স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

সম্পাদকীয়

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দখলের যেসব খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কোনো কারণ নেই। হাটবাজার, জলমহাল, রাজনৈতিক নেতা–কর্মী, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জমি থেকে শুরু করে পরিবহন সমিতিগুলো দখলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার পেছনে বিএনপির স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের নাম আসছে।

এরই ধারাবাহিকতায় চাঁদপুরের মতলব উত্তরে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মো. শাহজালাল প্রধানের বিরুদ্ধে রেড ক্রিসেন্টের সাত শতক জায়গা দখল করে সেখানে দোকান নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। জায়গাটি দখলের সময় বাধা দিলে শাহজালাল ও তাঁর লোকেরা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্থানীয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সলিম উল্লাহ বারী চৌধুরীকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান ও হুমকি দেন।

প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, ওই সাত শতক জায়গা সলিম উল্লাহর পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। অনেক আগে তাঁর বাবা রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির নামে ওই জায়গা লিখে দেন। সলিম উল্লাহ যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ৭ আগস্ট লোকজন নিয়ে তিনি ওই জায়গা দখল করেন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি কেন্দ্রীয় পর্ষদের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এস এম হুমায়ূন কবির ১৪ আগস্ট উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রেড ক্রিসেন্টের জমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করছেন, ১৫ বছর আগে তিনি জমিটি ইজারা নিয়েছিলেন। অথচ তিনি বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাঁর কার্যালয়ের একজন সার্ভেয়ার নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে এবং কাগজপত্র ঘেঁটে দেখতে পেয়েছেন, জায়গাটি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির।

উপজেলা প্রশাসন জায়গার মালিককে জায়গাটি বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। আমরা আশা করব, প্রশাসন এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির স্থানীয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশে একটা ক্রান্তিকাল চলছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছায়নি। এ পরিস্থিতিতে এ ধরনের দখল ঠেকাতে রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা জরুরি। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন। রেড ক্রিসেন্টের জমি দখলে নেওয়া স্বেচ্ছাসেবক নেতার বিরুদ্ধে বিএনপি কী ব্যবস্থা নেয়, সেটাই এখন দেখার ব্যাপার।