একদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে এনেছে। অন্যদিকে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেওয়ার দাবি করছেন শিক্ষার্থীরা। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে কী মনে হচ্ছে?
জোনায়েদ সাকি: অসাধারণ আত্মত্যাগ ও রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে একটা অভ্যুত্থান হয়েছে। এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশে একটা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার ডাক দিয়েছে। অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে, তার কাজ হচ্ছে, একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক উত্তরণপ্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করতে সহায়তা করা। নতুন বন্দোবস্ত বলি, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তর বলি, সংস্কার বলি, সেটা শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক শক্তিগুলোকেই সেটা করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি কমিশন গঠন করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী ধরনের সংস্কার হতে পারে, সে বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে।
আমরা এখন পর্যন্ত মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার সঠিক পথে আছে। কমিশনগুলো থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেলেই অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করবেন বলে তারা বলেছেন। আমরা আশা করি, নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট সময়সহ সংস্কারের একটা রোডম্যাপ দ্রুত তৈরি হবে।
অন্যদিকে জুলাই অভ্যুত্থানের একটা ঘোষণা নিয়ে কথা উঠেছে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে। অভ্যুত্থানের পরপরই এটা নিয়ে আলাপ শুরু হয়েছিল। সে সময় অভ্যুত্থানের ঘোষণার বিষয়টি বেশি দূর না এগোলেও ডিসেম্বরের শেষে এসে শিক্ষার্থীরা একটা ঘোষণা তৈরির ব্যাপারে নিজেরা উদ্যোগ নেয়। শেষ পর্যন্ত সরকার ঘোষণাপত্র তৈরির দায়িত্ব নিয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের যে প্রেক্ষাপট ও এর মধ্য দিয়ে যে জন–আকাঙ্ক্ষার প্রকাশ ঘটেছে এবং এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য যে দিকনির্দেশনা দিচ্ছে, সেগুলো সুনির্দিষ্টভাবে সন্নিবেশিত হওয়া দরকার। অভ্যুত্থানের সব অংশীজন বা পক্ষের মতামতের ভিত্তিতে ঘোষণা তৈরি হওয়া শ্রেয়।
অভ্যুত্থানের একটা বড় স্পিরিট অন্তর্ভুক্তিমূলকতা, বহুত্ববাদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু আমরা দেখছি, সংখ্যালঘু ও প্রান্তিক স্বরগুলো অনেক ক্ষেত্রেই বাদ পড়ে যাচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারা আক্রান্তও হচ্ছে। অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সঙ্গে এটা কি সাংঘর্ষিক নয়?
জোনায়েদ সাকি: জুলাই অভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা, তার সঙ্গে এগুলো সরাসরি সাংঘর্ষিক। প্রতিটি বড় আন্দোলনের ক্ষেত্রে দুই ধরনের প্রবণতা থাকে। একটা প্রবণতা থাকে গণতান্ত্রিক, অর্থাৎ সবাইকে নিয়ে ইতিবাচক একটা দিকে যাওয়া। অন্যদিকে আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে যার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হয়েছিল, যেসব প্রবণতার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা হয়েছিল, বিপরীত পক্ষ হিসেবে কেউ কেউ সেই চর্চাগুলোকেই সামনে নিয়ে আসে। অভ্যুত্থান একটা গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থার আকাঙ্ক্ষাকে সামনে এনেছে। মানুষ আশা করছে এমন একটা রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা পাবে যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, জীবনচর্চা, লিঙ্গীয় ও রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে প্রত্যেকে নাগরিক হিসেবে বিবেচিত হবে এবং রাষ্ট্র তার নাগরিক অধিকার ও মর্যাদার গ্যারান্টি দেবে।
অন্যদিকে আমরা দেখছি, নানা ধরনের উগ্রতার একটা প্রকাশ ঘটছে। অভ্যুত্থান–পরবর্তী যে রাজনৈতিক বাস্তবতা, সেটাকে কাজে লাগিয়ে একটা গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে। মাজারের ওপর হামলা হচ্ছে। হিন্দু সম্প্রদায়, পাহাড়ের বিভিন্ন জাতিগত সম্প্রদায়ের ওপর হামলা হচ্ছে, নারীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। এ ধরনের বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে, এটা সত্যি। একই সঙ্গে আবার এ ঘটনাগুলোকে সংখ্যায় অনেক দেখিয়ে, অনেক রং চড়িয়ে, সারা দুনিয়ায় প্রচার করা হচ্ছে। এখানে আমরা পতিত ফ্যাস্টিস্টদের ভূমিকা দেখছি; আবার ভারতের মিডিয়ার একাংশ ও তাদের শাসক দলের দিক থেকেও এ প্রচারণা দেখছি।
কিন্তু এ ধরনের হামলায় বিচার ও প্রতিকার হতে দেখি না।
জোনায়েদ সাকি: আমরা বলেছি, আমরা অসত্যের বিরুদ্ধে সত্য নিয়ে লড়াই করতে চাই। সে কারণেই প্রতিটা ঘটনার যথাযথ তদন্ত হওয়া দরকার। যারা এর জন্য দায়ী, তাদেরকে জবাবদিহি ও বিচারের আওতায় আনা দরকার। যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছে, তাদের বিরুদ্ধে একটা ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। রাষ্ট্রকেও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
আগেও আমরা দেখেছি, এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ তদন্ত হয় না, প্রতিকার মেলে না, এমনকি রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জবাবদিহির আওতায় আনা হয় না। সে কারণে আমরা জোরালো দাবি করে আসছি, প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করতে হবে এবং কর্তব্যরত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। এটা করা গেলেই যে মিথ্যা প্রচারণাটা চলছে, সেটাকে আমরা যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারব।
একই সঙ্গে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে উগ্রতার বিরুদ্ধে একটা সামাজিক গণপ্রতিরোধ সৃষ্টি করতে হবে। বাংলাদেশে এ ধরনের উগ্রতার চর্চা সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে অনুমোদিত নয়, সেই বার্তাটি সুস্পষ্টভাবে তাদেরকে দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও আমরা দেখছি নাগরিকের চলাচলে বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।
জোনায়েদ সাকি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা যখন ছাত্র আন্দোলনে ছিলাম, তখনো একটা প্রশ্ন উঠেছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা এক্সক্লুসিভ লুক দেওয়ার। আমরা তখন এর বিরোধিতা করেছিলাম। সম্প্রতি আমরা দেখছি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দিক থেকে বলা হচ্ছে, এখানে এত বেশি বাইরের লোক উপস্থিত হচ্ছে যে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও গণতান্ত্রিক চর্চার সঙ্গে সাধারণ মানুষের যে যোগাযোগ, সেটা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই ঠিক হবে না।
অভ্যুত্থানের পাঁচ মাস পরে এসে একটা বিভাজন, বিভক্তি বেশি করে চোখে পড়ছে। সন্দেহ, অবিশ্বাসও আছে। এখানে করণীয়টা কী?
জোনায়েদ সাকি: রাজনৈতিক পক্ষগুলোর মধ্যে ক্ষমতাকেন্দ্রিক প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবেই। একটা গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমাদের একটা জাতীয় ঐকমত্য দরকার। এর অর্থ হচ্ছে, আমরা এত দিন যে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মধ্যে ছিলাম সেটা একটা স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট বন্দোবস্ত। সেখানে ক্ষমতাসীনেরা বাকি সবাইকে রাজনৈতিক ব্যবস্থার বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিল। আমরা বলছি, একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে, যেটা হবে গণতান্ত্রিক, যেখানে সবাই এই ব্যবস্থার অংশীদার মনে করবে।
এটাকে বলা যেতে পারে রাজনীতি কীভাবে পরিচালিত হবে, ক্ষমতা কীভাবে পরিচালিত হবে, তার একটা নিয়ম ঠিক করা। সবার স্বার্থই এটার সঙ্গে জড়িত। সে কারণে এ ধরনের একটা রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরিতে সবারই একটা ন্যূনতম ঐক্যের মধ্যে থাকা দরকার। কিন্তু এর মানে এই নয় যে রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা বিলীন হয়ে যাবে। দুটোই পাশাপাশি চলতে পারে। বিচ্যুতি অনেক জায়গায় থাকতে পারে। কিন্তু সব রাজনৈতিক পক্ষকে এ বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রাখা দরকার, যাতে পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্মাণের যে কর্তব্য, সেটা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এই পরিবর্তনের জন্য সব পক্ষকে আরও অধিকতর দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে।
সংস্কার করে নির্বাচন নাকি নির্বাচনের পর সংস্কার—এ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। এ অবস্থানকে কীভাবে দেখছেন?
জোনায়েদ সাকি: নির্বাচন ও সংস্কার পরস্পরবিরোধী কোনো ব্যাপার নয়। আমরা বহুবার বলে এসেছি, শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে এমন জায়গায় নিয়ে এসেছিল যে এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। ফলে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে হলেও রাজনৈতিক ব্যবস্থার অনেক পরিবর্তন দরকার, অনেক জায়গায় সংস্কার করতে হবে। আবার পুরো সংস্কারপ্রক্রিয়া শেষ করতে হলে তাহলে আবার নির্বাচন লাগবে। কেননা মৌলিক কাঠামোগত সংস্কার, সংবিধান সংস্কার—এগুলো একটা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদেরই করতে হবে। চূড়ান্ত বিচারে সংসদেই সেটা চূড়ান্ত করতে হবে।
এখানে যাতে কোনো পক্ষ সৃষ্টি না হয়, সেভাবেই এখন সবার ভূমিকা পালন করা দরকার। অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দলগুলোর অধিকতর আলাপ-আলোচনাই পারে এ ধরনের পক্ষ-প্রতিপক্ষ তৈরি করার পথটা বন্ধ করতে। আলাপ-আলোচনা হলে নির্বাচনের আগেই কোন ধরনের সংস্কারগুলো দরকার, সেটা সুনির্দিষ্ট করা যাবে। আবার কোন সংস্কারগুলো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা করবেন, সেটাও সুনির্দিষ্ট করা যাবে।
আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছিলাম, জাতীয় রাজনৈতিক কাউন্সিল গঠন করার জন্য। এ কাউন্সিলে শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার অংশীজন থাকবে এবং সরকার নিয়মিত বিরতিতে দৈনন্দিন রাষ্ট্র পরিচালনা ও রাজনৈতিক উত্তরণের এই বিষয়গুলো নিয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করবে। তাতে দূরত্বটা কম হতো।
নির্বাচন ও সংস্কার প্রশ্নে আপনার অবস্থান কী?
জোনায়েদ সাকি: আমরা মনে করি, নির্বাচন সুষ্ঠু হতে গেলে নির্বাচনের আগে অনেকগুলো সংস্কার করা দরকার। যেসব মৌলিক সংস্কার সংসদে জনপ্রতিনিধিদের দ্বারা করতে হবে, সে ক্ষেত্রেও আমাদের ন্যূনতম ঐকমত্য কোন জায়গায় হচ্ছে এবং আগামী নির্বাচিত সংসদ যাতে সেগুলো করে, তার জন্য একটা আইনি বাধ্যবাধকতা কীভাবে তৈরি করা যায়, সে বিষয়ে একটা ঐকমত্য দরকার।
প্রশ্ন হচ্ছে, আগামী নির্বাচনটা কী হবে? সংবিধান সংশোধনের প্রশ্নটা কি সংশোধনী হিসেবে থাকবে, নাকি জনগণের সম্মতির ভিত্তিতে সেটা হবে। এ বিবেচনায় আমরা মনে করি, আগামী নির্বাচনটা গণপরিষদ, নিদেনপক্ষে সংস্কার সভার নির্বাচন হলে, জনগণের সম্মতির ভিত্তিতেই কিন্তু সংবিধানের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ঘটিয়ে, আমরা একটা গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করতে পারি। এ জায়গায় কীভাবে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা যায়, সেই উদ্যোগ আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ায় ছাত্রদের দল নিয়ে জনমনে যেমন আগ্রহ আছে, কৌতূহল আছে, আবার দল গোছানোর প্রক্রিয়া নিয়েও সমালোচনা ও প্রশ্ন আছে। নতুন রাজনৈতিক দল গঠনকে কীভাবে দেখছেন?
জোনায়েদ সাকি: অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে নতুন রাজনৈতিক দল গড়ে ওঠাটাও স্বাভাবিক। এ ধরনের রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটলে সেটাকে আমরা স্বাগত জানাই। বাংলাদেশের ইতিহাসে আমরা দেখেছি, ক্ষমতায় থেকে রাজনৈতিক দল গঠন করলে মানুষ সেটাকে ইতিবাচকভাবে নেয় না। ফলে যারা নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে চাইবে, তাদেরকে এ বিষয়টাতে সচেতন থাকতে হবে। ক্ষমতার সুবিধা না নিয়ে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, জনগণের ভেতর থেকে যাতে রাজনৈতিক দলের জন্ম নেয়, সেদিকে খেয়াল রাখা দরকার। সেটাই আমাদের পুরো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াটাকেও সামনে এগোতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে গণসংহতি আন্দোলন তার ভূমিকাকে কীভাবে দেখতে চায়?
জোনায়েদ সাকি: এই অভ্যুত্থান বাংলাদেশের সামনে অসাধারণ অগ্রগতির সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, পুরো দক্ষিণ বিশ্বে বাংলাদেশ একটা নেতৃস্থানীয় দেশ হতে পারে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে গেলে একটা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রাথমিক শর্ত। সে জন্য সমাজে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর একটা শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করি, প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যারা অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিল, অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে তারা নিজেদেরকে বদলে নেবে। নবীন রাজনৈতিক শক্তিগুলো তারাও অধিকতর শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
আমরা মনে করি, একটা শক্তিশালী অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ দেশের মানুষের যে ভবিষ্যৎ ও স্বপ্ন, সেটা বাস্তবায়ন করতে পারব। বাংলাদেশে যাতে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, সেই লক্ষ্যেই সংগ্রাম করছে গণসংহতি আন্দোলন।
প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।
জোনায়েদ সাকি : আপনাকেও ধন্যবাদ।