ইচ্ছের কফিনবক্স

কাঁটাবনে কোনো গাছই নেই, কাঠের কফিনবক্স আছে। 

অথচ কাঁটাবন—এই শব্দবন্ধে কারও মনে হতে পারে কোনো একদিন খুব কাঁটাভরা গাছ ছিল, গাছ থাকলে ফুল ছিল, পশুপক্ষী ছিল। ছিল মানে এখন তা নেই আর, যেমন একদা বাড়ির সামনে পাতাবাহার ছিল, এখন তা নেই আর। যেমন মুহূর্ত, বুকের ভেতরে বুক ঘষবার...

এখন কাঁটাবন একটি বিশ্ববিদ্যালয় মার্কেট। দেদারসে বিক্রি হচ্ছে প্রতিদিন ফুল, পাখি, অ্যাকুরিয়ামভর্তি বিদেশি মাছ, কুকুর-বিড়ালের ছানা ও কাঠের কফিনবক্স। মৃত্যু ও হত্যা বেশি হলে ফুল ও কফিনবক্স বিক্রি বেড়ে যায়। নির্ঘুম কফিন বিক্রেতাকে খুশি খুশি লাগে।

কাঁটাবনে যদি কাঁটাভরা বনানী না থাকে, তাহলে তোমার মধ্যেও তুমি নেই আর, আমার মধ্যেও আমি নেই। হ্যাঁ, আমি হয়তো একটি টলোমলো প্রেমের কবিতা লিখতে পারি, যার মধ্যে ধুপধুপ ভালোবাসার ধুকপুকানি থাকবে না, রেললাইনের ওপর অকারণ বসে থাকা থাকবে না, নদীর ধারে বেড়াতে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে থাকবে না, তোমার জন্য আমার মধ্যে যে আদিগন্ত অপেক্ষাসমূহ ঘাপটি মেরে থাকে, তা থাকবে না। হ্যাঁ, তুমি জয়ী, তুমি একটি ছেঁড়া টাকার নোট আমার বাবার মতো ঝাপসা দৃষ্টির দোকানদারকে আলগোছে গছিয়ে দিতে পেরে দারুণ স্বস্তি পেয়েছ।

কাঁটাবনে আর কোনো কাঁটামুখী বন নেই। ভালোবাসার মধ্যেও আর কোনো ভালোবাসা নেই, ভালোবাসার কবিতাও তাই আজ আর কোনো ভালোবাসার কবিতা নয়, কবিতারা ইচ্ছের কফিনবক্সমাত্র