সিলেটের সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুর উপজেলার চার বিল লাল শাপলার জন্য বিখ্যাত। সাত বছর ধরে বিলগুলোতে লাল শাপলার চোখজুড়ানো সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসেন অনেকেই। দেশের বাইরেও এ শাপলা বিলের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক সময় বিদেশি পর্যটকেরও দেখা মেলে এখানে। সিলেটের অপেক্ষাকৃত নতুন পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে দারুণ সম্ভাবনা তৈরি করেছে বিলটি। তবে এর মধ্যে প্রভাবশালী কিছু লোকের নজর পড়েছে সেখানে। শাপলা বিলের একাংশে দখলবাজি শুরু করেছেন তাঁরা। এতে শাপলার বিল ধ্বংস হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, সীমান্তঘেঁষা উপজেলার ডিবি বিল, কেন্দ্রী বিল, হরফকাটা ও ইয়াম বিলে প্রতিবছর শীতের শুরু থেকে লাল শাপলা ফোটে। তবে এবার প্রায় ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে হরফকাটা ও কেন্দ্রী বিলের বিভিন্ন অংশ দখল করে চাষাবাদ করছেন স্থানীয় কিছু ব্যক্তি, যাঁদের সঙ্গে যুক্ত আছেন কয়েকজন প্রভাবশালীও। কেন্দ্রী বিলের প্রায় ১০ একর জায়গায় ধান রোপণ করেছেন তাঁরা। হরফকাটা বিলের মধ্যবর্তী অংশ দখল করে ধান রোপণ অব্যাহত রয়েছে। এভাবে আবাদ অব্যাহত থাকলে ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে লাল শাপলা হারিয়ে যাবে। লাল শাপলা বিলুপ্ত হলে শীতের মৌসুমে উপজেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্রটি ঘুরতে এসে অনেককেই ফিরে যেতে হবে।
স্থানীয় সুধীজনেরা বলছেন, বিলের লাল শাপলার কারণে জৈন্তাপুর উপজেলার পরিচিতি বিশ্ববাসীর কাছে নতুন করে স্থান পেয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চরম উদাসীনতার কারণে লাল শাপলা বিলুপ্ত করা হচ্ছে। তাঁরা অবৈধ দখলের হাত থেকে চারটি বিল রক্ষার জন্য প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমদ বলেন, লাল শাপলা বিল দখলের ব্যাপারে উপজেলা পর্যটন কমিটিকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে।
লাল শাপলা ধ্বংস করে চাষাবাদের বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি বলেন, বিলের কোনো অংশে ব্যক্তিগত জায়গা রয়েছে কি না, সেটিও জানার বিষয় রয়েছে। তদন্ত করে এ নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রথম আলোর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বিলগুলো সরকারি খাসজমির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আগে বিলগুলো লিজ দেওয়া হতো। তবে শাপলা ফোটার পর লিজ দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। চাষাবাদের সঙ্গে স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত রয়েছে। আমরা চাই না সেখানে কোনো ধরনের ব্যাঘাত ঘটুক। তবে এতে শাপলা বিল অক্ষুণ্ন রাখার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হোক। সেখানে কোনো ধরনের দখলবাজি কাম্য নয়।