১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর জাতিসংঘের ১৮১ নম্বর প্রস্তাবের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে নির্ধারিত অঞ্চল নিয়ে ১৯৪৮ সালের ১ আগস্টের পর ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে যুক্তরাজ্যের ম্যান্ডেট (প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লিগ অব নেশন কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত) শেষ হলে একসময়ের ওসমানীয় সাম্রাজ্যের ফিলিস্তিন অঞ্চল ভাগ হয়ে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল প্রতিষ্ঠিত হবে।
এ অঞ্চল একসময় ছিল ফিলিস্তিনিদের বাসভূমি, যেখানে আরম (ফিলিস্তিন) মুসলমান, খ্রিষ্টান এবং ইহুদিদের বাসস্থান ছিল। ওই প্রস্তাব অনুযায়ী ফিলিস্তিনি আরব ও ইহুদিদের জন্য পৃথক আবাসভূমি এবং তিন ধর্ম—ইসলাম, খ্রিষ্টান এবং ইহুদিধর্মের কাছে পবিত্র নগরী হিসেবে হাজার হাজার বছরের পুরোনো শহর জেরুজালেম আন্তর্জাতিক নগরী হিসেবে বিদ্যমান থাকবে। ১৯৪৮ সালের ১ আগস্ট যুক্তরাজ্যের ম্যান্ডেট শেষ হলে দুই মাসের মধ্যে এই নতুন দুটি দেশ গঠিত হবে।
ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত পটভূমি এটাই। যেহেতু ওই সময়ে ফিলিস্তিনিদের কোনো স্বীকৃত আলাদা প্রতিনিধি জাতিসংঘে ছিল না বা থাকার কথাও নয়, শুধু মিসর স্বীকৃত প্যালেস্টাইন আরব লিগের হাজি আমিন আল হুসাইনি বিরোধিতা করে বলেছিলেন যে ইসরায়েল জন্ম নিলে ফিলিস্তিনের ভূমিতে রক্তগঙ্গা বইতে থাকবে। যা–ই হোক, মোট উপস্থিত রাষ্ট্রের ৩৩টি পক্ষে, ১৩টি বিপক্ষে এবং ১০টি দেশ ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল।
কাজেই সহজেই প্রস্তাব গৃহীত হয়। ওই সময় জাতিসংঘের সদস্যসংখ্যা ছিল ৫৭। এটাই ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর নবগঠিত জাতিসংঘের প্রথম বড় এবং ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। যে ১৩টি দেশ বিপক্ষে ভোট দিয়েছিল, তাতে ভারতসহ তিনটি দেশ ছিল অমুসলিম দেশ। বাকি ১০টি ছিল আরব রাষ্ট্রগুলোসহ অন্য মুসলমানপ্রধান দেশ।
জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী ইসরায়েল রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীন হওয়ার কথা ছিল ম্যান্ডেট শেষ হওয়ার দুই মাস পরে। কিন্তু তৎকালীন ইসরায়েলি নেতা ডেভিড বেন গোরিয়ান ১৯৪৮ সালের ১৪ মে অর্থাৎ ম্যান্ডেট শেষ হওয়ার আগেই পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতা ঘোষণার পরদিন ১৯৪৮ সালের ১৫ মে সম্মিলিত আরব বাহিনী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ওই যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন তৎকালীন ট্রান্স জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহ।
তিনি জর্ডানের বর্তমান বাদশাহ আবদুল্লাহর প্রপিতামহ। তাঁর নেতৃত্বে ট্রান্স জর্ডান বাহিনী জর্ডান নদীর সম্পূর্ণ পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেম, বিশেষ করে ধর্মীয় নিরিখে গুরুত্বপূর্ণ জেরুজালেমের অংশগুলো দখলের পর বিশেষ কোনো কারণ ছাড়াই মিসরীয় বিমানবাহিনীর অসহযোগিতার অজুহাতে হঠাৎ অভিযানের ইতি টেনেছিল। তা না হলে পুরো জেরুজালেমসহ আরও অংশ জর্ডানের দখলে নিয়ে আসতে পারতেন।
অপরদিকে ওই সময় আরব বিশ্বের সবচেয়ে বড় শক্তি মিসর গাজা ভূখণ্ড দখল করেই যুদ্ধবিরতিতে যায়। যদিও যুদ্ধাবস্থা বজায় থাকে ১৯৪৯ সালের ১০ মার্চ পর্যন্ত। এ ছাড়া বাকি অংশ ইসরায়েলের দখলে চলে যায়, যা জাতিসংঘের ভাগাভাগি নকশার অতিরিক্ত। অন্যান্য বাহিনী যার মধ্যে সিরিয়া, ইরাক, সম্মিলিত ফিলিস্তিনি ও অন্যান্য বাহিনী ওই যুদ্ধে সুবিধা করতে পারেনি। স্মরণযোগ্য যে ওই সময় মিসরের রাষ্ট্রীয় প্রধান ছিলেন বহুল আলোচিত বাদশা ফারুক।
ইতিহাস বলে, ওই যুদ্ধে ট্রান্স জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর হঠকারিতার কারণে পুরো জেরুজালেম এবং তার বাইরের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড হাতছাড়া হয়ে যায়। অপরদিকে বাদশাহ ফারুক গাজা দখলের পর আর এগোয়নি। এ প্রসঙ্গে ইসরায়েলের পরবর্তী সময়ের প্রধানমন্ত্রী মিসেস গোল্ডা মেয়ার তাঁর আত্মজীবনী মাই লাইফ–এ লিখেছেন, যুদ্ধের এমনকি ইসরায়েলের স্বাধীনতা ঘোষণার আগেই ট্রান্স জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে ইসরায়েলের একটি মৌখিক গোপন চুক্তি হয়, যার কারণে আবদুল্লাহ তাঁর বাহিনীর অগ্রযাত্রা থামিয়ে দিয়েছিলেন।
স্মরণযোগ্য যে ফিলিস্তিনিরা বাদশাহ আবদুল্লাহর এই ‘হঠকারিতা’ এবং পূর্ব তীরকে একীভূত করার বিষয়টি সহজে মেনে নেয়নি। ধারণা করা হয়, এর ফলে ১৯৫১ সালের ২০ জুলাই জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে জুমার নামাজ শেষে ২১ বছর বয়সী জেরুজালেমের বাসিন্দা মোস্তাফা শুকরি আসুসু নামক যুবকের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২১ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ওই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন শিশু-নাতি হুসাইন, বর্তমান বাদশাহর পিতা।
ওই সময় বস্তুতপক্ষে ইসরায়েল একাই সম্মিলিত আরব বাহিনীকে ঠেকিয়েছিল। ওই যুদ্ধের জেরে অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ড থেকে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের উৎখাত করা হয়। ফিলিস্তিন থেকে উৎখাত হয়ে তারা মিসরের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূখণ্ড গাজায় বসতি স্থাপন করে, ফিরে যাওয়ার আশায়।
অবশ্য ১৯৬৭ সালে ছয় দিনের তৃতীয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল গাজা, পূর্ণ জেরুজালেমসহ সম্মিলিত আরব বাহিনীকে পরাজিত করে সম্পূর্ণ পশ্চিম তীর এবং সিরিয়ার অন্যতম ভূকৌশলগত উচ্চ ভূমি গোলান মালভূমি পুনর্দখল করে। পরে প্রথম অসলো ও দ্বিতীয় অসলো চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েল পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ড পিএলওর হাতে ছেড়ে দিলেও জেরুজালেমের পূর্বাঞ্চল দখলে রাখে।
গাজা ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি নেতা ও পশ্চিম তীরের প্রশাসক মাহমুদ আব্বাস তথা ফাতাহর কোনো প্রভাব নেই এবং হামাস থাকা অবস্থায় প্রভাব থাকবেও না। হয়তো এ কারণেই ফাতাহপ্রধান মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, হামাস সমগ্র ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্বও করে না এবং পিএলও এর অংশ নয়। বর্তমান যুদ্ধকালেও হামাসের সঙ্গে প্রথম থেকেই মাহমুদ আব্বাস দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন।
প্রকৃতপক্ষে শুধু দখলেই নয়, অসলো চুক্তি বরখেলাপ করে দুই দেশ নীতি বাস্তবায়ন ছাড়াই ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে অবৈধ বসতি তৈরি করা অব্যাহত রাখে। তারা অবরুদ্ধ করেছে জেরুজালেমের মুসলমানদের ধর্মীয় স্থান এবং মুসলিম বসতিগুলো। আল–আকসা মসজিদ ঘিরে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি অভ্যুত্থান হয়েছে এবং বিভিন্ন সময়ে মুক্তিকামী ফিলিস্তিনিদের ওপর পাশবিক ও অমানবিক হামলার ঘটনা ঘটছে।
গাজার প্রায় ৩৬৫ বর্গকিলোমিটার ছোট্ট এলাকায় ২২ লাখ ফিলিস্তিনিদের বাস, যাদের সিংহভাগ ইসরায়েল থেকে উৎখাত হওয়া উদ্বাস্তুদের বংশধর। গাজা মূল পশ্চিম তীর থেকে বিচ্ছিন্ন। মিসরের রাফাহ পারাপারের একমাত্র বৈধ পথ। গাজার উত্তর-পূর্বে ভূমধ্যসাগরের তট হলেও সম্পূর্ণ সমুদ্রতট ইসরায়েলের তত্ত্বাবধানে।
গাজা হামাস দ্বারা পরিচালিত হলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, বিদ্যুৎ, পানি এমনকি খাদ্য ও ওষুধের জন্য ইসরায়েলের ওপরই নির্ভর করতে হয়। কারণ ২০০৭-এর নির্বাচনের পর থেকে ফাতাহ নয়, গাজাতে হামাসের রাজনৈতিক উত্থান হয় এবং আজ পর্যন্ত হামাসের দখলেই রয়েছে।
হামাসের সদর দপ্তর রয়েছে উত্তর গাজায়। সেখানেই প্রায় অর্ধেক জনগণের বাস। বিভিন্ন সময়ে গাজাবাসীকে মিসর ও ইসরায়েলের অবরোধের মধ্যে থাকতে হয়েছে। হামাসের জন্ম হয় ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে শেখ আহমেদ ইয়াসিন এবং আবদেল আজিজ আলি মাজিদ আল বানটিসির যৌথ নেতৃত্বে। অনেক সমালোচকের মতে ফিলিস্তিন মুক্তি সংস্থা পিএলওর পাল্টা হিসেবে এই সুন্নি ফিলিস্তিনিদের এই সংগঠন তৈরির পেছনেও ইসরায়েলিদের, বিশেষ করে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত রয়েছে।
বলা হয়, পশ্চিম তীর এবং গাজায় পিএলও, ফাতাহ এবং তৎকালীন নেতা প্রয়াত ইয়াসির আরাফাতের প্রভাবকে খর্ব করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। আজও হামাসের সঙ্গে ফাতাহ তথা পিএলওর সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি।
গাজা ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি নেতা ও পশ্চিম তীরের প্রশাসক মাহমুদ আব্বাস তথা ফাতাহর কোনো প্রভাব নেই এবং হামাস থাকা অবস্থায় প্রভাব থাকবেও না। হয়তো এ কারণেই ফাতাহপ্রধান মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, হামাস সমগ্র ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্বও করে না এবং পিএলও এর অংশ নয়। বর্তমান যুদ্ধকালেও হামাসের সঙ্গে প্রথম থেকেই মাহমুদ আব্বাস দূরত্ব বজায় রেখে চলেছেন।
যা–ই হোক হামাস ইসরায়েলের তৈরি হয়ে থাকলেও ক্রমেই নির্যাতিত ফিলিস্তিনি এবং ইসরায়েল বিরোধীদের অত্যন্ত কার্যকর প্রতিনিধি হয়ে ওঠে। ইসরায়েলের বিরোধিতায় তারা সশস্ত্র ভূমিকা নেওয়া শুরু করার পর হামাসের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম শেখ ইয়াসিন এবং আল–মাজিদকে ইসরায়েলিরা হত্যা করে।
ফিলিস্তিনি প্রশাসনের একসময়ের প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল হানিয়া বর্তমানে হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সশস্ত্র গোষ্ঠীর নেতৃত্ব অন্য কারও হাতে। হামাসকে ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকায় রেখেছে। কাজেই হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের দেশগুলোও।
১৯৭৩ সালের ৬ অক্টোবর সংগঠিত চতুর্থ আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের নাম ‘ইয়াম কিপুর ওয়ার’। ওই দিনটিতেই এবার নিপীড়িত গাজাবাসী তথা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ‘অপারেশন আল–আকসা ফ্লাড’ নামে যে কৌশলে, গোপনীয়তায় এবং উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে ইসরায়েলের দখল করা অঞ্চল এবং সীমানার ভেতরে আক্রমণ করেছে তাতে হতবাক হয়েছে বিশ্ববাসী।
ইসরায়েল এযাবৎকালে এত ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। এ হামলায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ১ হাজার ৪০০–এর বেশি ইসরায়েলি প্রাণ হারিয়েছেন। যার মধ্যে ২৭৯ জন সামরিক সদস্যও রয়েছেন। জিম্মি হিসেবে হামাস যোদ্ধারা প্রায় ১৯৯ জনকে জিম্মি করেছে। তাদের মধ্যে একজন ইসরায়েলি জেনারেলও রয়েছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এবার হামাস যে রকেট হামলা চালিয়েছে, তা ইসরায়েল আগে দেখেনি।
এর প্রতিক্রিয়ায় প্রায় সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ইসরায়েল পূর্ণ শক্তিতে বিমান হামলা চালিয়ে কথিত হামাসের ঘাঁটি সন্দেহে উত্তর গাজার একাংশকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। উত্তর গাজা থেকে বেসামরিক নাগরিকদের দক্ষিণে যাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে হাসপাতালে হামলার মতো বর্বর ঘটনা ঘটিয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রের খবর অনুযায়ী বিগত কয়েক বছরে বিশ্বে অত্যন্ত চৌকস ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে ফাঁকি দিয়ে হামাস যে সুড়ঙ্গ শহর-ঘাঁটি তৈরি করেছে, তা ধ্বংস করতে ইসরায়েলকে শহরকেন্দ্রিক যুদ্ধে নামতে হবে। এ ধরনের যুদ্ধ অত্যন্ত জটিল, বিশেষ করে তা যদি হয় এ ধরনের দারুণ প্রশিক্ষিত মরণপণ গেরিলাদের বিরুদ্ধে। উভয় পক্ষের প্রচুর হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে।
হামাসের অত্যন্ত সাহসী এই পদক্ষেপ সমগ্র মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে ওই অঞ্চলকে পুনরায় দারুণভাবে উত্তপ্ত করেছে। ইতিমধ্যে ইয়েমেনের হুতিরা একাত্মতা ঘোষণা করেছে।
অপরদিকে ইরান–সমর্থিত দক্ষিণ লেবানন এবং উত্তর ইসরায়েল–সংলগ্ন অঞ্চলে হিজবুল্লাহ বাহিনী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করলে এ সংঘাত আরও বিস্তৃত হতে পারে। অপরদিকে সিরিয়ায় যুদ্ধরত ইরান–সমর্থিত বাহিনী এবং ইসলামিক জিহাদও সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় ইসরায়েল মাঝেমধ্যে সিরিয়ায় গোলাবর্ষণ করছে। হামাস এ যুদ্ধের ফলাফল জেনেই মাঠে নেমেছে।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কথিত ‘আব্রাহাম চুক্তি’–এর আওতায় সৌদি আরব ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনে যে পদক্ষেপ নিতে চলেছিল, তা থমকে গেছে। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী হামাস তথা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে দেশে দেশে জনসমাবেশ, মিটিং-মিছিল অব্যাহত রয়েছে। চীন-রাশিয়া ফিলিস্তিনিদের পক্ষে থাকলেও কূটনৈতিক বিবৃতি ছাড়া বড় পদক্ষেপ এখনো নেয়নি। ইরান সরাসরি হামাসের সমর্থনে রয়েছে।
যা–ই হোক, বছরের পর বছর ফিলিস্তিনিদের ওপর যে অত্যাচার ও অবিচার জায়ানবাদী ইসরায়েল চালিয়ে যাচ্ছে, তার অবসান হতে হবে। এবং যত দ্রুত সম্ভব দুই রাষ্ট্রের বাস্তবায়ন করাই হয়তো আপাতত এর সমাধান হতে পারে। অন্যথায় বিশ্ব আরও রক্তক্ষয়, হানাহানি প্রত্যক্ষ করবে এবং নির্যাতিত রাষ্ট্রহীন একটি জাতি আরও নির্যাতিত হবে।
● ড. এম সাখাওয়াত হোসেন নির্বাচন বিশ্লেষক, সাবেক সামরিক কর্মকর্তা এবং এসআইপিজির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো (এনএসইউ)