২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

সংস্কারহীন ১৪ বছর

১৪ বছর ধরে একটি সড়ক সংস্কার হচ্ছে না। ভাবা যায়! কিন্তু তা-ই ঘটেছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার কুশিয়ারা-নগরপাড়-আটিয়াখোলা সড়কের ক্ষেত্রে। স্থানীয় প্রশাসন বা সড়ক সংস্কারের দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষ কারোরই মনে হয়নি সড়কটি সংস্কার করা দরকার। সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়া এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে উপজেলার প্রায় চার হাজার মানুষকে প্রতিদিন যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

মঙ্গলবার প্রথম আলোয় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, দাউকান্দি উপজেলার চার কিলোমিটার দীর্ঘ কুশিয়ারা-নগরপাড়-আটিয়াখোলা সড়কটির দেড় কিলোমিটার সংস্কার করা হয় ২০০৪-০৫ অর্থবছরে। এরপর আর কোনো সংস্কার হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে পিচ উঠে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য গর্তের। পাকা সড়কের কোনো চিহ্ন এখন আর নেই। ফলে এই সড়কে যানবাহন চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। পিকআপ, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ভ্যানগাড়ি, রিকশা চলাচল করতে গিয়ে গর্তে আটকে প্রায়ই যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটছে। গর্তে ভরা সড়ক দিয়ে কম গতিতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে গিয়ে গ্যাসের অতিরিক্ত অপচয় হয়। ফলে অটোরিকশার ভাড়াও এখন অনেক বেশ। সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা উল্টে যাত্রী ও চালকেরা আহত হচ্ছেন।

সন্ধ্যার পর এই সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাতে এলাকার কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিতে সমস্যায় পড়তে হয়। প্রসূতি নারীদের হাসপাতালে নিতে চরম যন্ত্রণা পোহাতে হয়। পিকআপ ও অটোরিকশার চালকেরা মাঝেমধ্যে নিজেদের টাকায় ইট-বালু ফেলে অস্থায়ী সংস্কারের মাধ্যমে সড়কে যানবাহন চলাচল চালু রাখার চেষ্টা করেন। কিন্তু ঢালাইয়ের অভাবে তাঁদের সংস্কার টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

একটি সড়ক সংস্কার হচ্ছে না ১৪ বছর ধরে। এটা কি কোনো যুক্তিতে গ্রহণযোগ্য? এটা তো সুস্পষ্ট গাফিলতি। কোনো সড়ক সংস্কারের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাদের উদ্যোগ থাকলে একটি রাস্তা এত দিন সংস্কারবিহীন থাকার কথা নয়। সড়কটির দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) দাউদকান্দি উপজেলা কার্যালয়ের। আমরা চাই তারা খুব দ্রুত সড়কটির সংস্কারের ব্যাপারে উদ্যোগী হবে।

তবে শুধু দাউদকান্দির এ সড়কই নয়, দেশের বহু স্থানে বহু সড়ক সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে আছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সেগুলো ঠিক করার উদ্যোগ নেই। এ রকম তো দীর্ঘদিন ধরে চলতে পারে না। মূল সমস্যা হচ্ছে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের জবাবদিহি ও শাস্তির ব্যবস্থা না থাকা। কর্তব্যে অবহেলার জন্য যদি তারা শাস্তি পেত, তাহলে দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো এমন বেহাল হতো না। সরকারকে এখন এদিকে নজর দিতে হবে। সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।