২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

যাত্রীভোগান্তি অবিলম্বে দূর করুন

সম্পাদকীয়

মনপুরা—এ দেশের মানুষের জন্য পরিচিত নাম। শীতের মৌসুমে অনেকেই সেখানে ঘুরতে যান। তবে সেখানকার মানুষের নানা ভোগান্তির কথা অনালোচিতই থেকে যায়। ভোলার এই উপজেলায় সবচেয়ে বড় কষ্ট হচ্ছে যাতায়াতের। লঞ্চ-ট্রলার ছাড়া মনপুরার মানুষেরা কোথাও যেতে পারে না। আরও দুঃখজনক হচ্ছে, লঞ্চঘাটে নেই কোনো পন্টুন বা জেটি। ভাটার সময় কাদাপানি মাড়িয়ে লঞ্চে উঠতে–নামতে হয় আর জোয়ারের সময় ভরসা থাকে গাছ বা কাঠের সিঁড়ি। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছেই।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মনপুরায় দুটি লঞ্চঘাট রয়েছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষই (বিআইডব্লিউটিএ) সেগুলো পরিচালনা করে। রামনেওয়াজ ঘাট থেকে ঢাকা-হাতিয়ার উদ্দেশে লঞ্চ ছাড়ে। আর হাজিরহাট ঘাট থেকে তজুমদ্দিন উপজেলার উদ্দেশে লঞ্চ-সি–ট্রাক ছাড়ে। তবে দুটি ঘাটেই কোনো পন্টুন বা জেটি নেই। হাজিরহাট স্টেশনটি ভাঙতে ভাঙতে সর্বশেষ চলতি বছরের বর্ষাকালে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

ঘাটটির অবস্থা এতই করুণ, মালামাল-আসবাব নিয়ে অনেক সময় কাদামাটিতে আছড়ে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। ঘাটে এসে রোদে পুড়তে ও বৃষ্টিতে ভিজতেও হচ্ছে। আর রামনেওয়াজ লঞ্চঘাটটি ভাঙনের কারণে বারবার স্থানান্তরিত হয়েছে। সর্বশেষ নতুন একটি বড় পন্টুন স্থাপন করা হয়েছে। তবে সংযোগ সড়ক নির্মাণ ও পন্টুন চালুর কাজ চলছে ধীরগতিতে। বিআইডব্লিউটিএর কারণেই কাজটি ঝুলে পড়েছে বলা যায়।

বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনও স্বীকার করেছে। মনপুরা উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা তজুমদ্দিন উপজেলার ইউএনও মরিয়ম বেগম বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ ধীরতালে কাজ করছে—এটা সত্য। বিষয়টি মাসিক উন্নয়ন সভায় উত্থাপন করা হয়েছে।’ এমনকি উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিও মনপুরায় পন্টুন বা জেটি নির্মাণকাজে বারবার তাগাদা দিয়েছেন। তাতেও কাজ হয়নি।

বিআইডব্লিউটিএর বক্তব্য হচ্ছে রামনেওয়াজ ঘাট বরাবর বিআইডব্লিউটিএ পন্টুন স্থাপন করেছে। কিন্তু পন্টুনের সংযোগ সড়ক স্থাপনের জমি বরাদ্দ নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এ কারণে ঘাট নির্মাণে দেরি হয়।

জমির সমস্যা দূর হলেও প্রকৌশল বিভাগ ঘাট নির্মাণে দেরি করেছে। স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের বক্তব্যে স্পষ্ট, মনপুরার লঞ্চঘাটে যাত্রী দুর্ভোগ নিরসনে বিআইডব্লিউটিএর আন্তরিকতার ঘাটতি আছে।

জমির সমস্যা অনেক আগে দূর হলেও সড়ক নির্মাণ ও পন্টুন নির্মাণে কেন এত দেরি, তা আমরা জানতে চাই। প্রকৌশল বিভাগকে দোষারোপ করে দায় এড়ানোরও সুযোগ নেই। মনপুরার যাত্রীদের ভোগান্তি অবিলম্বে দূর করা হোক।