো কথা বলেছে তাঁর বাসভবন উত্তরায়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কাদির কল্লোলসেলিম জাহিদ

প্রথম আলো:

গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে দেশের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল। আপনারা অংশ নিলেন। কেন?

জি এম কাদের: আসলে, ২০১৪ সালের পর থেকে আমাদের দলে অন্যায়ভাবে-বেআইনিভাবে একটি গ্রুপ তৈরি করে আওয়ামী লীগ সব সময় আমাদের ব্ল্যাকমেল (প্রতারণা) করত। সরকারের বিরুদ্ধে এবং যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে ওই গ্রুপ তৎপর হতো। আমাদের দলের প্রতীক ও মালিকানা ওই গ্রুপের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হতো।

ফ্যাসিজমের অত্যাচারের যে কথা বলা হয়, জাতীয় পার্টি দলগতভাবে তার বেশি শিকার। সে পরিস্থিতিতে দুই ভাগ করা পার্টি যখন ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারছে না, তখন দলকে বাঁচিয়ে রাখা এবং একই সঙ্গে আমাদের সিদ্ধান্তের কারণে নিজেদের দৈহিক বা অন্য সব দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়; এমন সময় ওই নির্বাচন এসেছিল।

প্রথম আলো:

আপনি আওয়ামী লীগের শাসনকে ফ্যাসিজম বলছেন। কিন্তু আলোচনা আছে যে আপনারা ফ্যাসিজমের সহযোগী বা দোসর হিসেবে কাজ করেছেন।

কাদের: না, আমরা কোনো সময় তাদের দোসর হিসেবে কাজ করিনি। আমরা সব সময় জনগণের দোসর হিসেবে কাজ করেছি। আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা আমরা কখনোই করিনি; যতটুকু দেখানো হয়েছে, সেটা গায়ের জোরে করানো হয়েছে।

আমি নির্বাচন (৭ জানুয়ারি) করতে চাইনি। কিন্তু আমাকে বলা হলো, আপনারা নির্বাচনে না গেলে আপনাদের অন্য গ্রুপ অংশ নেবে। এ ধরনের হুমকির মুখে আমাকে বলতে হলো, ঠিক আছে, নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয়, সেটা নিশ্চিত করেন। তখন আমাকে নেগোসিয়েশনের (দর-কষাকষি) কথা বলতে হয়েছিল।

প্রথম আলো:

৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনেও আসন ভাগাভাগি বা দর-কষাকষির বিষয়গুলো দেখা গেছে। কী ঘটে সেদিন?

কাদের: সেদিন মোটেও দর–কষাকষি ছিল না। সেদিন আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম নির্বাচন বর্জন করব। ওরা আমাকে বলেছিল, সমঝোতায় আপনি সন্তুষ্ট না হলে পরে প্রত্যাহার করতে পারবেন। কিন্তু এখন মনোনয়নপত্র জমা দেন। কিন্তু দলের দুজন নেতাকে আমি বলেছিলাম, সমঝোতা বা সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির বিষয় নয়। আমরা নির্বাচন বর্জন করব।

প্রথম আলো:

এই নেগোসিয়েশন বা মধ্যস্থতা কারা করেছিল?

কাদের: এটা আওয়ামী লীগের সঙ্গে সরাসরি হচ্ছিল। মনোনয়নপত্র জমা হওয়ার পর দেখলাম, তখনই তারা আমাদের প্রার্থীদের মাঠে নামতে দিচ্ছে না। সে পরিস্থিতিতে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ হওয়ার আগের দিন ১৬ ডিসেম্বর আমি সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি দুজন নেতার কাছে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের চিঠি তৈরি করে রাখলাম। অন্যদিকে সেই ঘোষণা দিতে রাতে প্রেসকে ডাকলাম।

কিন্তু বনানী অফিসে আমি যখন প্রেসে ঘোষণা দিতে যাব, তখন দেখলাম একেবারে সব এজেন্সির (গোয়েন্দা সংস্থা) লোকজন এসে গেছে। র‍্যাব, স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি), ডিজিএফআই, এনএসআই ও থানা-পুলিশের সব হর্তাকর্তারা এসে আমাকে ঘিরে ফেলে। তারা আমাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার না করার জন্য বলে। তারা বলে আসন আরও বাড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা তারা করবে। তখন আমি বলেছিলাম, এটা সিলেকশন হবে।

আমি নির্বাচন করব না। তারা আমাকে বলল, স্যার, আপনার খুব সমস্যা হবে। এরপরও আমি প্রত্যাহার করার কথা বললে তারা বনানী অফিসের আশপাশের সব রাস্তা বন্ধ করে দিল। এমন পরিস্থিতি তৈরি করল যে তারা কিছু করে ফেলবে।

তখন আমি বললাম, আমাকে যখন নামিয়ে ফেলেছ, আমার রাজনীতিই শেষ, অন্তত আমার পার্টি বাঁচানোর জন্য তোমরা আর কিছু জায়গায় আমাকে ছাড় দেওয়ার জন্য বলো। তখন আমার স্ত্রীসহ কয়েকজন নেতার আসনের ব্যাপারে বললাম। আমি দল বাঁচাতে চেয়েছিলাম। আমার ভুল হতে পারে। সব দিক থেকে আমি খুব চাপে ছিলাম।

প্রথম আলো:

এখানে একটি অভিযোগ উঠেছিল যে আপনার স্ত্রীর আসনের জন্যই আপনি দর–কষাকষি করেছিলেন।

কাদের: এ ধরনের অভিযোগ উদ্দেশ্যমূলক। পরিস্থিতির কারণে যখন নির্বাচনে অংশ নিতেই হবে, তখন আমি আমার স্ত্রীসহ কয়েকজন নেতার আসনে নৌকা প্রতীক যেন না থাকে, সেটা তাদের নিশ্চিত করতে বললাম। তারা বলল, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আমরা চেষ্টা করছি। তখন ওবায়দুল কাদের সিনে (ঘটনার সঙ্গে) নেই। এরাই করছে। কিছুক্ষণ পর ওরা বলল, ‘স্যার, ভাবির আসনটা হয়ে গেছে। আরও কয়েকটা দিচ্ছি।’ ভিন্ন কোনো অভিযোগ সত্য নয়।

প্রথম আলো:

আপনি সরকারের বিরুদ্ধে সরব ছিলেন। কিন্তু গত বছরেরই আগস্টে ভারতে সফরে গেলেন। সেখান থেকে ফিরে আপনি চুপ হয়ে গেলেন। বলেছিলেন সফরের বিষয়ে বলতে ভারতের অনুমতি লাগবে। এর কারণ কী?

কাদের: না…না…এটা...এটা...আমার মনে হয়, আমার জীবনে সবচেয়ে বড় ভুলটা আমি এখানে করেছিলাম। সেটা হলো, ওখান থেকে আসার পর আমি মোটেই চুপ হইনি। আমি তখন একটু অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলাম। ওখান থেকে আসার পর নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে এখানে অনেক স্ট্রেস (চাপ) ছিল। যা–ই হোক, আই ওয়াজ আন্ডার হেভি প্রেশার (আমি খুব চাপে ছিলাম।)। ওখানে ভারতের বিভিন্ন লেভেলের (পর্যায়ের) লোক আমাকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করেছেন এবং সেখানে আমি অনেক হার্শ (কঠিন) কথা বলেছিলাম।

এমনকি এখন যেটা ঘটে গেছে, আমি এ কথাও বলেছিলাম যে বাংলাদেশে একদিন এ রকম অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। এখন এটা বোঝা যাচ্ছে না এবং ইন্ডিয়া শুড বি কেয়ারফুল অ্যাবাউট ইট (ভারতের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত)। আমি ওনাদের যতটুকু বলার বলেছিলাম। তো সবকিছু বলার পরে আমি এখানে বিমানবন্দরে আসব। আমার মনে হলো যে কথাবার্তা বলার মধ্যে সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলে ফেলি কি না; আবার সরকার সে জন্য আমাকে ধরে কি না, যে তুমি এসব কথা ভারতে গিয়ে বলে আসলে কেন।

তো আই ওয়াজ ভেরি স্কেয়ার্ড (আমি খুব ভয়ে ছিলাম)। সে জন্য আমি গতানুগতিক কূটনৈতিক শিষ্টাচার পালনের যে কথাটা বলি, সেটাই বলেছিলাম। যেটা আমি আমেরিকা, ব্রিটিশ সবার ক্ষেত্রে করে থাকি। তাদের সঙ্গে আন্ডারস্ট্যান্ডিং করেই কথা বলি। সেটাই করেছি। ওই কথাটাই বলে ফেলেছিলাম। এটাই ছিল আমার পুরো রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বড় ভুল। সরি ফর দ্যাট (দুঃখিত সে জন্য)।

প্রথম আলো:

আপনি যে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, তাতে চাপ বা বাধ্য করার কথা বলছেন। কিন্তু ৭ জানুয়ারির আগের দুটি নির্বাচনেও আপনারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন।

কাদের: ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে জোট করেছিলাম। সেই নির্বাচন দেশে ও বিদেশে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। তারপরে ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে ওনারা নির্বাচনব্যবস্থা পরিবর্তন করলেন। এমন একটা পরিস্থিতিতে ২০১৪ সালের নির্বাচন আমিসহ দলের ২৭০ জন বর্জন করেছিলাম। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সাহেবও ওই নির্বাচনে যেতে চাননি।

এরশাদ সাহেব একতরফা নির্বাচনে না যেতে আমাদের সবাইকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা প্রত্যাহার করলাম। ইতিমধ্যে ওনাকে আটক করে হাসপাতালে নেওয়া হলো। আমি তখন ওনাকে দেখতে গেলাম। কিন্তু এরশাদ সাহেব বললেন, ‘আমি অসুস্থ নই, আমাকে জোর করে আনা হয়েছে এবং আমাকে দিয়ে নির্বাচন করানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমি নির্বাচন করব না।’

হাসপাতাল থেকে আমি বাসায় ফিরে সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তখন অনেক লোক এসে পাকিস্তানি দালাল বলে আমার বাসায় হামলা করে। এই পরিস্থিতিতে আমি রুহুল আমীন হাওলাদার সাহেবের বাসায় গিয়ে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিই। তারপরে একটা কোটারি তৈরি করা হলো, তারা নির্বাচনে গেল এবং এরশাদ সাহেবকে নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হলো। পরবর্তী সময়ে এরশাদ সাহেব আমাকে বলেননি কেন তিনি নির্বাচনে গেলেন। পরে শুনেছি, মঞ্জুর হত্যা মামলা ঘিরে ওনাকে ভয় দেখিয়ে নির্বাচনে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভোটের পরে আমাকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। আমি নিইনি।

প্রথম আলো:

কিন্তু বিগত নির্বাচনগুলোতে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতার ভাগাভাগি, লোভ-লালসা ছিল। একই সঙ্গে অর্থ পাওয়ার বিষয় ছিল। এই আলোচনা আছে। কী বলবেন?

কাদের: এটা কিছু লোক হয়তো করতে পারে। সেটা জাতীয় পার্টির একটা অংশ, তারা মূল জাতীয় পার্টি না। জাতীয় পার্টিতে এখন যারা আছে, আমার কী সম্পদ আছে। কোথায় ক্রিম খেয়েছি, কার ক্রিম খেয়েছি। এখনো পার্টি চালাতে আমাদের খুব কষ্ট হয়।

প্রথম আলো:

আপনি বলেছেন, জাতীয় পার্টিকে ব্ল্যাকমেল করতে পেরেছে। তাহলে এ রকম একটি দলের প্রয়োজনীয়তা কী?

কাদের: ব্ল্যাকমেল তো সব দলকেই করার চেষ্টা করা হয়েছিল। অনেকের ক্ষেত্রে সম্ভব হয়েছে। আবার অনেক দলের নেতা বাইরে থাকত, তাই ওদের কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারেনি। এই ধরনের একটা দানবীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমাদের বলা হয়, আমরা নাকি আওয়ামী লীগকে দানব বানাতে সহায়তা করেছি। দানব সৃষ্টি আমরা করিনি; বরং আওয়ামী লীগ দানব হয়ে আমাদের ভক্ষণ করেছে।

জি এম কাদের
ছবি: সাজিদ হোসেন
প্রথম আলো:

তাহলে দানব সৃষ্টি কারা করেছে?

কাদের: দানব সৃষ্টি করেছে আমাদের দেশের শাসনব্যবস্থা, সংবিধান। সংবিধান হলো এই দেশের শাসকদের দানব সৃষ্টির সবচেয়ে বড় ইনস্ট্রুমেন্ট (উপায়)। কারণ, সংবিধানের সর্বময় ক্ষমতা একজনের হাতে।

প্রথম আলো:

এখন কেউ কেউ সংবিধান সংশোধন, কেউ সংবিধান পুনর্লিখনের কথা বলছেন। আপনি কী চান?

কাদের: আমি সংবিধানের সংশোধন চাই। কারণ, এই সংবিধান যদি থাকে, আবার একই দানব, একই ফ্যাসিজম তৈরি হবে।

প্রথম আলো:

রওশন এরশাদকে দিয়ে জাতীয় পার্টিকে বিভক্তির মধ্যে রাখা হয়েছিল। শেখ হাসিনার সমর্থন ছিল তাঁর প্রতি। এখন সেটি কোন পর্যায়ে আছে?

কাদের: এখন রওশন এরশাদ বলে আর কিছু নেই, তাঁর দলও নেই।

প্রথম আলো:

এত দিন আপনারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন, এখন কোন দিকে যাবেন?

কাদের: না...কোনো সময়েই জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল না। যতক্ষণ জোর করে নেওয়া হয়েছে, তখন পার্টি বাঁচানোর জন্য এবং জনগণের স্বার্থে কাজ করার সুযোগ থাকার জায়গার জন্য আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে বাধ্য হয়েছি।

আমরা সব সময় জনগণের সঙ্গে ছিলাম। ২০১৪ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মেজর (বড়) অংশ যায়নি, বিএনপিও যায়নি। পরে কিন্তু বিএনপি স্থানীয় সরকার নির্বাচন করেছে। তাহলে এই নির্বাচনব্যবস্থা, সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি তারা? ২০১৮ সালে সংসদে ছিল প্রায় চার বছর। ওই সরকারকে মেনে বিএনপি সংসদে ছিল না? জাতীয় পার্টি একাই ছিল? ২০১৮ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত সরকারের বিপক্ষে কোন কথাটা আমরা বলিনি?

প্রথম আলো:

আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী দেখেন?

কাদের: সামনে আওয়ামী লীগের একটা বড় সমস্যা আমি দেখি, যেটা শেখ হাসিনা তৈরি করেছেন। সেটা হলো, ওনার পরবর্তীতে কে দলের নেতৃত্ব দেবেন, সেটা ঠিক করে রাখেননি। এখনো ঠিক করে দিচ্ছেন না। আওয়ামী লীগ যত বড় সংগঠন হোক, নেতৃত্ব এবং সেই নেতৃত্বের প্রতি সবার আস্থা না আসা পর্যন্ত এই দলের ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো সম্ভাবনা নেই।

আর উনি (শেখ হাসিনা) যে অবস্থানে চলে গেছেন, আমার ব্যক্তিগত অভিমত, ওনার পক্ষে নেতৃত্ব দিয়ে দল সংগঠিত করা অসম্ভব। উনি যদি দেশে থেকে এটা করতেন, তাহলে হয়তো পারতেন। ওনার প্রতি সাধারণ মানুষের একটা অনাস্থা এসে গেছে।

আগামী দিনের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের ভোটার থাকবে, কিন্তু সংগঠন হিসেবে খুব একটা ভূমিকা রাখতে পারবে বলে মনে করি না।

প্রথম আলো:

নতুন রাজনৈতিক দল হওয়ার কথা আসছে। কীভাবে দেখেন?

কাদের: নতুন দলের ব্যাপারে আমার ব্যক্তিগত কথা হলো, তারা করতে চাচ্ছে ভালো। তারা সফল হোক, এটাও আমি চাই। তবে নতুন দলের ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ আছে।

প্রথম আলো:

সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

কাদের: আপনাকেও ধন্যবাদ।