সাহিত্যে নোবেল জয়ের পরপরই মার্কিন কবি লুইস গ্লুকের মুখোমুখি হয়েছিল ‘নিউইয়র্ক টাইমস’। পত্রিকাটির পক্ষ থেকে আলেকজান্দ্রা এলটার গ্লুকের মুখোমুখি হন। সদ্য নোবেল পাওয়ার পর দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে বিস্ময়াভিভূত গ্লুক বলেছেন অনেক কিছু। অনুবাদ করেছেন মেহেদী হাসান।
‘আমি খুবই সামাজিক ব্যক্তি। সাক্ষাৎকার দেওয়ায় অনাগ্রহের অর্থ এই না যে আমি নির্জনতাপ্রিয়’, আমাদের সাক্ষাৎকারের শুরুতে কবি লুইস গ্লুক বলেন।
গ্লুককে বেশ অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার জেতেন। মাস, কেমব্রিজে তাঁর বাসার বাইরে সাংবাদিকেরা সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সাতটা পর্যন্ত টানা তাঁর ফোন বেজে চলেছে। অপ্রত্যাশিত এই হঠাৎ মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে তিনি একে ‘দুঃস্বপ্নের মতো’ বলে অভিহিত করেছেন।
অবশ্য, এত দিনে গ্লুকের স্বীকৃতি পাওয়াতে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। পাঁচ দশকের লম্বা লেখক জীবনে তিনি ১২টি কবিতা সংকলন প্রকাশ করেছেন, জিতেছেন সাহিত্যের সম্মানজনক সব পুরস্কার—দ্য ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড, দ্য পুলিৎজার প্রাইজ, দ্য ন্যাশনাল বুক ক্রিটিক সার্কেল অ্যাওয়ার্ড, দ্য ন্যাশনাল হিউম্যানিটিজ মেডেলসহ আরও অসংখ্য পুরস্কার।
নিজের প্রলম্বিত, প্রত্যক্ষ ও স্বীকারোক্তিমূলক স্তবকগুলোর জন্য সাহিত্য সমালোচক ও সহকর্মীদের কাছে তিনি সমাদৃত।
‘তাঁর কাজগুলো অভ্যন্তরীণ কথোপকথনের মতো। হতে পারে তিনি নিজের সঙ্গে কথা বলছেন, বা হতে পারে তিনি আমাদের সঙ্গে কথা বলছেন। ব্যাপারটাতে এক ধরনের বিদ্রূপ আছে।’ তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সম্পাদক, জোনাথন গ্লাসি বলেন, তাঁর কাজে যেটা খুবই প্রচ্ছন্ন, তা হলো একটা অভ্যন্তরীণ কণ্ঠস্বর। তিনি সব সময় এমন কোনো আদর্শের বিপরীতে নিজের অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন করেন, যা এর সঙ্গে মেলে না।’
বিবাহবিচ্ছেদের পর নিঃসঙ্গ গ্লাকের জন্য গত কয়েক মাস ছিল খাপ খাইয়ে নেওয়ার সময়। মহামারির আগে সপ্তাহের ছয় রাতই তিনি বাইরে বন্ধুদের সঙ্গে ডিনার সারতেন। বসন্তের কয়েকটা মাস তিনি লেখার চেষ্টা করেছেন। তারপর গ্রীষ্মের শেষ দিকে আবার কবিতা লিখতে আরম্ভ করেন। তিনি ‘উইন্টার রেসিপিস ফ্রম দ্য কালেকটিভ’ নামে নতুন একটি সংকলন প্রস্তুত করে ফেলেছেন, যা আগামী বছর প্রকাশ করবেন বলে পরিকল্পনা করেছেন।
‘আশার কথা হলো, যদি আপনি বেঁচে থাকেন, তাহলে সেখানে শিল্পের অস্তিত্ব থাকবে’, তিনি বলেন।
প্রশ্ন :
খবরটি প্রথম কীভাবে পেলেন?
উত্তর: আজ সকালে পৌনে সাতটার দিকে একটা ফোনকল পেলাম। মাত্রই ঘুম থেকে উঠেছি তখন। নিজেকে সুইডিশ একাডেমির সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি বললেন, ‘আমি আপনাকে নোবেল পুরস্কার জেতার সংবাদ জানাতে ফোন করেছি’, আমি উত্তরে কী বলেছিলাম তা আর মনে করতে পারছি না। তবে সংবাদটার সত্যতা নিয়ে কিছুটা সন্দিহান ছিলাম। মনে হয়, আমি ঠিক প্রস্তুত ছিলাম না।
প্রশ্ন :
খবরের সত্যতা নিশ্চিত হওয়ার পরের অনুভূতিটা কী ছিল?
উত্তর: চূড়ান্ত রকমের বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে তাঁরা একজন শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান গীতিকবিকে বাছাই করেছেন। এটা একেবারেই হতবুদ্ধিকর একটা ঘটনা। এখন আমার বাসার সামনের রাস্তাটা সাংবাদিকে গিজগিজ করছে। লোকে আমার বিনয়ের প্রশংসা করছে। কিন্তু আমি বিনয় দেখাচ্ছি না। আমি এমন একটা দেশ থেকে এসেছি যাকে খুব বন্ধুত্বপূর্ণ চোখে দেখা হয় না। এ ছাড়া আমি শ্বেতাঙ্গ আর আমাদের দেখলেই যাবতীয় সব পুরস্কার। সব মিলিয়ে, আমার জীবনে কখনো এ মুহূর্তটির আবির্ভাব হবে, আমার কাছে তা ছিল একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: মহামারি চলাকালীন এই নিদারুণ বিচ্ছিন্ন মাসগুলোতে আপনার জীবন কেমন ছিল? লিখতে পেরেছেন?
উত্তর: আমি অক্লান্তভাবে লিখে চলি, সুতরাং এর বাঁধাধরা কোনো রুটিন নেই। চার বছর ধরে আমাকে যন্ত্রণা দিয়ে চলা একটা বইয়ের কাজ করছি। তারপর জুলাইয়ের শেষ দিকে আর আগস্টে আমি অপ্রত্যাশিতভাবে কিছু নতুন কবিতা লিখতে সক্ষম হয়েছি। পাণ্ডুলিপিটি কীভাবে সাজাব আর শেষ করব তা-ও আমার কাছে হঠাৎ পরিষ্কার হয়ে গেছে। ব্যাপারটা অলৌকিক। জীবনের স্বাভাবিক স্বস্তি আর উচ্ছ্বাস কোভিডের কারণে থমকে গিয়েছিল। প্রতিদিনের আতঙ্ক আর দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় সীমাবদ্ধতার সঙ্গে আমাকে লড়াই করতে হচ্ছিল।
প্রশ্ন :
নতুন বইটি কী নিয়ে?
উত্তর: বিচ্ছিন্নতাবোধ। বইটিতে প্রচুর শোক প্রকাশিত হয়েছে। অবশ্য প্রচুর হাস্যরসও আছে। আর কবিতাগুলো খুবই জাদুবাস্তব। লিখতে শুরু করার প্রথম থেকেই আমি মৃত্যু নিয়ে প্রচুর লিখেছি। আক্ষরিক অর্থেই ১০ বছর বয়স থেকে আমি মৃত্যু নিয়ে লিখে গেছি। তবে হ্যাঁ, প্রাণচঞ্চল একটা মেয়ে ছিলাম আমি। বয়স বেড়ে যাওয়া একটা জটিল প্রক্রিয়া। এর মানে কেবল এই না যে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন আপনি। বরং আপনার মূল্যবান শারীরিক সক্ষমতা, দৈহিক শক্তি-সামর্থ্য ও মানসিক দৃঢ়তাগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে বা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। ভাবনা বা লেখার জন্য বিষয়টা খুবই আগ্রহ জাগানিয়া।
প্রশ্ন :
ধ্রুপদি পুরাণ থেকে নির্যাস নিয়ে আপনার বহু কাজ গড়ে উঠেছে। খুবই সমসাময়িক পারিবারিক বন্ধন ও সম্পর্কগুলোও আপনার স্তবকে পৌরাণিক কাহিনিকে নিবিড়ভাবে আঁকড়ে ধরে আন্দোলিত হয়। পৌরাণিক কাহিনিগুলো কেন আকৃষ্ট করে আপনাকে? এসব কাহিনিই বা কীভাবে কবিতার মাধ্যমে যা বলতে অথবা ধরতে চাইছেন আপনি, তার সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠে?
উত্তর: যাঁরা লেখেন, তাঁদের সবাই-ই নিজেদের প্রাথমিক স্মৃতি থেকে মালমসলা বা জ্বালানি সংগ্রহ করেন। অর্থাৎ শৈশবের যে স্মৃতিগুলো আপনাকে বদলে দিয়েছিল, ছুঁয়ে গিয়েছিল বা আন্দোলিত করেছিল, সেসব। আমার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মা-বাবা আমাকে গ্রিক পুরাণ পড়ে শোনাতেন। যখন নিজে পড়তে শিখলাম, তখন এগুলো নিজেই পড়তে শুরু করলাম। লং আইল্যান্ডের অন্য শিশুদের তুলনায় এসব কাহিনির দেবতা আর নায়কেরা আমার কাছে বেশি আকর্ষণীয় ছিল। ব্যাপারটা এমন না যে অদূর ভবিষ্যতে এগুলো দিয়ে কিছু করব, তা ভেবে তখনই ছক কেটে রাখছিলাম। এগুলো ছিল আমাকে ঘুম পাড়ানোর গল্প। আর কিছু গল্প আমার নিজের সঙ্গে মিলে যেত, মূলত পার্সিফোনির সঙ্গে। ৫০ বছর ধরে তাঁকে নিয়ে আমি যখন-তখনই লিখে গিয়েছি। এ ছাড়া আমার মনে হয় বাকি সব উচ্চাভিলাষী মেয়ের মতোই আমি আমার মায়ের সঙ্গে আজীবন লড়ে গিয়েছি। মনে হয়, এই বিশেষ পৌরাণিক গল্পটি আমার ওই সব লড়াইয়ে নতুন করে প্রেরণা জুগিয়েছে। অবশ্য এটা আমি বলতে চাচ্ছি না যে আমার বাস্তব জীবনে এটা খুব উপকারে এসেছে। লেখালিখির সময় মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার বদলে আমি বরং দিমিতারের (গ্রিক কৃষিকাজের দেবী) বিরুদ্ধে অভিযোগ আনি।
প্রশ্ন :
কেউ কেউ আপনার কাজকে সিলভিয়া প্লাথের সঙ্গে তুলনা করে থাকেন। স্তবকগুলোকে আপনি স্বীকারোক্তিমূলক ও অন্তরঙ্গ হিসেবে বর্ণনা করেন। নিজের কাজ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন কী? বা বৈশ্বিক মানবতার অনুসন্ধানে নিজেকে কতটা ব্যাপৃত করেছেন বলে মনে করেন?
উত্তর: আপনি সব সময় নিজের অভিজ্ঞতার আলোকেই লেখেন। কারণ এটুকুই আপনার জীবনের সম্বল, নিজের শৈশব থেকে শুরু করে। তবে আমি মৌলিক অভিজ্ঞতার অনুসন্ধান করেছি। আমার মনে হয়েছে, আমার নিজের সুখ ও সংগ্রাম আদতে খুব আলাদা কিছু নয়। আপনি নিজে যখন এসব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন, তখন এদের আলাদা, বিশেষ কিছু ভাবতে পারেন। কিন্তু আমি কেবল আমার নিজের আর নিজের গতানুগতিক জীবনধারার ওপর আলোকপাত করতে আগ্রহী ছিলাম না। বদলে চেয়েছিলাম মানুষের সুখ আর সংগ্রামের ওপর দৃষ্টিপাত করতে, যারা জন্ম নেয় আর মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য হয়। আমার মনে হয়, আমি মরণশীলতা নিয়ে লিখতে শুরু করেছিলাম, কেননা জীবন অনন্ত নয়, শৈশবের এই আবিষ্কার আমাকে ভয়ানকভাবে ধাক্কা দিয়েছিল।
আমি এমন কোথাও পৌঁছাতে চেয়েছিলাম, যা আমার কাছে অজানা। হতে চেয়েছিলাম অচিনভূমির এক অভিযাত্রী। বয়স বেড়ে যাওয়ার অল্প কিছু আশীর্বাদের মধ্যে একটা হলো আপনার ঝুলিতে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়। তিলে তিলে ক্ষয়ে যাওয়া কখনোই সবচেয়ে প্রত্যাশিত আনন্দ হতে পারে না, কিন্তু এর মধ্যেও কিছু শুভ বার্তা আছে। আর একজন কবি বা লেখকের জন্য এই অভিজ্ঞতাটুকু অমূল্য। আমার মনে হয়, আপনার সব সময় বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতা অটুট রাখতে হবে। আর কোনো না কোনোভাবে আবার শুরু থেকে শেখার আগ্রহ থাকতে হবে।
প্রশ্ন :
লেখালিখির পুরো সময়টা ধরে বিভিন্ন ধরনের কাব্যধারা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন আপনি। অথচ তার পরও আপনার মূল সুরটা সব সময়ই প্রচ্ছন্ন ছিল। বিভিন্ন কাব্যধারা নিয়ে এ পরীক্ষাগুলো কি স্বতঃপ্রণোদিত, সচেতন প্রচেষ্টা ছিল?
উত্তর: হ্যাঁ, সব সময়। লেখালিখিটা অনেকটা অভিযাত্রার মতো। আমি এমন কোথাও পৌঁছাতে চেয়েছিলাম, যা আমার কাছে অজানা। হতে চেয়েছিলাম অচিনভূমির এক অভিযাত্রী। বয়স বেড়ে যাওয়ার অল্প কিছু আশীর্বাদের মধ্যে একটা হলো আপনার ঝুলিতে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়। তিলে তিলে ক্ষয়ে যাওয়া কখনোই সবচেয়ে প্রত্যাশিত আনন্দ হতে পারে না, কিন্তু এর মধ্যেও কিছু শুভবার্তা আছে। আর একজন কবি বা লেখকের জন্য এই অভিজ্ঞতাটুকু অমূল্য। আমার মনে হয়, আপনার সব সময় বিস্মিত হওয়ার ক্ষমতা অটুট রাখতে হবে। আর কোনো না কোনোভাবে আবার শুরু থেকে শেখার আগ্রহ থাকতে হবে। এটা না থাকলে আমি হয়তো বিরক্তিতে কেঁদেই ফেলতাম। তারপর এমন এক সময় আসে, যখন আমি ভাবি...আমি ভাবি, বুঝতেই পারছেন, তুমি কবিতাটি লিখে ফেলেছ। খুবই চমৎকার একটি কবিতা, কিন্তু ততক্ষণে আপনি তা লিখে ফেলেছেন!
প্রশ্ন :
বার্ধক্যের অভিজ্ঞতা কবি হিসেবে আপনাকে নতুন নতুন অনুসন্ধানের সুযোগ দিয়েছে বলতে ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন?
উত্তর: আপনি হয়তো আবিষ্কার করবেন একটা বিশেষণ মনে করতে পারছেন না অথচ বিশাল একটি বাক্য রচনা করে ফেলেছেন। এখন হয় আপনাকে ওই বাক্যটি নতুন করে আবার লিখতে হবে, না হয় এটাকে বাতিল করে দিতে হবে। লক্ষণীয় বিষয় হলো, ব্যাপারটা আপনি বুঝতে পারছেন, কিন্তু আগে কখনো ঘটেনি। যদিও এটা বিষণ্ন, ক্লান্তিকর ও বিরক্তিকর একটা প্রক্রিয়া, তার পরও শিল্পীর দৃষ্টিতে কিন্তু অভিনব আর চমৎকার।
প্রশ্ন :
আপনার বৈশিষ্ট্যকে প্রায়ই ব্যাখ্যা করা হয় প্রলম্বিত আর অতিরঞ্জিত বলে। আপনার এই স্বরটা কি স্বাভাবিকভাবে আসা, নাকি পরিমার্জন করে তাকে এই রূপে নিয়ে এসেছেন?
উত্তর: কখনো কখনো প্রলম্বিত, সত্যিই। মাঝেমধ্যে আমি প্রেরণা থেকেই লিখি। স্বরের ওপর কাজ করতে হয় না। বাক্যগুলো নিজেরাই গেয়ে ওঠার পথ খুঁজে নেয়। ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করা আদতে কঠিন। কখনো মনে হয়, আমি শব্দবিন্যাসের সৌন্দর্য আর শক্তিতে মুগ্ধ। সব সময় আমি এর শক্তিটা অনুভব করতে পারি। আর যে কবিতাগুলো আমাকে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করেছিল, শাব্দিকভাবে তারা ছিল খুব বেশি মোহনীয়। ব্লেক (উইলিয়াম ব্লেক) বা মিল্টনের (জন মিল্টন) মতো কবিদের শব্দবিন্যাস ছিল অপূর্ব, যেভাবে জোরালো রূপে তাদের ব্যবহার করা হয়।
প্রশ্ন :
ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনি পড়াচ্ছেন। নিজের লেখালিখির সময় সম্মুখীন হওয়া সমস্যাগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে শিক্ষকতা আপনাকে কীভাবে সহায়তা করেছে, এর আগে তা বলেছেন। এখন বলুন, শিক্ষকতা আপনাকে কীভাবে লেখক করে তুলেছে?
উত্তর: আপনাকে অব্যাহতভাবে নতুনত্ব আর অপ্রত্যাশিতের সমুদ্রে অবগাহন করতে হচ্ছে। নিজের ধারণাগুলো প্রতিনিয়ত পুনর্নির্মাণ করতে হচ্ছে—যেন নিজের শিক্ষার্থীদের সামনে তাদের আগ্রহোদ্দীপকভাবে তুলে ধরতে পারেন। আমার ছাত্ররা আমাকে মুগ্ধ করে, বিস্মিত করে। আর সব সময় লিখতে না পারলেও অন্যদের লেখা আমি পড়তে পারি সব সময়।
প্রশ্ন :
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য। আপনি কি আর কিছু যোগ করতে চান?
উত্তর: আপনি যদি এটা ধরে নেন যে আমার কিছুই বলার ছিল না ভেবে শুরু করেছিলাম, আর তারপর মাথা খাটিয়ে বলে গিয়েছি, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। সত্যিকার অর্থে জরুরি, যা কিছু আমি বলতে চাই, তার সবটা আমি আমার কবিতার মাধ্যমেই বলি। এ ছাড়া বাকি সব কেবল আনন্দের জন্য।
অন্যআলো ডটকমে লেখা পাঠানোর ঠিকানা: [email protected]