গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে উল্লেখ করে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, সেই কারণে এখন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানের প্রস্তাব আসছে। ৩ ডিসেম্বর রাজধানীতে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) আয়োজিত ‘এনার্জি ট্রানজিশন: গ্লোবাল কনটেক্সট অ্যান্ড বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেছেন। (সূত্র: গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে: নসরুল হামিদ, ৩ ডিসেম্বর ২০২২, ডেইলি স্টার অনলাইন বাংলা)।
আন্তর্জাতিক বাজারে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজির মূল্যবৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশে জ্বালানি-সংকট তীব্র হয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করার জন্য সরকার এলএনজি আমদানি কমাতে বাধ্য হয়েছে। এ কারণে শিল্প, বিদ্যুৎ, আবাসনসহ সব খাতে গ্যাস সরবরাহ কমে গিয়ে সংকট ঘনীভূত হয়েছে। এ রকম একটি প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী যখন বলেন, গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে, তখন বিষয়টি যথাযথ ব্যাখ্যা ও বিচার-বিশ্লেষণের দাবি রাখে।
তার আগে দেখা যাক, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ঠিক কী বলেছেন, ‘গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। কারণ, এখন আমাদের কাছে ডিপ সিতে (গভীর সমুদ্রে) এক্সপ্লোরেশনের জন্য অফার আসছে। আগে কোনো পার্টিই পাওয়া যায়নি। বদরূল ইমাম সাহেব ডেইলি স্টারে একটা মতামতে বলছেন যে কেন আমরা ডিপ সিতে এক্সপ্লোরেশনে গেলাম না তখন। কোনো পার্টিই তো ছিল না তখন। আমরা টেন্ডার দিয়েছি, কেউ আসেইনি।...কারণ সে সময়ে গ্যাসের দাম অনেক কম ছিল।’ (সূত্র: গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে: নসরুল হামিদ, ৩ ডিসেম্বর ২০২২, ডেইলি স্টার অনলাইন বাংলা)।
মাননীয় জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর এ বক্তব্য থেকে দেখা যাচ্ছে, সাগরের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য বাংলাদেশ বিদেশি কোম্পানির ওপর এমনভাবে নির্ভরশীল যে বিদেশি কোম্পানি আগ্রহ না দেখালে বাংলাদেশের পক্ষে সাগর থেকে গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নেওয়াই সম্ভব নয়। এত দিন গ্যাসের দাম কম ছিল বলে বিদেশি কোম্পানি আগ্রহ দেখায়নি, আর এখন গ্যাসের দাম বেশি থাকার কারণে বিদেশি কোম্পানি আগ্রহ দেখাচ্ছে; আর এ কারণেই তিনি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিকে বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আসলে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলে গত এক দশকে সাগর থেকে গ্যাস উত্তোলনে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ না নেওয়ার দায় এড়াতে চেয়েছেন। আমাদের মনে আছে, আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে ২০১২ সালে মিয়ানমার এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তির পর ‘সমুদ্র বিজয়ের’ উৎসব উদ্যাপন করেছিল সরকার। তারপর বহু বছর পেরিয়ে গেলেও ‘জয় করা’ সমুদ্রসীমার গ্যাস ব্লকগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলনের কোনো খবর নেই।
বাংলাদেশ যখন হাজার হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করেছে, মিয়ানমার তখন বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন গ্যাস ব্লকে অনেকগুলো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে গ্যাস ব্লক এডি-সেভেনের আওতায় থালিন গ্যাসক্ষেত্র, ব্লক এ ওয়ানের আওতায় শি এবং শি পিউ গ্যাসক্ষেত্র, ব্লক এ থ্রি-এর আওতাধীন মিয়া এবং মাহার গ্যাসক্ষেত্র ইত্যাদি। (সূত্র: ‘উডসাইড ডিসকভারস গ্যাস অ্যাট থালিন-ওয়ান ও ওয়েল অফশোর মিয়ানমার’, নিগজোন, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬; ‘শিউ ন্যাচারাল গ্যাস প্রজেক্ট’, অফশোর টেকনোলজি, ২০ জানুয়ারি, ২০১৫) মিয়ানমারের সমুদ্রসীমায় যদি গ্যাস পাওয়া যায়, তাহলে তার পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশের ব্লকগুলোতে গ্যাস না পাওয়ার কারণ নেই। প্রয়োজন ছিল শুধু জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের যথাযথ উদ্যোগ।
গ্যাসের দাম কম থাকায় বিদেশি কোম্পানি আগ্রহ দেখায়নি বলে সাগরের গ্যাস উত্তোলন না হওয়ার যে কারণ দেখালেন জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, তা গ্রহণযোগ্য হতো, যদি সাগরের তেল-গ্যাস উত্তোলনের আর কোনো বিকল্প না থাকত। বিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগের আশায় যতগুলো বছর নষ্ট করা হয়েছে, বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির জন্য যত হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে, সেই সময় ও অর্থের একটা অংশ যদি সাগরের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে জাতীয় সক্ষমতা তৈরির কাজে ব্যবহার করা হতো, তাহলে আজকে বাংলাদেশকে বিদেশি কোম্পানির ব্ল্যাকমেলের শিকার হতে হতো না। বেশি দাম দিয়ে এবং রপ্তানির সুযোগ দিয়ে হলেও বিদেশি কোম্পানিকে সাগরের গ্যাস উত্তোলনে বিনিয়োগের জন্য আগ্রহী করে তোলার তৎপরতা চালাতে হতো না। (সূত্র: আইওসিএস ক্যান নাউ এক্সপোর্ট গ্যাস, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ডেইলি স্টার)।
যেভাবে নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও পরামর্শকদের ঠিকাদার হিসেবে কাজে লাগিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ, একই ভাবে ‘সমুদ্র বিজয়ের’পর পরই যদি জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের কর্তৃত্বে সাগরের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য ঠিকাদারি ভিত্তিতে বিভিন্ন সার্ভিস কোম্পানি ভাড়া করে কাজ শুরু করা হতো, তাহলে এত দিনে আমরা সাগরের গ্যাসের সুফল ভোগ করতে পারতাম এবং তা পাওয়া যেত এলএনজি আমদানির পেছনে যত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করা হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম খরচেই।
সাগরের তেল-গ্যাস উত্তোলনে বাংলাদেশের নিজস্ব দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা নেই, স্থলভাগে আছে। কিন্তু যাদের সাগরে গ্যাস উত্তোলনে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা আছে তাদের ঠিকাদার হিসেবে নিয়োগ করে সাগরের গ্যাস উত্তোলনের উদ্যোগ নিলে পদ্মা সেতু নির্মাণ কিংবা এলএনজি আমদানির চেয়ে বহুগুণ কম খরচে মূল্যবান গ্যাস উত্তোলন করা যেত। তাতে করে বিদেশি কোম্পানিকে ঠিকাদারির জন্য অর্থ দিতে হলেও গ্যাসের মালিকানা বা গ্যাস ক্ষেত্রের কর্তৃত্ব দিতে হতো না। বিদেশ থেকে ব্যয়বহুল এলএনজিও আমদানি করতে হতো না। বস্তুত যেসব বড় বড় বিদেশি কোম্পানি সাগরের গ্যাস উত্তোলন করে তারাও নিজেরা সব কাজ করে না, ঠিকাদারদের মাধ্যমেই অনেক কারিগরি কাজ করায়।
প্রযুক্তির অভাবের কথা বলে বাংলাদেশে এ যাবৎ যেসব বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি করেছে, তারাও বিদেশি ঠিকাদার দিয়েই কাজ করেছে। যেমন অগভীর সমুদ্রের ১৬ নম্বর গ্যাস ব্লকে অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক বহুজাতিক সান্তোস ‘অফশোর রেজ্যুলিউট’রিগটি ভাড়া করেছিল নেদারল্যান্ডসের কোম্পানি সি-ড্রিলের কাছ থেকে। (সূত্র: ‘সিড্রিল রিগ বুকড ফর বাংলাদেশ’, অফশোর, ৭ জুন ২০১১) জনপ্রতিবাদ সত্ত্বেও যে কনোকো-ফিলিপসকে সাগরের ১০ ও ১১ নম্বর ব্লক ইজারা দেওয়া হয়েছিল, সেই কোম্পানিও সাগরের গ্যাস অনুসন্ধানে দ্বিমাত্রিক সিসমিক সার্ভের জন্য চীনা কোম্পানি বিজিপিকে ভাড়া করেছিল। (সূত্র: ‘চাইনিজ ফার্ম টু এক্সপ্লোর অয়েল, গ্যাস’, বিডিনিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট কম, ১২ ডিসেম্বর, ২০১১) ভারতীয় কোম্পানি ওএনজিসি বাংলাদেশের অগভীর সমুদ্রে গ্যাস কূপ খননের জন্য কন্ট্রাক্টর হিসেবে ভাড়া করেছে চীনা কোম্পানি সিনোপ্যাককে আর সিনোপ্যাক সাবকন্ট্রাক্টর হিসেবে ভাড়া করেছে মার্কিন কোম্পানি হেলিবার্টনকে। (সূত্র: ‘সিনোপ্যাক, হ্যালিবার্টন লঞ্চ স্পাড ড্রিলিং ইন অনশোর ব্লক-এসএস-০৪ ’, ইউএনবি, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১) ।
কাজেই বাপেক্সের পক্ষে স্থলভাগে গ্যাস উত্তোলনের দক্ষতা ব্যবহার করে, সার্ভিস কন্ট্রাক্ট পদ্ধতিতে রিগ ও যন্ত্রপাতি ভাড়া করে, সাগরের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলন তদারকি অসম্ভব বিষয় নয়। অনেক সময় যুক্তি দেওয়া হয়, তেল-গ্যাস উত্তোলন কাজে ‘বিপুল অর্থ’প্রয়োজন। তেল-গ্যাস পাওয়া না গেলে পুরো অর্থই নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। উৎপাদন অংশীদারি চুক্তিতে যেহেতু এই ঝুঁকিটা বিদেশি কোম্পানিই বহন করে, তাই বাংলাদেশের মতো ‘দরিদ্র’দেশের পক্ষে বিদেশি কোম্পানিকে তার খরচের জন্য কস্ট রিকভারি গ্যাস এবং ঝুঁকির পুরস্কার হিসেবে প্রফিট গ্যাস দিয়ে হলেও এ ধরনের চুক্তি করা লাভজনক।
এই যুক্তিটিও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের কাজে একবারেই সব অর্থ ব্যয় করে না কোম্পানিগুলো। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও সিসমিক জরিপ করে দেখে, গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু। জরিপে ইতিবাচক ফল মিললেই কেবল অনুসন্ধান কূপ খনন করে। অনুসন্ধান কূপ খননের আগ পর্যন্ত গ্যাস প্রাপ্তি ও পরিমাণ বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায় না বলে কিছুটা ঝুঁকি থাকেই। কিন্তু খনিজসম্পদ অনুসন্ধান করতে হলে এইটুকু ঝুঁকি নিতেই হবে। ঝুঁকি যে নেবে, প্রাপ্তি তারই হবে।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্স যদি এই ঝুঁকি না নেয়, তাহলে প্রাপ্তিটাও বাপেক্সের জুটবে না। এই প্রয়োজনীয় ঝুঁকিটা না নিলে হয় দেশের গ্যাস বিদেশি কোম্পানির কাছ থেকে আন্তর্জাতিক বাজারের কাছাকাছি দামে ক্রয় করা, এমনকি বিদেশে রপ্তানির অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে অথবা বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করে বিদেশ থেকে এলএনজি আকারে আমদানি করতে হবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য আরও বড় ঝুঁকি তৈরি করে।
তেল-গ্যাস উত্তোলনে এই আর্থিক ঝুঁকিটুকু নেওয়া লাভজনক বলেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলো দেশে দেশে উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তির জন্য মুখিয়ে থাকে। এভাবে ঝুঁকি নেওয়া লাভজনক বলেই বাংলাদেশের মডেল পিএসসি ২০১২ সালের আওতায় ভারতীয় রাষ্ট্রীয় কোম্পানি ওএনজিসি অগভীর সমুদ্রের ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে ১০ কোটি ৩২ লাখ ডলার বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করে যা বর্তমানে বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ৩২ কোটি টাকা। (সূত্র: ‘ওএনজিসি সাইনস কনট্রাক্টস টু এক্সপ্লোর ফর অয়েল, গ্যাস অফ বাংলাদেশ’, মিন্ট, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪) বহুজাতিক কোম্পানি কিংবা বিদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান যদি ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করতে পারে, তাহলে নিজ দেশের গ্যাস সম্পদ উত্তোলনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কেন তা পারবে না? বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আকার, তাতে গ্যাস অনুসন্ধানে প্রতিবছর গড়ে কয়েকশ কোটি টাকা বিনিয়োগ তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।
গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের কাজে একবারেই সব অর্থ ব্যয় করে না কোম্পানিগুলো। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও সিসমিক জরিপ করে দেখে, গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু। জরিপে ইতিবাচক ফল মিললেই কেবল অনুসন্ধান কূপ খনন করে। অনুসন্ধান কূপ খননের আগ পর্যন্ত গ্যাস প্রাপ্তি ও পরিমাণ বিষয়ে শতভাগ নিশ্চিত হওয়া যায় না বলে কিছুটা ঝুঁকি থাকেই। কিন্তু খনিজসম্পদ অনুসন্ধান করতে হলে এইটুকু ঝুঁকি নিতেই হবে।
২০১৮-১৯ থেকে ২০২১-২২ এই চার অর্থবছরে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিতে ব্যয় করা হয়েছে ৮৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আর রাষ্ট্রায়ত্ত তেল-গ্যাস অনুসন্ধান প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে একই সময়ে স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনের জন্য অর্থ প্রদান করা হয়েছে মাত্র ১ হাজার কোটি টাকা। (সূত্র: ‘অনুসন্ধানে বাপেক্স পেয়েছে ১ হাজার কোটি, আমদানিতে ৮৫ হাজার কোটি টাকা’, বণিক বার্তা, ২৯ আগস্ট, ২০২২)
এলএনজি আমদানিতে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে তার একটা ভগ্নাংশও যদি জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সর মাধ্যমে প্রয়োজনে সার্ভিস কন্ট্রাক্ট মডেলে বিদেশি কোম্পানি ও কনসালট্যান্ট ভাড়া করে সাগরের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে ব্যয় করা হতো, তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির মতো ভয়ংকর ‘আশীর্বাদের’জন্য অপেক্ষা করে দেশের অর্থনীতির ওপর বোঝা বাড়াতে হতো না। কাজেই বিদেশি কোম্পানির বিনিয়োগের আশায় বসে না থেকে সরকারের উচিত হবে জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের মাধ্যমে সাগরের গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া।
কল্লোল মোস্তফা লেখক ও প্রকৌশলী, সর্বজনকথা সাময়িকীর নির্বাহী সম্পাদক