২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

খাগড়াছড়ি কলেজের প্রতি এ অবহেলা কেন

সম্পাদকীয়

সব খাতেই অবকাঠামোমূলক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, অনেক সময় ভবন নির্মাণের পর সেগুলো বছরের পর বছর ধরে পড়ে থাকে। নানা চেষ্টা–তদবিরের পরও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বা অবহেলার কারণে সেগুলো চালু হয় না। কোনো ভবন নির্মাণের পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয় না, আবার কোনো ভবন বুঝিয়ে দেওয়ার পরও সেটি চালু হয় না।

এসব প্রকল্পের পেছনে কোটি কোটি টাকা খরচ হয়, কিন্তু চালু না হওয়ার কারণে ভবনগুলো জীর্ণ হতে থাকে, ভেতরের আসবাবসহ অন্যান্য সরঞ্জামও নষ্ট হতে থাকে। যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে নির্মিত ১০০ আসনের ছাত্রীনিবাসটির ক্ষেত্রে।

২০২০ সালের দিকে নির্মাণকাজ শেষে এটি কলেজ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়েও দেওয়া হয়েছে। ছাত্রীনিবাসটি চালুর জন্য আসবাবসহ পুরোপুরি প্রস্তুত। কিন্তু মাত্র কয়েকজন জনবলের অভাবে এত দিন ধরে সেটি পড়ে আছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম সরকারি কলেজটিতে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ছয় হাজার। এর মধ্যে ছাত্রী তিন হাজারের মতো। জেলার ৯ উপজেলার পাশাপাশি রাঙামাটির লংগদু, নানিয়ারচর ও বাঘাইছড়ি উপজেলার দুর্গম এলাকা থেকেও শিক্ষার্থীরা এ কলেজে পড়াশোনা করতে আসেন।

ছাত্রীদের ভোগান্তির কথা চিন্তা করে ১০০ আসনের ছাত্রীনিবাসটি তৈরি করা হয়। কক্ষে কক্ষে খাট, টেবিলসহ নানা আসবাব, ডাইনিংসহ সবই প্রস্তুত। কিন্তু জনবল না থাকায় এটি চালু করা যাচ্ছে না। ফলে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে এসে ছাত্রীদের ক্লাস করতে হচ্ছে। কেউ কেউ বাড়তি টাকা খরচ করে থাকছেন মেসে। এত বিশাল হোস্টেল থাকতে ছাত্রীদের এমন দুর্ভোগ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, ছাত্রীনিবাসটি চালু করতে মাত্র ছয়জন জনবল প্রয়োজন। এ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে কয়েকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসককে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে এবং মৌখিকভাবে একাধিকবার বলা হয়েছে। এরপরও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। এত ধরনা দেওয়ার পরও ছাত্রীনিবাসটি চালু না হওয়াটা হতাশাজনক।

খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ শিক্ষকসংকটেও ভুগছে। ৪৬টি শিক্ষকের পদ থাকলেও অর্ধেকের বেশি পদই খালি। শিক্ষকসংকটে শ্রেণি কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য আর কোনো ছাত্রাবাস বা ছাত্রীনিবাস নেই।

এখানে কি প্রতিষ্ঠানটির প্রতি স্পষ্ট অবহেলা প্রকাশ পাচ্ছে না? আমরা আশা করব, দ্রুততম সময়ের মধ্যে ছাত্রীনিবাসটি চালু করা হবে এবং কলেজটিতে শিক্ষকসংকট দূর করাসহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান করা হবে।