অভিমত
তথ্য ফাঁসের অজুহাতে বিতর্কিত আইন না হোক
বাংলাদেশে এবারের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের ঘটনাটি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এটি এমন সময়ে ঘটেছে যখন নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে।
বাংলাদেশের ‘লাখ লাখ’ নাগরিকের নাম, ঠিকানা, মুঠোফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, পেশা ইত্যাদি তথ্য সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। এসব তথ্য নাগরিকদের গোপন ব্যক্তিগত তথ্য। সেগুলো সরকারের বিভিন্ন সংস্থাকে বিশেষ প্রয়োজনে দেওয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশে এখনো ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা–সম্পর্কিত বিস্তারিত আইনি কাঠামো নেই। তারপরও ব্যক্তিগত তথ্য যাকে যে উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়, তা সেই উদ্দেশ্য পূরণের বাইরে অন্য কারও ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহার কাঙ্ক্ষিত নয়।
ব্যক্তিগত তথ্য বলতে মানুষের নাম, ঠিকানা, জন্মনিবন্ধন, মুঠোফোন ও পাসপোর্ট নম্বর, আঙুলের ছাপসহ এমন যেকোনো তথ্যকে বোঝায়, যা দিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো একজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা যায়। সর্বশেষ জনশুমারি বলছে, দেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ। বলা যায়, তাঁদের সবার তথ্যই সরকারের কোনো না কোনোর সংস্থার কাছে আছে।
সাম্প্রতিক তথ্য ফাঁসের ঘটনায় কারিগরি ত্রুটি এবং ওয়েবসাইটের দুর্বলতাকে প্রাথমিকভাবে দায়ী করা হচ্ছে। দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে এর বিস্তারিত তদন্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন। তারপরও বিষয়টি সচেতন নাগরিকদের মধ্যে নানান ধরনের উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে।
এ ঘটনা আমাদের দেশের জন্য কিছুটা নতুন। আগে কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সেসব ঘটনায় ভুক্তভোগী মানুষের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম এবং তারা অধিকতর শিক্ষিত শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব করেন। অনুমান করা যায়, সে কারণে ঘটনাগুলো খুব বেশি আলোড়ন সৃষ্টি করেনি। এবারের ঘটনাটি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ।
ঘটনাটি এমন সময় ঘটেছে, যখন পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন সন্নিকটে। ঘটনাটি বর্তমান সরকারের গর্বের জায়গা ডিজিটাল বাংলাদেশ–সম্পর্কিত। প্রায় দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন সম্পন্ন করেছে বলে দৃঢ়ভাবে ঘোষণা দিচ্ছে। পরবর্তী নির্বাচনে জয়ী হলে দেশবাসীকে তারা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ উপহারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
এবারের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির সংখ্যা বিপুল। যে ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, সেগুলো বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষকে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সেবা নিতে অনেকটা বাধ্যতামূলকভাবে দিতে হয়। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কম শিক্ষিত সাধারণ মানুষের তথ্যের অপব্যবহার করে সহজেই আর্থিক প্রতারণার লক্ষ্যবস্তু বানানো সম্ভব।
ডিজিটাল দুনিয়ার জ্বালানি বা মুদ্রা হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত না করে ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পন্ন হয় না। সরকার উপাত্ত সুরক্ষার বিষয়ে একটি আইনের খসড়া ইতিমধ্যে প্রণয়ন করেছে। তাই এ ধরনের আইনের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আলোচনার দাবি রাখে।
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষাবিষয়ক আইন যেকোনো দেশে প্রচলিত অন্য আইনের চেয়ে কিছুটা ব্যতিক্রমী। এ আইনের সঙ্গে সমাজের সবার স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষাবিষয়ক আইনের খসড়া তৈরিতে সমাজের সব স্তরের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ দরকার।
ব্যক্তিগত তথ্য: তখন
মানুষ যেদিন থেকে সমাজবদ্ধ হয়ে চলা শুরু করেছে, সেদিন থেকেই ব্যক্তিগত তথ্যের আদান-প্রদান শুরু হয়েছে। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে মানুষকে কোনো একটি নির্দিষ্ট নেতৃত্বের অধীনে বাস করতে হতো এবং সেই নেতৃত্ব সমাজকে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্যই মূলত সদস্যদের বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করত।
সমাজের সদস্যদের হিসাব রাখার জন্য জন্ম–মৃত্যুর তথ্য যেমন রাখতে হতো, তেমনি জমির খাজনা আদায় এবং অবস্থাসম্পন্ন লোকদের কাছ থেকে কর আদায় করার জন্যও ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতে হতো। তখনো ব্যক্তিগত তথ্যের চূড়ান্ত গোপনীয়তা নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার রীতি ছিল। পাশাপাশি তথ্য বেহাত হওয়া ঠেকাতে শাসকশ্রেণি উদ্যোগ নিত।
ঔপনিবেশিক যুগের অবসানের পর দাসপ্রথার বিলোপ হলে পৃথিবীর ইতিহাসে যতগুলো পরিবর্তন আসে তার মধ্যে ১৭৫০ সালের দিকে ইউরোপে শুরু হওয়া শিল্পবিপ্লব অন্যতম। সমাজের সব স্তরের মানুষের জীবনে বিপ্লবের ব্যাপক প্রভাব পড়ে। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অপরাধের জন্ম হয়, যার সঙ্গে মানুষের পূর্বপরিচয় ছিল না। আগের গ্রাম-সমাজনির্ভর সময়ে মানুষ যখন আত্মীয়-পরিবার-পরিজনবেষ্টিত থাকত, তখন সবাই কমবেশি পরিচিত থাকায় অপরাধের ধরন ছিল ভিন্ন।
শিল্পবিপ্লবের কারণে কারখানাকেন্দ্রিক সমাজব্যবস্থা গড়ে ওঠে। বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দক্ষ শ্রমিকেরা এক জায়গায় এসে জড়ো হতে থাকেন। তখন ছদ্মবেশ ধারণ করে প্রতারণা, শিল্পকারখানার উৎপাদন–সম্পর্কিত তথ্য চুরি ইত্যাদি ধরনের শিল্প অপরাধের সঙ্গে মানুষ পরিচিত হতে শুরু করে।
উদ্ভাবন ও যন্ত্রনির্ভর শিল্পবিপ্লবে প্রথম কারখানাগুলোর মধ্যে বস্ত্রশিল্প অন্যতম। ১৮০১ সালে ফ্রান্সে জোসেফ জ্যাকার্ড নামে একজন বস্ত্রশিল্প প্রস্তুতকারক প্রথম একটি কার্ড উদ্ভাবন করেন, যা এই শিল্পে ব্যবহৃত বিশেষ ধরনের ‘প্যাটার্ন’ ক্রমাগত পুনরাবৃত্তি করতে পারত।
জোসেফ নিজের কারখানার উৎপাদন বাড়াতে এই প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেন। কিন্তু শ্রমিকদের কেউ কেউ এই উদ্ভাবনকে নিজেদের চাকরি ও জীবিকা হারানোর ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করে। কেউ কেউ ‘প্যাটার্ন’ চুরি করতে উৎসাহিত হয়। এভাবেই শিল্প অপরাধের সূচনা হয়, যা মুক্তবাজার অর্থনীতির হাওয়া লেগে বাড়তে থাকে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ–পরবর্তী সময়ে পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রকেন্দ্রিক শীতল যুদ্ধের বাস্তবতায় দেশ গঠন, যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চলের মেরামত এবং নিজেদের আদর্শভিত্তিক অর্থনীতি প্রসারের জন্য সে সময়কার শক্তিধর পশ্চিম ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলো বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দক্ষ, মেধাবী ও সাধারণ শ্রমজীবী লোকদের নিজেদের দেশে আকৃষ্ট করার উদ্যোগ নেয়। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনে সহায়ক বিজ্ঞানপ্রযুক্তিনির্ভর এবং তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণভিত্তিক নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে থাকে। এ রকম সময়েই তৃতীয় শিল্পবিপ্লবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন হিসেবে কম্পিউটার নামক জাদুকরি প্রযুক্তির আবির্ভাব ঘটে, যা চোখের পলকে বিপুলসংখ্যক তথ্য–উপাত্ত প্রক্রিয়া করে নীতিনির্ধারকদের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ করতে সিদ্ধহস্ত।
কম্পিউটার প্রযুক্তির সক্ষমতা এবং দক্ষতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হতে শুরু করে। দেশের নাগরিকেরা এতে সরকারের ওপর খুশি হয়। তবে তারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শুরু হওয়া গণ–অভিবাসনকে নিজেদের জীবিকা ও অস্তিত্বের হুমকি হিসেবে বিবেচনা করতে থাকে। শুরু হয় ক্ষোভ জানানো। ফলে নীতিনির্ধারকেরা নাগরিক ও অধিবাসীদের জন্য কম্পিউটারপ্রযুক্তিনির্ভর তথ্যভান্ডার বা ডেটাবেজ তৈরির উদ্যোগ নেয়। এটা আবার ভিন্ন ধরনের উদ্বেগের জন্ম দেয়।
গোপনীয়তার স্বীকৃতি
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের ফ্যাসিবাদী শাসকেরা সে সময়ের নাগরিক তালিকার ওপর ভিত্তি করে নাম, ঠিকানা খুঁজে খুঁজে বিরোধী মতের ব্যক্তিদের ওপর ব্যাপক দমন–পীড়ন চালাত। নৃশংস ও ভয়াবহ ঘটনাগুলো বেঁচে যাওয়া মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে যায়নি। এ কারণেই জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার পরেই সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র (১৯৪৮) এবং আমেরিকা ও ইউরোপের আঞ্চলিক মানবাধিকার সনদে গোপনীয়তার অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার বিষয়টি যেকোনো সার্বভৌম রাষ্ট্রের সরকারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু সদ্য অতীতের স্মৃতি তখনো তাজা। তাই সাধারণ মানুষ এই আশঙ্কা ও উপলব্ধি করে যে, নাগরিক তালিকা ব্যবহার করে সরকারগুলো রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অজুহাতে দেশীয় সীমানার মধ্যে বসবাসকারী লোকজনকে ক্রমাগত নজরদারির মধ্যে রাখতে পারে, তাদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করতে পারে, যা আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক মানবাধিকার দলিলগুলোয় স্বীকৃত অধিকারের লঙ্ঘন।
কম্পিউটারে তৈরি করা নাগরিক তালিকার তথ্যভান্ডারের অপব্যবহার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের আশঙ্কা বাড়ানো ছাড়া কমাবে না, এটা জানা ছিল। এ রকম প্রেক্ষাপটেই একজন সাধারণ নাগরিকের সম্মান ও মর্যাদাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পশ্চিমা সমাজে ১৯৬৫–পরবর্তী সময়ে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনের প্রচলন শুরু হয়।
শুরু জার্মানিতে
১৯৭০ সালে জার্মানির হেসেন প্রদেশ প্রথম ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা সম্পর্কিত আইন প্রণয়ন করে। দেশ হিসেবে ১৯৭৩ সালে সুইডেন ও ১৯৭৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের আইন করে। এরপর অন্যান্য দেশ এ তালিকায় যোগ দেয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বের প্রায় ১৭০টি দেশ এ বিষয়ে আইন তৈরি করেছে।
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষাবিষয়ক আইন যেকোনো দেশে প্রচলিত অন্য আইনের চেয়ে কিছুটা ব্যতিক্রমী। এ আইনের সঙ্গে সমাজের সবার স্বার্থ জড়িত থাকে। তাই ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষাবিষয়ক আইনের খসড়া তৈরিতে সমাজের সব স্তরের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ দরকার।
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষাবিষয়ক আইন করার সময় বিভিন্ন দেশ অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি করেছে। কমিটির সদস্যরা মানবাধিকার, আইনশৃঙ্খলা, আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক, আর্থিক ও ব্যবসায়িক দিকসহ নানা বিষয় বিবেচনায় নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা করেছে। এরপর একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে তা জনগণের মতামতের জন্য উন্মুক্ত করেছে। জনগণ মতামত দিলে তার ভিত্তিতে কমিটি আইনের একটি খসড়া প্রস্তাব করে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন এমনকি সম্প্রতি ভারতও একই প্রক্রিয়ায় কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষাবিষয়ক আইন করার আগে সেখানকার জনপ্রতিনিধিরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে কমিটিতে অবশ্যই শিক্ষাবিদদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ইউরোপে বিভিন্ন দেশ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বিষয়টির ওপর সম্মেলনের আয়োজন করে।
ভারতও ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইনের বিষয়ে কমপক্ষে দুটি কমিটি গঠন করেছে। সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি বি এন শ্রীকৃষ্ণার সভাপতিত্বে ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। আরেকটি কমিটি ৩০ সদস্যবিশিষ্ট উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সংসদীয় কমিটি। প্রথম কমিটি ২১৩ পাতার একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যা অনলাইনে পাওয়া যায়।
ভারত এখনো ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন করেনি। কিন্তু প্রতিবেদনটি দেখলে বোঝা যাবে, কেন এ ধরনের আইন প্রণয়ন করার আগে ব্যাপক গবেষণা করতে হয়। কমিটির প্রতিবেদন দেখলে বোঝা যাবে খসড়া আইনের বিভিন্ন বিধান প্রস্তাব করার সময় কমিটি কোন কোন বিষয় বিবেচনায় নিয়েছে।
বাংলাদেশে ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা
ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষাবিষয়ক আইন তিনটি বড় প্রজন্ম পার হয়ে বর্তমান অবস্থায় এসেছে। এদিকে এখন বাংলাদেশ ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন করছে। আইনটির খসড়ার একাধিক সংস্করণ প্রকাশ করা হয়েছে। সর্বশেষ সংস্করণে থাকা বিধিবিধান নিয়েও অংশীজনদের ব্যাপক উদ্বেগ আছে। তাদের আশঙ্কা, বিরোধী মত দমনে ব্যবহার ও ব্যবসার ক্ষতি হতে পারে, এমন ধারা আইনটিতে রয়ে গেছে।
বাংলাদেশে উপাত্ত সুরক্ষা আইনের খসড়া করেছেন গুটিকয়েক ব্যক্তি। খসড়া করার আগে কোনো গবেষণা অথবা প্রতিবেদন প্রস্তুত করার কথা জানা নেই। ফলে অসংগতি থাকছেই। বিতর্কও তৈরি হচ্ছে।
বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেশের বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের নিয়ে কমিটি করে, বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরি করেই কেবল ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা আইন করা উচিত। তথ্য ফাঁসের অজুহাত দেখিয়ে এমন কোনো আইন করা ঠিক হবে না, যেটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো বিতর্কিত হবে।
মুহাম্মদ এরশাদুল করিম মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার আইন ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক