মতামত
শান্তিনিকেতনে চীন-ভারত সম্মেলনের তাৎপর্য কী
প্রায় কোনো প্রচার ছাড়াই ভারত ও চীনের সমাজবিজ্ঞানী, কূটনীতিবিদ, ছাত্র ও শিক্ষকদের মধ্যে দুই দিনের একটি আলোচনা সভা হয়ে গেল শান্তিনিকেতনে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি ঘোষণার দিনকয়েক আগে। এ অনুষ্ঠানের ভূরাজনৈতিক তাৎপর্য নিয়ে লিখেছেন শুভজিৎ বাগচী
সভাটিকে ঐতিহাসিকই বলতে হবে। কলকাতার চীনা উপদূতাবাসের কনসাল জেনারেল জু ওয়েইর কথায়, ‘মহামারির পর এত বড় আলোচনা সভা দুই দেশের মধ্যে হয়নি।’ পরে অবশ্য অন্য চীনা কূটনীতিকেরা জানালেন, পূর্ব লাদাখ সীমান্তে ২০২০ সালের সংঘর্ষের পর এত বড় সভা হয়নি। কিন্তু অপ্রিয় শব্দ ব্যবহার করবেন না বলে ‘সীমান্তে’র পরিবর্তে ‘মহামারি’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন ওয়েই। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে দুই দেশের নাগরিক সমাজের এত বড় বৈঠক হয়নি।
শান্তিনিকেতনে চীনা ভবনের প্রধান অধ্যাপক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ও স্বীকার করলেন সে কথা। তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথের চীন সফরের ১০০ বছর (১৯২৪-২০২৫) উপলক্ষে গত বছর যখন অনুষ্ঠান শুরু করি, তখন চীনের স্কলারদের আনতে পারিনি। এরপর দুজন পণ্ডিত এলেন গত সেপ্টেম্বরে, তারপর অক্টোবরে সাতজন। এখন ১১ জন। ফলে নিশ্চিতভাবেই যোগাযোগ বাড়ছে।’
দুই দেশের মধ্যে একটি ‘ট্র্যাক টু’ও হয়েছে মার্চের ২৫-২৬ তারিখে গুরুগ্রামের (গুরগাঁও) মানেসারে। কিন্তু সেই সভা সাধারণ মানুষের জন্য ছিল না, ছিল শীর্ষস্থানীয় সাবেক কূটনীতিবিদদের জন্য। শান্তিনিকেতনে ১-২ এপ্রিলের সভা ছিল সবার জন্য, অংশ নিয়েছিলেন গবেষক, অধ্যাপক, শিল্পী, শিক্ষক, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রী থেকে কূটনীতিবিদেরা।
আলোচনা চক্রের বিষয় অবশ্য সরাসরি চীন-ভারত সম্পর্ক নিয়ে ছিল না। ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ৪৯ দিনের চীন সফরে গিয়েছিলেন। নানা জায়গায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন, নানান মানুষের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল। ফলে আলোচনা হয় রবীন্দ্রনাথ ও চীনের সম্পর্ক নিয়ে, তবে আবার শুধু তা নিয়েই নয়। চীন-ভারত সম্পর্ক ও তার ভবিষ্যৎ থেকে দুই দেশের উগ্র জাতীয়তাবাদ এবং সমাজে এর প্রভাব, অর্থনৈতিক আদান–প্রদান, কৃত্রিম মেধা নির্দেশিত সংকট, চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসুর চীন ভ্রমণ, চীন গবেষণার ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের ছাত্র ও বিশ্বভারতীর উপাচার্য (১৯৫৪-৫৬) প্রবোধ বাগচীর ভূমিকা থেকে বিশ্বের দুই সবচেয়ে জনবহুল দেশের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ভবিষ্যৎ—সবই ছিল আলোচনার টেবিলে।
অধ্যাপক অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এই সম্মেলন থেকে নির্দিষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেল যে ভারত সরকারও চাইছে, দুই দেশের মধ্যে আদান–প্রদান বাড়ুক, না হলে চীনের নানা প্রান্ত থেকে আটটি প্রদেশের অধ্যাপক ও গবেষকদের এই দল আনা যেত না। গত পাঁচ বছর চীনের ব্যবসায়ী, গবেষক বা অন্য পেশার মানুষ ভারতে আসার ভিসা পাচ্ছিলেন না, এবার পেলেন।’
তবে এবারও যে ভিসা পেতে তাঁদের সমস্যা হয়েছে, সমাপ্তি ভাষণে সে কথা বললেন একসময়ের ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী ও উপপ্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানির সহযোগী এবং সম্মেলনের অতিথি সুধীন্দ্র কুলকার্নি। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘এটা কেন হবে? বিশেষত ভারত যখন নিজেকে বিশ্বের অন্যতম অতিথিপরায়ণ দেশ হিসেবে তুলে ধরতে চায়।’ তবে এক চীনা কূটনীতিকের ভাষায়, ‘এত জন যে আসতে পেরেছেন সম্পর্ক উন্নয়নের প্রশ্নে সেটা একটা বড় ব্যাপার।’
সম্পর্ক ভালোর দিকে
চীন-ভারত সম্পর্ক খুবই চমকপ্রদ, আবার জটিলও। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এই সম্পর্কে এমন অনেক কিছু ভেতরে–ভেতরে হয়, যা বাইরে থেকে বোঝা যায় না। যেমন ২০২০ সালে যখন দুই দেশের সংঘর্ষ হলো, তখন মনে হয়েছিল ১৯৬২ সালে যখন যুদ্ধ হয়েছিল, সে সময়ের মতোই সম্পর্ক ক্রমেই খারাপ হবে। ‘কিন্তু তা হয়নি’ বললেন ভারতের অবসরপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত টি সি এ রঙ্গচারী। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে সামরিক সংঘর্ষ হলেও যোগাযোগ ছিন্ন হয়নি। সম্পর্ক একটা ভিন্ন রূপ নিয়েছে। এখন সীমান্ত আলোচনাও শুরু হয়েছে।
পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর গত ডিসেম্বরে সীমান্ত আলোচনা আবার শুরু হয়, কিন্তু তার মানে এই নয় যে বিভিন্ন স্তরে দুই দেশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যে অনানুষ্ঠানিক স্তরে আলোচনা বন্ধ ছিল। লাদাখে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের মৃত্যুর কয়েক মাসের মধ্যেই এই আলোচনা শুরু হয়েছিল বলে ২০২২ সালের মার্চ মাসে এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেছিলেন, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এবং তিনি দুই বছর ধরে অর্থাৎ ২০২০ সালে সংঘর্ষের পরই কথাবার্তা বলছেন।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে মস্কোতে দেখা করেছি, তারপর আবার দুশানবেতে…এ সময়ে আমাদের টেলিফোনে কথা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই কথাবার্তার প্রধান বিষয় ছিল সীমান্ত পরিস্থিতি। বৈঠকের ফলে সীমান্ত সম্পর্কের উন্নতিতে অনেকটাই কাজ হয়েছে। তবে কাজকে জমিতে বাস্তবায়ন করাই প্রধান চ্যালেঞ্জ।’
কী নিয়ে আলোচনা হলো সম্মেলনে
চীন–ভারত সম্পর্কের অতীত নিয়ে বলতে গিয়ে ভারতের অন্যতম প্রধান চীন বিশেষজ্ঞ এবং দিল্লির ইনস্টিটিউট অব চায়নিজ স্টাডিজের ফেলো শ্রীমতী চক্রবর্তী বলেন, ভারত চীনের সম্পর্কে অবনতির প্রধান কারণ ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন। ব্রিটিশদের চীনকে শোষণ করার মুখগুলো ছিল ভারতীয়। এই ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকেই তাই দুই গভীর সভ্যতার মধ্যে মানুষে-মানুষে সম্পর্কে চিড় ধরে। পরবর্তী সময়ে দুই দেশে যে জাতীয়তাবাদের জন্ম হয়, সেটা সম্পর্কের ফাটলকে আরও গভীরে নিয়ে যায়।
শ্রীমতী চক্রবর্তী বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে একটা “ট্রাস্ট ডেফিসিট” বা অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। এখন এটা মাথায় রাখতে হবে যে জাতিরাষ্ট্র নিয়ে আমাদের চলতে হবে। ফলে শিখতে হবে কীভাবে জাতিরাষ্ট্রের মধ্যে থেকে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি করতে পারি।’ এ ক্ষেত্রে প্রচারমাধ্যমের ভূমিকার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন যে ভারতের প্রচারমাধ্যমে একধরনের ভয়ের বার্তা দেওয়া হচ্ছে, যা দুই দেশের সম্পর্কের জন্য একেবারেই ভালো নয়। অন্যদিকে চীনেও ভারতের উত্তর-পূর্ব ভারতবিষয়ক বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে সন্দেহ ও উদ্বেগ রয়েছে।
এই সন্দেহ ও উদ্বেগের একটা বড় দিক হলো দ্বিপক্ষীয় ব্যবসা। ভারত ও চীনের মধ্যে ব্যবসা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলেও বাণিজ্যঘাটতিও ক্রমেই বাড়ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে চীনের সঙ্গে। কিন্তু ভারত চীনে যে পরিমাণ পণ্য সরবরাহ করেছে, চীন তার থেকে সাড়ে ছয় গুণ বেশি পণ্য সরবরাহ করেছে ভারতে। বাণিজ্যঘাটতির পরিমাণ ৮৫ বিলিয়ন ডলারের সামান্য ওপরে।
এটা কেন হচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ভারতের বিশিষ্ট চীন পর্যবেক্ষক এবং জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বি আর দীপক বলেন, ‘বিশ্বের বৃহত্তম উৎপাদনকেন্দ্র চীন। পৃথিবীর মোট উৎপাদনের প্রায় ৪০ শতাংশ সেখানে হয়। স্বাভাবিকভাবেই তারা অন্য দেশে বেশি পণ্য পাঠায় এবং এ কারণেই বিশ্বের প্রায় ১৪০টি দেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্যঘাটতি রয়েছে। ভারতও এর মধ্যে পড়ে।’ অর্থাৎ বাণিজ্যঘাটতি মেটাতে গেলে ভারতকে তার উৎপাদনক্ষমতা চীনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়াতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ।
দ্বিতীয়ত, দুই দেশের মধ্যে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাসেরও ঘাটতি রয়েছে, যে কারণে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য মার খাচ্ছে বলেও মনে করেন অধ্যাপক দীপক। তাঁর মতে, ‘পরস্পরের প্রতি সন্দেহ থাকার কারণে চীন থেকে যে পরিমাণ অর্থ ভারতে লগ্নি হওয়া প্রয়োজন, তা হচ্ছে না। আর এ ছাড়া চীনের বেশ কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করেন, চীনের এমন কিছু করা উচিত নয়, যার ফলে ভারতের উৎপাদনক্ষমতা রাতারাতি বেড়ে যায়। কারণ, সে ক্ষেত্রে চীনের নতুন প্রতিযোগী তৈরি হবে। এ ভুলটা পশ্চিমের দেশগুলো করেছে। আমেরিকাসহ পশ্চিমের অন্যান্য দেশ চীন থেকে ক্রমবর্ধমানভাবে নানান পণ্য আমদানি করেছে, ফলে চীনের উৎপাদনক্ষমতা বেড়ে গেছে। তারাও চীনের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এখন শুল্ক বাড়িয়ে যা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।’
দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের অ্যানকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ঝ্যাং ওয়েই অন্য একটি কারণ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন এখানে আসার জন্য ভিসার চেষ্টা করছিলাম, তখন কিছু চীনা ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথাবার্তা হচ্ছিল, যাঁরা ভারতে আসতে চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাঁরা বলছিলেন যে ব্যবসা করতে ভারতে আসার ভিসা পাওয়া যায় না।’ ভারতে চীনা বিনিয়োগ না আসার এবং উৎপাদন না বাড়ার এটা একটা কারণ বলে মনে করেন ঝ্যাং।
চীনের বক্তারা অবশ্য রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক সমস্যা বা অবিশ্বাসের প্রশ্নটিকে সার্বিকভাবে এড়িয়ে জোর দেন ইতিহাসগত সম্পর্কের ওপর। চীনা গবেষকদের বক্তব্যের বড় অংশ জুড়ে ছিল সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়ানো, চীনের ইতিহাস চর্চায় সে দেশে ও ভারতে ভারতীয়দের ভূমিকা, তাও তে চিং বা ধর্মীয় তাওবাদের অনুবাদ এবং ভারতে তার প্রসার, চীনে রবীন্দ্রচর্চা, ভারতীয় বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের দক্ষিণ চীনের গুয়াংজুতে পদার্পণ অবস্থান ও জ্ঞানচর্চা থেকে চীনের ট্যান পরিবারের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক। বিশ শতকের চীনা পণ্ডিত ট্যান ইয়ুন-শ্যানের সঙ্গে সখ্য রবীন্দ্রনাথের চীন ভ্রমণের অন্যতম কারণ। ১৯৩৭ সালে শান্তিনিকেতনে চীনা ভবন স্থাপনেও বড় ভূমিকা ছিল ট্যানের।
ট্রাম্পের শুল্কনীতি ও ভবিষ্যৎ
চীন-ভারত কাছাকাছি আসার প্রক্রিয়াও সম্ভবত শুরু হয়ে গেল চীনা ভবনের সভার মধ্য দিয়েই। গত এক সপ্তাহে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারত এবং চীনের ওপর যে শুল্ক চাপিয়েছেন, তার জেরেই আগামী দিনে দুই দেশ আরও কাছাকাছি চলে আসবে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। এমনটাই বলছে বিভিন্ন দেশের প্রচারমাধ্যমও।
৮ এপ্রিল দিল্লির চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, ‘পারস্পরিক লাভের ভিত্তিতেই ভারত ও চীনের অর্থনৈতিক এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক এগোবে।’ এরপর মুখপাত্র ইউ জিং যোগ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক অপব্যবহারের নীতি বৈশ্বিক দক্ষিণের (গ্লোবাল সাউথ) উন্নয়নশীল দেশগুলোকে উন্নয়নের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার রাস্তা নিয়েছে। বৈশ্বিক দক্ষিণের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশগুলোর (তার অঞ্চলে) একসঙ্গে দাঁড়ানো প্রয়োজন। চীন–ভারত কাছাকাছি আসাটা তাই হয়তো সময়ের অপেক্ষা।’
ভারত ও চীনের মোট জনসংখ্যা বিশ্বের জনসংখ্যার এক–তৃতীয়াংশের বেশি। দুই বৃহৎ দেশের ভবিষ্যৎ বন্ধুত্বের রাস্তায় হাঁটবে কি না, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই মন্তব্য করেননি দুই দেশের পর্যবেক্ষকেরা। আমেরিকার শুল্কনীতিও সম্মেলন চলাকালীন ঘোষিত হয়নি, ফলে তা নিয়ে কথা বলার অবকাশ ছিল না। তবে ভারতের তরফে দু–একজন চীন বিশেষজ্ঞ যেমন শিব নাদর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জবিন জেকব কয়েকটি অনিশ্চয়তার কথা বলেন।
জেকব বলেন, ‘সীমান্ত সমস্যার পাশাপাশি ভিসা দেওয়া নেওয়ার অনিশ্চয়তা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নজর দেওয়া প্রয়োজন। প্রায় কোনো কাজই হয় না দুই দেশের মানুষে-মানুষে সম্পর্কের বিষয়টি মাথায় রেখে। এটাও খুবই প্রয়োজন। তবে এরপরও পূর্বের অবস্থা অর্থাৎ লাদাখ সংঘর্ষের আগের পরিস্থিতিতে ফিরে যাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।’
এই প্রতিবেদককে এক সাক্ষাৎকারে রঙ্গচারী বলেন, ‘সে সময় দুই দেশ একসঙ্গে নানান পরিকল্পনা করছিল, তা করা যাবে কি না বা কবে করা যাবে, সেটা একটা প্রশ্ন। একেবারে শীর্ষস্তরে বারবার বৈঠক হচ্ছিল। চীনের রাষ্ট্রপতি ভারতের মহাবলিপুরমে এসেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী (দক্ষিণ চীনের) সিয়ামেনে গিয়েছিলেন। সে সময়ও সীমান্ত একেবারে শান্ত ছিল তা নয়, কিন্তু আলোচনা ইতিবাচক ছিল। একটা বিরতির পর এখন আবার কথাবার্তা শুরু হলো। দেখা যাক কী হয়।’
কিছুটা একই কথা বলেন সুধীন্দ্র কুলকার্নি। আরও বেশি করে কথাবার্তা বলা দরকার, যোগাযোগ বাড়ানো দরকার। এর মধ্যে দিয়েই দুই দেশ পরস্পরকে বুঝবে। সহযোগিতার একটা বাতাবরণও তৈরি হবে।
সেই লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপটি সম্ভবত গত সপ্তাহে নিল শান্তিনিকেতনের চীনা ভবন; রবীন্দ্রনাথের চীন সফরের ১০০ বছরকে কেন্দ্র করে; ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি ঘোষণার দিন সাতেক আগে।
শুভজিৎ বাগচী প্রথম আলোর কলকাতা সংবাদদাতা