পঙ্কজ সরণের কলাম
বাংলাদেশের নির্বাচন ও পরবর্তী পরিস্থিতি
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী রাজনীতি, অর্থনীতি এবং ভূরাজনীতি বিষয়ে লিখেছেন পঙ্কজ সরণ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপ-উপদেষ্টা পঙ্কজ সরণ পররাষ্ট্র, কৌশলগত ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার ও রাশিয়ায় ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। বর্তমানে তিনি নিরাপত্তা ও কৌশলবিষয়ক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ন্যাটস্ট্র্যাট–এর আহ্বায়ক। ভারতভিত্তিক চিন্তন-গোষ্ঠী বিবেকানন্দ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের ওয়েবসাইটে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তাঁর লেখাটি পাঠকদের জন্য প্রকাশ করা হলো।
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেমনটি ধারণা করা হচ্ছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় ফিরেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি পঞ্চম মেয়াদে ক্ষমতা ধরে রাখলেন।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুষ্ঠু হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নির্বাচন ঘিরে বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়েছিল। তবে তাদের সে দাবি মেনে নেওয়া হয়নি।
শেষ পর্যন্ত নির্বাচন বর্জনের পথে হাঁটে দলটি। তবে সরকার নিজেদের দিক থেকে সংবিধান মেনে চলার সিদ্ধান্ত নেয় এবং নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যায়। নির্বাচনপ্রক্রিয়া যেন নাশকতা বা রাজপথে কোনো ধরনের সহিংসতার জেরে বাধাগ্রস্ত না হয়, তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপও নেওয়া হয়।
৭ জানুয়ারির নির্বাচন ত্রুটিমুক্ত ছিল না। বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিলে, মানুষ নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেওয়ার সুযোগ পেত। আর সেটা তাদের অধিকার। বিএনপির নির্বাচন বর্জনটা ছিল দুর্ভাগ্যজনক এবং গণতান্ত্রিক রীতির যে চেতনা, তার পরিপন্থী। কারণ, কোনো দেশে রাজনৈতিক বিরোধী থাকার অর্থ হলো, সরকারকে চ্যালেঞ্জ করা এবং ভোটারদের সামনে বিকল্প পথ তুলে ধরা। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ না নিলে রাজনৈতিক দলগুলো টিকে থাকতে পারে না। বিএনপি মনে হচ্ছে পথ হারিয়েছে এবং দলটি কী লক্ষ্য অর্জন করতে চায়, তা-ও স্পষ্ট নয়।
এমন পরিস্থিতিতে যে প্রশ্নটি সামনে আসছে, তা হলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা এবং দেশের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত একটি সরকারকাঠামো। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে চীন ও রাশিয়ার কথা। তারা যে গণতন্ত্রের দাবি করে, তা পশ্চিমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ইরানের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ইতিহাস রয়েছে। তবে ইরানের শাহের সঙ্গে কাজ করে পশ্চিমারা যে স্বাচ্ছন্দ্য পেত, তা হারানোর অসন্তোষ তাদের এখনো আছে। ইরানে বর্তমানের নির্বাচনী ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যে ফলাফল আসছে, তা-ও পশ্চিমাদের পছন্দ নয়।
মিসরে একমাত্র অবাধ ও সুষ্ঠু যে নির্বাচন হয়েছিল, তাতে মুসলিম ব্রাদারহুড জয় পেয়েছিল। তবে পশ্চিমাদের যোগসাজশে সেই দেশে দ্রুতই গণতন্ত্রকে দমন করা হয়। তখন থেকেই মিসর সামরিক একনায়কতন্ত্রের দিকে ফিরে গেছে, যারা পশ্চিমাদের প্রতি বন্ধুত্বসুলভ। বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের ‘গণতন্ত্রের’ উদাহরণ রয়েছে।
একটি দেশের জন্য কোন ধরনের সরকারকাঠামো সবচেয়ে উপযুক্ত হবে, সেই প্রশ্নের সবচেয়ে ভালো জবাবটা দিতে পারে ওই দেশের জনগণ। সাধারণত, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এটা নির্ধারিত হয়। প্রতিটি দেশের ভেতরেই বিপ্লব সংঘটিত হয় এবং পরিবর্তন আসে।
এর মধ্য দিয়ে নির্ধারিত হয়—দেশটি কীভাবে শাসিত হবে এবং ক্ষমতার হাতবদল কোন প্রক্রিয়ায় হবে। কোনো কোনো দেশ অন্যদের অনুকরণ করে। আর কোনো কোনো দেশ ভেতর থেকেই নিজেদের সরকারকাঠামোটা খুঁজে নেওয়ার পথে হাঁটে।
বিতর্ক এখন শেষ। নতুন একটি সরকার ও মন্ত্রিসভা বাংলাদেশে শপথ গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের এখন কাজে ফেরার এবং গত এক বছর বা তার বেশি সময় ধরে যে অনিশ্চয়তা চলছিল, তা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময়। নতুন সরকারের সামনে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী ভালোভাবে অবগত আছেন। এসব চ্যালেঞ্জ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে। বাংলাদেশকে এমন একটি প্রবৃদ্ধির হার বজায় রাখতে হবে, যেটি দেশের মানুষের আয় বাড়াবে, কাজের সুযোগ তৈরি করবে এবং ১৭ কোটি মানুষের ক্রমবর্ধমান আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারবে।
এসব লক্ষ্য পূরণে সুষ্ঠু ও বিচক্ষণ শাসনব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে। সামাজিক দিক থেকে একটি জাতীয় পরিচয় গড়ে তোলার কাজ চলমান। বাংলাদেশে সম্পূর্ণ নতুন একটি প্রজন্ম বসবাস করছে। যেভাবে তাদের মনমানসিকতা গড়ে উঠছে এবং যেভাবে তারা নিজেদের দেখছে, সেটা নীরবে তাদের ভবিষ্যতের ভিত গড়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ বিভিন্ন সময় অভ্যুত্থান, সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে গেছে। জাতিকে রাজনৈতিকভাবে পরিপক্বতার দিকে নিয়ে যেতে একটি শক্ত হাতের প্রয়োজন। একটি শক্ত হাতের প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে। এটা কোনো সহজসাধ্য কাজ নয়। এমনকি সবচেয়ে উন্নত দেশগুলোর জন্যও এই কাজ যে কঠিন, তা অভিজ্ঞতা থেকে দেখা গেছে।
উন্নয়নের একটি মূল পূর্বশর্ত নিরাপত্তা ও আইনের শাসন। সমাজ থেকে সন্ত্রাসবাদ, চরমপন্থা ও মৌলবাদ নির্মূলে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি যেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন, তার মধ্যে একটি হলো, ধর্মের প্রতি মানুষের একটি মধ্যপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করা এবং মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকায়ন। এ ক্ষেত্রে এখনো অনেক কিছু করা বাকি আছে এবং এটা তাঁর নজরে থাকবে বলেই মনে হয়। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের পরিণতি সম্পর্কে তিনি ওয়াকিবহাল। মডেল হিসেবে সৌদি আরব বা তুরস্কের চেয়ে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার দিকে তাঁর নজর বেশি। দেশের জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ যে বার্তা দেবে এবং জনগণের কাছে যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে, সে অনুযায়ী দলটিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। জামায়াতে ইসলামী ও তাদের সহযোগীদের জন্যও এটি প্রযোজ্য।
বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলে বদল আসছে। এই দলগুলোর মধ্যে আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল রয়েছে।
ইসলামী বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ কীভাবে নিজেকে সংজ্ঞায়িত করবে, ভারতের ক্ষেত্রে কীভাবে নিজেদের তুলে ধরবে, সে ব্যাপারে তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে, সেটি হবে মৌলিক। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেত্রেও সেটিই প্রযোজ্য।
এভাবেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্কটা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ নীতির ওপরও নির্ভরশীল। বাংলাদেশ যদি তার আশপাশের ভারতীয় রাজ্যগুলোয় ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো নিবিড়ভাবে অনুসরণ করে, তাহলে ভারতও বাংলাদেশের ঘটনাবলি অনুসরণ করবে। এটি এমন একটি বাস্তবতা, যা সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশই মেনে নিয়েছে। এটি নেতিবাচক কোনো বিষয় নয়; বরং সীমান্তের দুই পাশের মানুষের উন্নয়নের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
আগামী পাঁচ বছরে দুই দেশেই বর্তমান নেতৃত্ব ক্ষমতায় থাকবে বলে মনে হচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে চলমান উদ্যোগ ও প্রকল্পগুলো শেষ করার একটি ভালো সুযোগ পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে দুই দেশের আরও বড় পরিসরে একসঙ্গে কাজ করার আকাঙ্ক্ষা বাড়াবে। এই সম্পর্কে, আর দশটা সম্পর্কের মতোই সব সময় মতভেদ, অমীমাংসিত সমস্যা এবং প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ার মতো বিষয়গুলো থাকবে। ভারতের উচিত হবে, বাংলাদেশের সমাজের সব অংশের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর চেষ্টা করা। একই সঙ্গে নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে দেশটির সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার করা।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক কোনো সামরিক হুমকি নেই। তবে আরও জটিল কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় রয়েছে, যা দুই দেশের ওপরেই প্রভাব ফেলতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে পরিচিত কিছু সমস্যা, যেমন সংখ্যালঘুদের প্রতি মনোভাব, অবৈধ অভিবাসন, সন্ত্রাসবাদ ও বিদ্রোহ।
দুই দেশের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক টেকসইভাবে এগিয়ে নিতে ভারতকে বড় বিনিয়োগ করতে হবে, একই সঙ্গে বাংলাদেশকে ইতিবাচকভাবে কাজ করতে হবে। সরবরাহব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো বহুমুখী করতে হবে, যাতে বাংলাদেশের আয় ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর যে লক্ষ্য, তা অর্জনে ভারত সক্রিয় অংশীদার হতে পারে এবং বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি বাড়াতে পারে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও মূল্যস্ফীতির কারণে বাংলাদেশ হয়তো চাপের মুখে পড়তে যাচ্ছে। এ বিষয়ে ভূমিকা পালনের জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানানো হতে পারে। বাংলাদেশকে সহায়তা করার একমাত্র উপায় হবে রুপিতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানো। জ্বালানি, টেলিযোগাযোগ, সাগর, নদী, আকাশ ও রেল খাতে যোগাযোগ আরও বাড়ানো যেতে পারে। দুই দেশের সীমান্তবর্তী অবকাঠামোর উন্নয়ন অব্যাহত রাখা এবং ভ্রমণ সহজসাধ্য করাটাও জরুরি।
২০২৬ সালে গঙ্গার পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে পানিবণ্টনের বিষয়টি আবার সামনে আসবে। দুই দেশের অভিন্ন নদীগুলোর পানি বণ্টন করেই শুধু সমাধান পাওয়া যাবে না। নদীগুলোর পানির ঘাটতিও ভাগ করে নিতে হবে। যে ব্রহ্মপুত্র নদ দিয়ে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পানি আসে, সেটির উৎপত্তিস্থল চীনে। তাই বন্যার মৌসুমসহ অন্যান্য সময়ে এই নদের পানির প্রবাহ এবং পানি ব্যবস্থাপনার জন্য চীনের সহায়তা প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দুই দেশের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে যাচ্ছে। তাই দুই দেশেরই সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নীতি হলো—সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নীতি কাজে লাগাচ্ছেন। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শীতল সম্পর্ক এবং এর বিপরীতে চীনের দিকে গভীরভাবে ঝুঁকে যাওয়ার কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা এই নীতি অনুযায়ী পাওয়া যায় না। তবে সরকারের নতুন মেয়াদ বাংলাদেশকে এসব সম্পর্ক পুনরায় সাজিয়ে নেওয়ার একটি সুযোগ করে দেবে।
এর জন্য দেশটিতে চীনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে দূরত্ব কমাতে হবে। পশ্চিমা দেশগুলোই বাংলাদেশের রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার। সেখান থেকেই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় আসে। আর বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে একীভূত হওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগটা আসবে এই পশ্চিমাদের হাত ধরেই। উন্নয়নের অংশীদার করার আড়ালে চীন বাংলাদেশকে ব্যবহার করতে চাইছে। ভারতকে কৌশলগতভাবে চাপে রাখার বেইজিংয়ের যে প্রচেষ্টা, তার একটি অংশ করতে চাইছে বাংলাদেশকে। ভারত এমনটা হতে দেবে না। আর বাংলাদেশ যে এভাবে নিজেকে ব্যবহার হতে দেবে, তা যৌক্তিকও নয়।
বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়েও ভালো আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যার কারণে দেশটির সঙ্গে এ নিয়ে বাংলাদেশের সংলাপ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। রোহিঙ্গাদের উপস্থিতি এবং সংখ্যার দিক দিয়ে তাদের বাড়তে থাকা বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একসময় এটা ভারতের জন্যও একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। ভারতে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকানো ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সীমান্ত ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা কর্তৃপক্ষকে পরীক্ষার মুখে ফেলবে।
বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো ইচ্ছা নেই ভারতের। সাফ কথা হলো, বাংলাদেশে যে সরকারই ক্ষমতায় আসুক না কেন, তাদের সঙ্গে কাজ করা ছাড়া ভারতের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।
আর ভারত তা করবেও। তবে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থেকে যাওয়ার মধ্য দিয়ে ভারত ঢাকায় এমন একজনকে পেয়েছে, যিনি এই অঞ্চলে একটি অংশীদারত্বের ভবিষ্যতে বিশ্বাস করেন। এই সুযোগ ভারতের কাজে লাগাতে হবে। একই সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ অটুট সম্পর্কের পারস্পরিক সুবিধার প্রতি শেখ হাসিনার যে বিশ্বাস, তার প্রতিদান দিতে হবে।
সংক্ষেপিত অনুবাদ: শেখ নিয়ামত উল্লাহ