সচেতনতা বাড়ানো জরুরি

দেশজুড়ে এখন কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। দেশের পূবাঞ্চলে বড় বন্যা দেখা দিয়েছে। সেখানে টানা ভারী বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ অনেক জায়গায় হয়েছে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। ফলে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর আতঙ্ক। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মৃত্যুও হচ্ছে। এখন ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক ও সচেতন হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার, স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ, স্থানীয় প্রশাসন, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও সিটি করপোরেশান সবাইকে তৎপর হতে হবে।   

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, চলতি মাসে এডিস মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার ও বুধবার মারা গেছেন দুজন। বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেদিন সকাল আটটা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে ২৯৬ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২৮৬ জন। 

সবচেয়ে বেশি—৯৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে। অপর দিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ৭২ জন, উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ৪২, খুলনার বিভিন্ন হাসপাতালে ২৯, বরিশালের হাসপাতালে ২৮, ময়মনসিংহের হাসপাতালে ৭ জন এবং রাজশাহী ও রংপুরের হাসপাতালে ৬ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।

গত জানুয়ারি থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ হাজার ৩৬১ জন। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৬১ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ ও ৩৮ দশমিক ৮ শতাংশ নারী। চলতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ নারী ও ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ পুরুষ। এ সময় ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি—৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে।

করোনা মহামারির আগে ডেঙ্গুর ভয়াবহতার বিষয়টি আমাদের কারও অজানা নয়। করোনার পরও এর ভয়াবহতা আমরা দেখতে পাই। প্রতিবছর মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে বাড়তে গত বছর ডেঙ্গুর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যায়। ২০২৩ সালে সহস্রাধিক মানুষ ডেঙ্গুতে মারা যান। 

দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সব পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অপসারণ করা মেয়র ও চেয়ারম্যানদের জায়গায় সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করব, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসকেরা নিজ নিজ শহরে ডেঙ্গুর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খেয়াল রাখবেন। জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সতর্ক থাকবেন।