নিউইয়র্কে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান অব্যাহত
বিশ্বের রাজধানী বলা হয়ে থাকে যে শহরকে, সেই নিউইয়র্ক কখনো ঘুমায় না বলে প্রচলিত আছে। আজ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কবলে সেই শহর প্রায় নীরবে ঘুমাচ্ছে। তবে বিমানের ফ্লাইট, শপিং মল, রেস্টুরেন্ট, বার, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছু আপাত বন্ধ হয়ে গেলেও থেমে নেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম।
ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে মার্চের ১১ তারিখ নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সিটি ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়র্ক এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউইয়রর্কের তত্ত্বাবধানে থাকা সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়কে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। হঠাৎ করেই এ রকম সিদ্ধান্তের জন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষক কেউই প্রস্তুত ছিলেন না। তাই অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার জন্য সব কিছু গুছিয়ে নিতে শিক্ষকদের দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। সেমিস্টারের মাঝ বরাবর হঠাৎ করেই অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার নির্দেশ আসায় শিক্ষকেরা কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। অনেকে জানান, অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার ফলে পুরো সিলেবাস ঢেলে সাজাতে হয়েছে৷
নিউইয়র্কের প্রান্তিক নগরী বাফেলোতে বাফেলো স্টেট কলেজে বায়োটেকনোলজি নিয়ে তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করছি। বাফেলোতে নিউইয়র্ক শহরের মতো করোনার সংক্রমণ এত হয়নি। কলেজে অনলাইনে পাঠদানের জন্য প্রত্যেক শিক্ষকই আলাদা আলাদা ব্যবস্থা নিয়েছেন। কেউ ক্লাস লেকচার ভিডিও করে অনলাইনে দিয়ে দিয়েছেন। কেউ জুম অ্যাপের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে লাইভ ক্লাস নিচ্ছেন। শিক্ষকেরা ই মেইলের মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করছেন। গুরুত্বপূর্ণ বা জটিল বিষয় না বুঝলে শিক্ষকেরা ফোন কল অথবা ভিডিও কলের মাধ্যমে তা বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সব বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট ও পরীক্ষা অনলাইনেই নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের ওপর যাতে অযাচিত চাপ না দেওয়া হয় সে জন্য প্রশাসন থেকে বলে দেওয়া হয়েছে।
অনলাইন কার্যক্রমের সঙ্গে সবাই আগে থেকেই পরিচিত থাকলেও হঠাৎ করে সেমিস্টারের মাঝখানে এসে সব ক্লাস অনলাইনে নেওয়ার নির্দেশ আসায় সবাই যে হযবরল অবস্থা হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন শিক্ষকদের সহযোগিতায় অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম অনেকটাই সহজ হয়ে উঠছে। শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা ও সার্বিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে হার্ভার্ড, এমআইটির মতো বিশ্ববিদ্যালয় এ সেমিস্টারে গ্রেডিং সিস্টেমের পরিবর্তে শুধু পাশ ফেলের মাধ্যমে রেজাল্ট প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্যান্য অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এ দাবি জানাচ্ছেন।
করোনাভাইরাসের জন্য এ বছর প্রায় সব জায়গাতেই গ্রীষ্মকালীন ইন্টার্নশিপ স্থগিত করার ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে। মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার এটিও একটি কারণ। কিন্তু তারপরেও এ অজানা শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করে আবার সুদিন ফিরে আসবে এ প্রত্যাশাই করছি।