এইচএসসিতে বিতর্কিত প্রশ্ন: সৃজনশীলতার এ কেমন নমুনা!

উচ্চমাধ্যমিক বা এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রে ঢাকা বোর্ডের প্রশ্নপত্রে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্নপত্রের বিতর্কিত সেই অংশটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সচেতন সমাজ এ নিয়ে নিন্দা প্রকাশ করেছে। প্রশ্নটি ভালোভাবে পড়ার পর যেটা বুঝলাম, সেটা হলো, যিনি বা যাঁরা এ ধরনের অনাচার করেছেন বা করার সুযোগ পেয়েছেন, তার মূলে রয়েছে আমাদের দেশের তথাকথিত সৃজনশীল পরীক্ষাপদ্ধতি। যে প্রশ্নকে সৃজনশীল বলা হচ্ছে, সে তো বিন্দুবিসর্গও সৃজনশীল নয়, বরং মুখস্থবিদ্যা কিংবা পুঁথিগত জ্ঞানকে পরীক্ষার খাতায় উগরে দেওয়ার নামান্তরমাত্র।

আলোচ্য প্রশ্নের বিভিন্ন অংশে যে চারটি প্রশ্ন করা হয়েছে, সেগুলো হলো:
(ক) মিরজাফর কোন দেশ হতে ভারতে আসেন।
(খ) “ঘরের লোক অবিশ্বাসী হলে বাইরের লোকের পক্ষে সবই সম্ভব।”—ব্যাখ্যা কর।
(গ) উদ্দীপকের ‘নেপাল’ চরিত্রের সঙ্গে ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটকে ‘মিরজাফর’ চরিত্রের তুলনা কর।
(ঘ) ‘খাল কেটে কুমির আনা।’ প্রবাদটি উদ্দীপক ও ‘সিরাজউদ্দৌলা’ নাটক উভয়ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।”—উক্তিটির সার্থকতা নিরূপণ কর।

প্রথমত, ওপরের চারটি প্রশ্নে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে যতিচিহ্নের ভুল ব্যবহার। যেমন (ক) নং প্রশ্নে প্রশ্নবোধক চিহ্নের ব্যবহার হবে, সেটা না দিয়ে দাঁড়ি দেওয়া হয়েছে। (ঘ) নং প্রশ্নে ‘খাল কেটে কুমির আনা’ একটি প্রবাদ, যা একটি অসম্পূর্ণ বাক্য, কিন্তু তার শেষে দাঁড়ি দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, (ঘ) নং প্রশ্নে উদ্ধৃতি শেষে উদ্ধৃতি চিহ্ন দেওয়া হলেও শুরুতে দেওয়া হয়নি। বস্তুত, উদ্ধৃতি চিহ্ন সাধারণত অন্যের উদ্ধৃতি হুবহু ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় এবং এ ক্ষেত্রে কার উদ্ধৃতি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটার রেফারেন্স দেওয়া বাঞ্ছনীয়। ‘“খাল কেটে কুমির আনা।” প্রবাদটি উদ্দীপক ও “সিরাজউদ্দৌলা” নাটক—উভয় ক্ষেত্রেই সমানভাবে প্রযোজ্য।’ বাক্যটি প্রশ্নকর্তার নিজের। তাই এখানে উদ্ধৃতি চিহ্নের ব্যবহার বাহুল্য দোষে দুষ্ট।

যতিচিহ্নের ভুল ব্যবহারের চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, এই চারটি প্রশ্নের কোনোটিই সৃজনশীল প্রশ্ন নয়। এর মধ্যে কী সৃজনশীলতা আছে, সেটি আমার বোধগম্য নয়। আমার সঙ্গে অনেকেই নিশ্চয়ই একমত হবেন। একই নাটক ভালো করে মুখস্থ করে গৎবাঁধা কিছু নোট মুখস্থ করে গরুর জায়গায় কেবল ভেড়া বসিয়ে দিয়ে উত্তর লেখার এক মহান কৌশল এটি। সেটিও অবশ্য কম সৃজনশীল নয়! মিরজাফর কোন দেশ থেকে ভারতে আসেন, সেটা জানার জন্য স্মৃতিশক্তি দরকার, সৃজনশীলতা নয়। তা ছাড়া বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তরের মাধ্যমেও সৃজনশীলতা প্রদর্শন করা সম্ভব নয়।

২০১০ সালে দেশে বাংলা প্রথম পত্র ও ধর্মশিক্ষা বিষয়ে এবং ২০১১ সাল থেকে সব বিষয়ে সৃজনশীল পদ্ধতিতে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সৃজনশীল প্রশ্নপদ্ধতির অন্যতম সংগঠক শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মতে, ‘যেসব প্রশ্নের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মেধার জড়ত্ব থেকে মুক্তি দিয়ে স্বাধীন, স্বতঃস্ফূর্ত ও সৃষ্টিক্ষম করে তোলা যায়, তার নামই সৃজনশীল প্রশ্ন। এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে হলে পাঠ্যবইয়ে লেখা তথ্য ও ভাবনাগুলো শুধু চিন্তাহীনভাবে মুখস্থ করলে চলবে না, সেগুলো ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং চারপাশের জীবন ও বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে দৈনন্দিন জীবনে তার প্রয়োগ করতেও শিখতে হবে। এ জন্য প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্নকে ভাগ করা হয় চারটি অংশে (প্রথম আলো অনলাইন, ৩১ আগস্ট, ২০১৪)।’ তিনি আরও মনে করেন, ‘প্রশ্নের চতুর্থ অংশে যাচাই করে দেখা হয়, ওই অংশের সঙ্গে সম্পর্কিত পাঠ্যবইয়ের জায়গাটুকু ও উদ্দীপকের ভেতরকার ভাবনাচিন্তা, অনুভূতি-কল্পনাশক্তি, গভীরতা-ব্যাপকতা ইত্যাদিকে ছাত্রছাত্রীরা তুলনা করে বুঝতে পারছে কি না; এদের সাদৃশ্য-বৈসাদৃশ্য, উচিত-অনুচিত, ভালো-মন্দ ইত্যাদি বিচার-বিবেচনা করে তার নিজস্ব মতামত গড়ে তুলতে পারছে কি না।’ এই চারটি অংশের মধ্যে প্রথম (জ্ঞানমূলক) এবং দ্বিতীয় (অনুধাবনমূলক) অংশটি পাঠ্যপুস্তক থেকে নেওয়া হয়। তৃতীয় অংশ (প্রয়োগমূলক) অংশে ‘উদ্দীপক’ নামক একটি ছোট গদ্যাংশ বা পদ্যাংশ অথবা ছবি, চার্ট, গ্রাফ ইত্যাদি যোগ করা হয়, যার উদ্দেশ্য থাকে উদ্দীপকের অংশ থেকে প্রশ্নের সঠিক প্রয়োগ। চতুর্থ অংশের উদ্দেশ্য পাঠ্যবই এবং উদ্দীপকের ভেতরের অংশের তুলনা করা।

এই সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তনের উদ্দেশ্য মহৎ হলেও কার্যত এর ফলাফল হয়েছে বিপরীত। শিক্ষার্থী সেই গৎবাঁধা মুখস্থবিদ্যা থেকে বের হতে তো পারেইনি বরং উপরি পাওনা হিসেবে যোগ হয়েছে পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু সঠিকভাবে অনুধাবন না করার মানসিকতা। ফলে জিপিএ–৫–এর বন্যা বয়ে গেলেও শিক্ষা অর্জনের মূল্য উদ্দেশ্যই ব্যাহত থেকে যাচ্ছে। এর মূল কারণ হলো বিনা প্রস্তুতিতে বা যথাযথ প্রস্তুতিহীনভাবে একটা পদ্ধতি প্রবর্তন করা। আমরা আমাদের শিক্ষকদের জ্ঞানের সীমা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নই। এই পদ্ধতি প্রবর্তনের আগে বিবেচনা করা উচিত ছিল সৃজনশীল প্রশ্ন করার জন্য একজন সৃজনশীল শিক্ষক দরকার। শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকশিত করার সক্ষমতা একজন শিক্ষকের রয়েছে কি না, সেটাও মাথায় রাখা উচিত ছিল। এ নিয়ে শিক্ষকদের নানা প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরেও সংবাদমাধ্যমে আমরা দেখেছি, এই সৃজনশীল পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষকেরা দ্বিধাগ্রস্ত।

সত্যি কথা বলতে কী, এ ধরনের পরীক্ষাপদ্ধতিতে সৃজনশীলতা আশা করাটাই বোকামি। আপনি একজন শিক্ষার্থীকে একটা নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেবেন, এক গাদা প্রশ্ন দেবেন, পরীক্ষার হলে চিন্তা করার সুযোগ দেবেন না; অথচ আশা করছেন সে সৃজনশীল উত্তর দেবে। কী হাস্যকর! সৃজনশীলতার জন্য দরকার সময় এবং চিন্তা করার প্রয়াস। এ ধরনের প্রশ্নে এই দুটির কোনোটিই সম্ভব নয়। আমি কানাডায় দেখেছি, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়েও পরীক্ষার হলে যখন সময় বেঁধে পরীক্ষা হয়, তখন প্রশ্নপত্রে নিজস্ব মতামত প্রকাশের বিষয়টি তুলে দেওয়া হয়। কারণ, তখন ধরে নেওয়া হয় একজন শিক্ষার্থীকে চিন্তার সুযোগ না দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে তার কাছ থেকে সৃজনশীল উত্তর আশা করা অযৌক্তিক।  

এবার সৃজনশীল প্রশ্ন কেমন হওয়া উচিত, তার দুটি উদাহরণ আমি দিচ্ছি। আমার মেয়ে এখন কানাডার একটি স্কুলে পড়াশোনা করছে বলে এ দেশের প্রশ্নপদ্ধতি এবং মূল্যায়নপদ্ধতির সঙ্গে আমার পরিচিত হওয়ার সুযোগ হয়েছে। চতুর্থ শ্রেণিতে থাকাকালীন একদিন সে এসে বলল, ওরিও বিস্কুটের একটা নতুন ধরন দেখাতে হবে, বাচ্চারা যাতে খুব সহজে আকৃষ্ট হয়। এ নিয়ে প্রজেক্ট এবং তার বিজ্ঞাপন তৈরি করতে হবে। স্কুল থেকে একটা বিজ্ঞাপন দিয়ে দেওয়া হয়েছে দেখার জন্য। সে মনোযোগ দিয়ে সেটা দেখল। আমরা সবাই জানি, ওরিও বিস্কুটের বাইরের অংশ চকলেট রঙের, আর ভেতরে থাকে সাদা ক্রিম। সে এমন একটা ওরিও বিস্কুটের ডিজাইন করল, যেটা কেবল বাচ্চা না, পোষা প্রাণীও খেতে পারবে। এরপর ছবি এঁকে সে তার নিজের মতো করে বিজ্ঞাপনও তৈরি করে ফেলল, যেখানে শিশুরা পোষা প্রাণীদের সঙ্গে ওরিও ভাগাভাগি করে খাচ্ছে। এরপর তার রিপোর্ট কার্ডে শিক্ষক বিস্তারিত বর্ণনায় লিখলেন, কেন তার প্রজেক্টটি সবার চেয়ে আলাদা। সুতরাং এখানে পরীক্ষাপদ্ধতি এবং মূল্যায়ন—দুই ক্ষেত্রেই রয়েছে সৃজনশীলতার ছাপ।

আবার একদিন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অনুচ্ছেদ (প্যারাগ্রাফ) লিখতে বলা হলো, একটি কাল্পনিক প্রাণীর ওপর—যা মাথা হবে গিরগিটি আর ধড় হবে ঘোড়ার মতো। সেটি সম্পর্কে আমার মেয়ে লিখেছে, এই প্রাণী মানুষের জন্য বিপজ্জনক নয়, যেহেতু মাথাটা গিরগিটির মতো। এরা খাবার হিসেবে মাঝেমধ্যে পাখির মাংস পছন্দ করে। এরা গৃহপালিত নয়, বরং অনেকটা বন্য, তবে মাঝেমধ্যে লোকালয়ে চলে আসে। এরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমায় এবং নিজেদের গায়ের রং পরিবর্তন করতে পারে। লেখা শেষে সে নিচে একটা ছবিও এঁকে দিয়েছে। সবার লেখা শেষ হলে তার প্যারাগ্রাফ শিক্ষক ক্লাসের সবাইকে পড়ে শুনিয়েছেন এবং তার অনুমতি নিয়ে ক্লাসের দেয়ালেও সেটা টানিয়ে রেখেছেন।

যে উদ্দেশ্য সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল, সেটি কি আদৌ পূরণ হচ্ছে, তা ভেবে দেখা উচিত বলে আমি মনে করি। এই পদ্ধতি নিয়ে আবারও চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে। নামে সৃজনশীল হলেও সেখানে সৃজনশীলতা প্রয়োগের এমন নমুনা দেখে আমরা উৎকণ্ঠিত। আগে হোক পরে হোক উন্নত বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার মতো প্রতিটি শ্রেণিতে প্রজেক্টভিত্তিক পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করতে হবে আমাদেরও।

আর ষষ্ঠ শ্রেণিতে তাকে টিভিতে আবহাওয়া সংবাদ, একটি উপন্যাস কিংবা শিশুতোষ বই লেখার প্রজেক্ট করতে হচ্ছে। এতে তার সুন্দর মানসিক বিকাশের পাশাপাশি সৃজনশীলতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে, নেই কোনো বই মুখস্থ করার চাপ। নেই এক গাদা বই টেনে স্কুলে যাওয়ার তাড়াও। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পরীক্ষাপদ্ধতি হলো টার্ম পেপার জমাদান পদ্ধতি। অর্থাৎ ঘরে বসে একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে একটা প্রবন্ধ জমা দিতে হয় এবং সেটা সব ধরনের গবেষণামূলক নিবন্ধ লেখার নিয়ম অনুসরণ করে করা হয়। এতে একদিকে যেমন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুর দিক থেকেই একধরনের প্রবন্ধ লেখার প্রশিক্ষণ পায়, অন্যদিকে তাদের চিন্তার দ্বারও উন্মুক্ত হয়ে যায়।

আর আমাদের দেশে প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কেবলই মুখস্থ আর মুখস্থ করার বোঝা। একজন শিক্ষার্থীর মস্তিষ্কে এবং মননে এই পদ্ধতি কতটা চাপ ফেলে একবার ভেবে দেখেছেন? একবারও কি আমরা ভেবে দেখেছি আমাদের দেশের কোনো শিক্ষকের পক্ষে এ ধরনের প্রশ্ন প্রণয়ন, মূল্যায়ন করা সম্ভব কি না। প্রকৃতপক্ষেই সম্ভব নয়। কেননা আমাদের দেশে একজন শিক্ষককে একই ক্লাসে ৭০-৮০ জন ছাত্রকে পড়াতে হয়। ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত বিবেচনা করলে তাঁর পক্ষে প্রতিটি ছাত্রের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া অসম্ভব। উপরন্তু, শিক্ষকের জ্ঞানের সীমাও এ ক্ষেত্রে একটি বড় অন্তরায়। যিনি বা যাঁরা এইচএসসির এই বিতর্কিত প্রশ্ন প্রণয়ন করেছেন, তাঁরা নিজেরাও উঠে এসেছেন এমন গৎবাঁধা শিক্ষাপদ্ধতির মধ্য দিয়ে।

আরও পড়ুন

যে উদ্দেশ্য সৃজনশীল পদ্ধতি চালু করা হয়েছিল, সেটি কি আদৌ পূরণ হচ্ছে, তা ভেবে দেখা উচিত বলে আমি মনে করি। এই পদ্ধতি নিয়ে আবারও চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে। নামে সৃজনশীল হলেও সেখানে সৃজনশীলতা প্রয়োগের এমন নমুনা দেখে আমরা উৎকণ্ঠিত। আগে হোক পরে হোক উন্নত বিশ্বের শিক্ষাব্যবস্থার মতো প্রতিটি শ্রেণিতে প্রজেক্টভিত্তিক পরীক্ষা ও মূল্যায়ন ব্যবস্থা চালু করতে হবে আমাদেরও।

পাশাপাশি, এর জন্য দরকার প্রশ্নপত্র তৈরিতে যোগ্য শিক্ষক প্রস্তুত করা ও যুক্ত করা। অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগের মতো শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি কতটা যৌক্তিক, সেটিও আমাদের ভেবে দেখা উচিত। মেধাবীরা যাতে শিক্ষকতার পেশায় আসতে আগ্রহী হন, সে জন্য প্রাথমিক থেকে শুরু করে প্রতিটি স্তরে শিক্ষকদের জন্য বেতন ও আর্থিক প্রণোদনায় কোনো বৈষম্য রাখা যাবে না। কানাডার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতেও অনেক পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক আছেন; অন্তত প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষা বাধ্যতামূলক। একজন ভালো শিক্ষকই একটি ভালো জাতি উপহার দিতে পারেন। তেমন শিক্ষক না হলে এ ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন এবং তার অনুমোদন—দুই সম্ভব। আর সেটা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে আমাদের জন্য পুরোনো পদ্ধতিতেই ফিরে যাওয়া সমীচীন হবে। তাতে অন্তত শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সম্যক ধারণা পাবে।  

  • নাসরীন সুলতানা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। বর্তমানে কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিও’র পিএইচডি শিক্ষার্থী। ই–মেইল: [email protected]