বিশ্লেষণ
নতুন অধ্যাদেশে চিকিৎসকদের সুরক্ষা কতটা গুরুত্ব পেল
‘স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৪’–এর খসড়ার কিছু ধারা–উপধারা ইতিবাচক। তবে কিছু ধারা–উপধারা নিয়ে অংশীজন, বিশেষভাবে চিকিৎসকদের মধ্যে প্রশ্ন ও আপত্তি রয়েছে। সেই প্রশ্ন ও আপত্তিগুলো নিয়ে লিখেছেন ফজলে রাব্বী চৌধুরী
বিগত এক দশক বা তার বেশি সময় ধরে সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর ক্রমাগত শারীরিক আঘাতের ঘটনা বেড়ে গেছে। এর ফলে চিকিৎসাসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্য থেকে তাদের জন্য একটি ‘সুরক্ষা আইন’ তৈরির দাবি জোরেশোরে তোলা হয়েছে। এ সময়ে স্বাস্থ্য খাতের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনগুলোও এ বিষয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠে।
এ রকম প্রেক্ষাপটে বিগত সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ‘স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষা আইন ২০২৩’–এর খসড়া নিয়ে হাজির হয়েছিল। তখন দেখা গিয়েছিল, খসড়া আইনটি স্বাস্থ্যসেবাদাতাদের চেয়ে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহীতাদের সুরক্ষাকেই অগ্রাধিকার দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে একই বিষয়ে একটি অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করে যাচাই–বাছাইয়ের জন্য ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এই খসড়ায় আগের মতো একই প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।
অধিকাংশ চিকিৎসক এখনো মনে করেন, বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবা সুরক্ষা আইন বা অধ্যাদেশ কার্যকর হলে তা চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা দেবে; কিন্তু অধ্যাদেশের খসড়া দেখে তা মোটেও সঠিক বলে মনে হচ্ছে না। যে কেউ এ খসড়া অধ্যাদেশ পড়লে দেখতে পাবেন, একমাত্র ধারা ৪২–এর উপধারা–৩ ব্যতীত আর কোথাও স্বাস্থ্যসেবাদাতাদের সুরক্ষার কথা বলা হয়নি। তাহলে শুধু স্বাস্থ্যসেবা গ্রহীতাদের সুরক্ষার জন্য এই পৃথক আইন করার প্রয়োজন পড়ল কেন? এমন প্রশ্ন উঠেছে।
এই দেশে অনায়াসে কোনো চিকিৎসক চাইলেই প্রাইভেট প্র্যাকটিসে এক দিনে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ৫০/৭০/১০০/১৫০ জন রোগী দেখতে পারেন। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে চিকিৎসক হিসেবে সরাসরি কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের চিকিৎসকদের সঙ্গে সরাসরি গবেষণার অভিজ্ঞতায় আমি অন্তত এটুকু বলতে পারি, পৃথিবীর আর কোনো দেশে বাংলাদেশের মতো এত আয়েশে, কোনোরকম নিয়মকানুনের তোয়াক্কা না করে চিকিৎসাসেবা দেওয়া সম্ভব নয়।
বিখ্যাত বাংলা চলচ্চিত্র অলীক সুখ–এর প্রফেসর অম্বরিশ রায়ের মতো বলতে হয়, ‘চার-পাঁচ মিনিটে কি রোগীর মন বোঝা যায়? রোগীর মন না বুঝলে কি রোগ বোঝা যায়?’
সার্জন বা শল্যচিকিৎসকদের অবস্থা তো আরও তুঙ্গে। সরকারি হাসপাতালে দিনের পর দিন ঘোরে, পায়ের জুতা ক্ষয় করে ফেললেও সেখানে সার্জারির জন্য ভর্তি হওয়া যায় না। অনেক ক্ষেত্রে দালালকে টাকা না দিলে সার্জারি ডেট পাওয়া যায় না।
অথচ পকেটের টাকা খরচ করলেই জাদুকরের জাদুর কাঠির মতো সকাল বিকেল রাত যেকোনো সময় পাশের বেসরকারি হাসপাতালে সার্জারিটি করানো সম্ভব। রোগী বা তাঁর পরিবারের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তির খরচ, বেড বা রুম ভাড়া, পরীক্ষা–নিরীক্ষার খরচসহ নামে–বেনামে বিভিন্ন খরচ করতে পারলেই হলো।
এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বাংলাদেশ মেডিকেল এবং ডেন্টাল কাউন্সিল কি কোনো ব্যবস্থা নিতে পেরেছে?
অন্য দেশের উদাহরণ
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) শুধু ২০২৩-২৪ সালে বিভিন্ন প্রকার চিকিৎসায় অবহেলাজনিত ১৩ হাজার ৭৮৪টি অভিযোগ গ্রহণ করে এবং জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিলকে (জিএমসি) রেফার করে দেয়। জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিল তার মধ্যে ৭ হাজার ২৬০টি অভিযোগের ক্ষেত্রে কমিটি দ্বারা প্রমাণসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং ৬ হাজার ৫৭৩টির ক্ষেত্রে অগ্রহণযোগ্য হিসেবে বাতিল করে দেয়। এনএইচএস বছরে গড়ে ১৪ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করে শুধু ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্ত রোগীদের সারিয়ে তোলার পেছনে। (দ্য গার্ডিয়ান, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪)
পাশের দেশ ভারতে গড়ে বছরে প্রায় কয়েক হাজার চিকিৎসায় অবহেলা–সংক্রান্ত অভিযোগ ভোক্তা অধিকার–সংক্রান্ত আদালতে (কনজ্যুমার কোর্ট) দাখিল হয়। আদালত পর্যালোচনা ও শুনানি করে আমলযোগ্য অভিযোগগুলোকে রাজ্যভিত্তিক স্টেট মেডিকেল কাউন্সিলে পাঠিয়ে দেন। স্টেট মেডিকেল কাউন্সিল আরও যাচাই-বাছাই করে তা মেডিকেল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ায় রেফার করে দেন। এখানে বলে রাখা ভালো, এই অভিযোগগুলোর মধ্যে বৃহৎ অংশই ভোক্তা অধিকারসংক্রান্ত আদালতের বাইরে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
২০১৭ সালে মেডিকেল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া ১৫৬টি অভিযোগের সুরাহা করে ৬৯ জন চিকিৎসককে বিভিন্ন ধরনের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসে। সে ক্ষেত্রে আমাদের বিএমডিসির পারফরম্যান্স বা ভূমিকা কী, তা বলার মতো নয়। বিএমডিসির সদ্য নিযুক্ত একজন কাউন্সিলর হিসেবে এর দায় আমিও এড়াতে পারি না।
এসব প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনার কারণ একটাই। বিশ্বের বহু দেশে চিকিৎসায় অবহেলার জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পদ্ধতিগত ব্যবস্থা নেওয়ার উদাহরণ আছে। সেই সব পদ্ধতি অনুসরণ না করে শুধু রোগীদের সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশে আলাদা আইনের প্রয়োজন পড়েছে কেন?
খসড়া অধ্যাদেশ নিয়ে আপত্তি কেন
আমার বিবেচনায় এই অধ্যাদেশে এমন কিছু ধারা–উপধারা রয়েছে, যা কার্যকর হলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতে অস্থিরতা ও আস্থার সংকট তৈরি হতে পারে। চিকিৎসক সমাজের একজন প্রতিনিধি হিসেবে অধ্যাদেশের এ রকম কিছু ধারা–উপধারা নিয়ে আশঙ্কার কথা না জানানো ছাড়া উপায় নেই।
১. প্রথম অধ্যায়ে (সংজ্ঞা) ধারা ২–এর উপধারা ৫–এ চিকিৎসকের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে একপর্যায়ে বলা হয়েছে, ‘...সরকার কর্তৃক আইন দ্বারা নির্ধারিত স্বাস্থ্য সেবা প্রদানে জড়িত অন্য কোনো পেশাজীবী।’
বিএমডিসি আইন ২০১০–এ বর্ণিত স্বীকৃত মেডিকেল চিকিৎসক ও ডেন্টাল চিকিৎসক কারা হতে পারবেন, তা স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে সরকার অন্য কোনো আইন দিয়ে কোনো পেশাজীবীকে কেন চিকিৎসক বলতে চায়, তা আমার বোধগম্য নয়।
২. তৃতীয় অধ্যায়ে ধারা ১২–এর উপধারা ২(ঘ) অনুসারে, হাসপাতালে প্রবেশ, পরিদর্শন ও জব্দ করার ক্ষেত্রে নূন্যতম একজন চিকিৎসক যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে।
হাসপাতালের মতো একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালাতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের একজন পেশাজীবীর নেতৃত্বে চালানো উচিত। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, সিভিল সার্জন বা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের পরিদর্শন দলের নেতৃত্বে রাখা উচিত।
৩. তৃতীয় অধ্যায়ে ধারা ১৫–এর উপধারা ১–এ সরকারি গেজেট প্রজ্ঞাপন দ্বারা সরকারি–বেসরকারি চিকিৎসকদের ফি নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আমার ধারণা, এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের মধ্য থেকে একটা বড় ধরনের আপত্তি আসতে পারে। ঢালাওভাবে সব ধরনের ফি নির্ধারণ না করে, শুধু অপারেশন ফি নির্ধারণ করে দিলে সেটা অনেক বেশি বাস্তবসম্মত হতো। তাহলে রোগীরাও বেশি লাভবান হতো।
তা ছাড়া একজন চিকিৎসক তাঁর ব্যক্তিগত চেম্বারে সর্বোচ্চ কতজন রোগী দেখতে পারবেন, সেটা নির্দিষ্ট করে দেওয়া উচিত ছিল। এ ক্ষেত্রে অধ্যাপক থেকে জুনিয়র কনসালট্যান্ট পর্যন্ত রোগী দেখার সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দিতে পারলে নিঃসন্দেহে সেবার মান বৃদ্ধি পাবে বলে আমার বিশ্বাস।
৪. চতুর্থ অধ্যায়ে ধারা ১৯–এর উপধারা ১–এ বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে যেকোনো বিদেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য নিয়োগ ও সুযোগ দিতে পারবে।
কোনো বিদেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবাকর্মী বাংলাদেশে চিকিৎসাসেবা দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা নির্ণয় করার এখতিয়ার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেই। এ ক্ষেত্রে একমাত্র বিএমডিসি আইনসিদ্ধভাবে সাময়িক এবং স্থায়ী লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলই এ কাজ সম্পন্ন করে থাকে। বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম হওয়া উচিত নয়। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়গুলো অনুধাবন করতে হবে এবং খসড়া অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে হবে।
৫. নবম অধ্যায়ে ধারা ৩৪–এর উপধারা ১ (ঘ)-এ বিকল্প চিকিৎসাসেবা প্রদানকারীদের (অল্টারনেটিভ মেডিসিন প্র্যাকটিশনার) আলাদাভাবে বেসরকারি হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চেম্বারে চিকিৎসাসেবা প্রদানের বিষয়ে বলা হয়েছে।
বিকল্প চিকিৎসাসেবা প্রদানকারীদের এভাবে চিকিৎসাসেবা প্রদানে অনুমতি দেওয়া হলে তা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বড় বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসবে। বাংলাদেশে হোমিওপ্যাথি ও ইউনানি চিকিৎসা আলাদা আইন দ্বারা প্রচলিত আছে। এর বাইরে ‘অল্টারনেটিভ মেডিসিন’– এর অন্য অংশগুলোকে (আয়ুর্বেদিক, ন্যাচারোপ্যাথি ইত্যাদি) চিকিৎসার সুযোগ করে দিলে তা এক নতুন নৈরাজ্যের সৃষ্টি করবে। পৃথিবীর কোনো দেশে এটা প্রচলিত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য নীতিনির্ধারকদের বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য ২০২১ সালে হাইকোর্টের একটি রায়ে বলা হয়েছিল, হোমিওপ্যাথিক, আয়ুর্বেদিক ও ইউনানিসহ যাঁরা বিকল্প চিকিৎসাসেবা প্রদান করেন, তাঁরা তাঁদের নামের আগে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার করতে পারবেন না। বিষয়টি এ অধ্য্যাদেশে স্পষ্ট করা প্রয়োজন।
৬. দশম অধ্যায়ে ধারা ৩৭ এই অধ্যাদেশের একটি স্পর্শকাতর ধারা, যেখানে মোবাইল কোর্টের বিধান রাখা হয়েছে। ‘মোবাইল কোর্টের ক্ষমতা’ শিরোনামে এই ধারায় যদিও কী কী অপরাধকে এখানে তফসিলভুক্ত করা হবে, তা পরিষ্কার করা হয়নি।
হাসপাতালের ল্যাবরেটরি সেন্টারের অনিয়ম অনুসন্ধান, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর ওপর আঘাত/ক্ষতি, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী স্থাপনার ওপর হামলা ইত্যাদি ক্ষেত্রে অভিযান পরিচালনার স্বার্থে এই বিধান রাখা যেতে পারে। কিন্তু চিকিৎসায় অবহেলা নির্ধারণে মোবাইল কোর্টের কোনো ধরনের এখতিয়ার থাকার সুযোগ নেই।
কারণ, চিকিৎসায় অবহেলা এমন একটি বিষয়, যা বিশেষায়িত জ্ঞান ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে নির্ধারণ করা যায় না। বিষয়টি উক্ত অধ্যাদেশে স্পষ্ট করা প্রয়োজন। তা না হলে এটা চিকিৎসকদের মধ্যে (বিশেষ করে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে) ব্যাপক অস্থিরতা ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করবে।
উল্লেখ্য, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা অসাংবিধানিক—এমন ঘোষণা চেয়ে উচ্চ আদালতে মামলা হয়েছিল। এই মামলা বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন। তাই মোবাইল কোর্টের বিষয়ে নানা রকম প্রশ্ন রয়েছে।
৭. একাদশ অধ্যায়ের ধারা ৪২–এর উপধারা ৩–এ বলা হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তির প্রতি হুমকি প্রদান, ভীতি প্রদর্শন, দায়িত্ব পালনে বাধাদান, আঘাত করাসহ যেকোনো ধরনের অনিষ্ট সাধন বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কোনো সম্পত্তির ক্ষতি সাধন, বিনষ্ট, ধ্বংস বা সম্পত্তি দখল করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনধিক তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা দুই বছর কারাদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
পুরো খসড়া অধ্যাদেশের একমাত্র এখানেই স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সুরক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে। এ ছাড়া খসড়া অধ্যাদেশের আর কোথাও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের সুরক্ষার বিষয়ে কিছু বলা নেই।
শেষ কথা
এই খসড়া অধ্যাদেশের কিছু কিছু ধারা অবশ্যই ইতিবাচক। আমার মতে, এই আইনের কিছু বিতর্কিত ধারা–উপধারা সম্পূর্ণ বাতিল এবং কিছু ধারা–উপধারা সংশোধন করা হলে তা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও স্বাস্থ্যসেবা গ্রহীতা দুই পক্ষের জন্যই বিশ্বাসযোগ্য ও আস্থার পরিবেশ গড়ে তুলবে। সেটা না করে খসড়া অধ্যাদেশটি কার্যকর হলে তা নিশ্চিতভাবে স্বাস্থ্য খাতে চলমান অবিশ্বাস ও অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
ডা. ফজলে রাব্বী চৌধুরী, চিকিৎসক ও গবেষক,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
ইমেইল: rabbimedicine@bsmmu.edu.bd