ট্রেনে ঢিল ছুড়ে মানুষের ক্ষতি করব না
দুয়ারে কড়া নাড়ছে ঈদ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ উৎসব উপভোগ করতে চান সবাই। ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যেতে পারবেন কামাল উদ্দিন, তবে রমজানের শেষ মুহূর্তে। রমজানের শেষ মুহূর্তে পরিবার নিয়ে ভিড়ের মধ্যে বাড়িতে যাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর। তাই আগে থেকেই স্ত্রী-সন্তানদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে দীর্ঘ লাইনে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করেছিলেন। সকালের ট্রেনে পরিবারের সদস্যদের ট্রেনে উঠিয়ে দিতে পেরে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। এরপর চলে গেলেন অফিসে। দুপুরের দিকে স্ত্রীর মোবাইল নম্বর থেকে কল। ভাবলেন, দ্রুত বাড়িতে পৌঁছে কল দিয়েছেন। একটু খুশিতেই ফোন ধরলেন কামাল। কিন্তু শুনলেন অনাকাঙ্ক্ষিত দুঃসংবাদটি। আদরের মেয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে। দুষ্টু ছেলেদের ট্রেনে ছোড়া পাথরের আঘাতে আহত হয়ে রেলওয়ে পুলিশের সহযোগিতায় চিকিৎসা নিচ্ছে সে। বাকরুদ্ধ কামালের চোখে নেমে আসে অন্ধকার।
এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে। ছোট ছেলেমেয়েরা খেলার ছলে দুষ্টুমি করে চলন্ত ট্রেনে ঢিল ছোড়ে। কিন্তু এ ঢিল বা পাথরের আঘাতে প্রায়ই ঘটে নানা দুর্ঘটনা। ট্রেনের গ্লাস ভেঙে যায়। চোখে মুখে ঢিল লেগে যাত্রীরা গুরুতর আহত হয়। কখনো কখনো চোখে লেগে চিরতরে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়। এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে থাকে। এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা রোধে রেললাইন–সংলগ্ন এলাকার স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষ এলাকায় মাইকিং, সভা-সমাবেশ ও কাউন্সেলিং করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করছে। বিশেষ করে রেললাইনের আশপাশে থাকা বস্তিগুলোতে এ ব্যাপারে অধিক জনসচেতনতা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড থানা এ উদ্যোগ শুরু করে ইতিমধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। অন্যান্য থানাও এ ধারাবাহিকতায় জনসচেতনতা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশের পাশাপাশি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে এলে ট্রেনে অনাকাঙ্ক্ষিত ঢিল ছোড়া প্রতিরোধ করা আরও সহজ হবে। কমে আসবে এ ধরনের দুর্ঘটনা, ট্রেনযাত্রা হবে নিরাপদ ও শঙ্কামুক্ত। যথাযথ জনসচেতনতা পারে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে। এ জন্য এগিয়ে আসতে সবাইকে।