ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু আর কত দিন অন্ধকারে থাকবে

সম্পাদকীয়

দেশি-বিদেশি অর্থায়ন বা ঋণে তৈরি হয় সেতু ও সড়ক। অনেক জায়গায় তোলা হয় টোল। সেই টোলের টাকায় ঋণ যেমন পরিশোধ হয়, রক্ষণাবেক্ষণেও তা খরচ হয়। কিন্তু খেয়াল করলে দেখা যাবে, টোল আদায় করা হয় এমন অনেক সেতু ঠিকঠাক রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কার করা হয় না।

টোল দিয়েও সাধারণ মানুষ সঠিক সেবা পান না। তাহলে এই টোলের টাকা আদায়ের নৈতিক ভিত্তি কী? এমন প্রশ্নই দেখা দিয়েছে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুকে ঘিরে। প্রতি মাসে ৩০ লাখ টাকা টোল আদায় হলেও পাঁচ বছর ধরে সেতুটিতে রাতে বাতি জ্বলে না। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চালকেরা সেতুটি ব্যবহার করছেন। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, মৌলভীবাজারে যাতায়াতের পথ সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে এ সেতুর অবস্থান। ফেঞ্চুগঞ্জ, কুলাউড়া, রাজনগরসহ আশপাশ এলাকার মানুষও এ সেতুর সুবিধাভোগী। কিন্তু সেতুটিতে সন্ধ্যা হলেই অন্ধকার নেমে আসে। জ্বলে না কোনো বাতি।

সেতুতে ৩১টি ল্যাম্পপোস্ট থাকলেও কোনোটিই আলো দিচ্ছে না। এর মধ্যে সেতুটিতে পাঁচটি ল্যাম্পপোস্টের অর্ধেকের বেশি অংশ নেই। কেউ খুলে নিয়ে গেছে বা ভেঙে গেছে। বাকি ল্যাম্পপোস্টগুলোর বাতির অংশ ভাঙা। সেতুর দুই পাশে দোকানপাট ও টোল প্লাজা সবই আলোকিত, শুধু সেতুটিরই এমন হাল।

সেতু দিয়ে পারাপার করা যাত্রীরা অনিরাপদ বোধ করেন। চালকেরাও ভয়ে ভয়ে সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। কুশিয়ারা নদীর ওপর এ সেতু নির্মাণ করে সিলেট সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর। সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছিল ২৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এখন সেতুটির টোল আদায় হয় মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা। এত টাকা টোল আদায় হওয়া সত্ত্বেও সেতুটির বাতিগুলোতে কেন আলো জ্বলে না, তা নিয়ে স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

আরও অবাক করার বিষয় হচ্ছে, সেতুর ল্যাম্পপোস্টগুলোর দায়িত্ব কার, সেটিই জানে না সওজ। ওই এলাকা কোনো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার মধ্যে পড়েনি। ফেঞ্চুগঞ্জেও কোনো পৌরসভা নেই।

তাই বলে কি সেতুর ল্যাম্পপোস্টগুলোর দায়িত্ব কেউ নেবে না? সিটি করপোরেশন বা পৌরসভার বাইরে দেশের অন্যান্য এলাকার সেতুগুলো তাহলে কীভাবে রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে? সওজ টোলের টাকা আদায় করতে পারলে সেতুর ল্যাম্পপোস্টগুলো কেন ঠিক করতে পারবে না? আমরা এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।