ডেঙ্গু জ্বরে পানিশূন্যতা
যেকোনো জ্বর হলেই শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়ে। তাই বাড়তি ক্যালরি ও পানির প্রয়োজন বেশি পড়ে। অনেকে জ্বর হলে কিছু খাবেন না বলে ঠিক করেন। আবার জ্বরের সময় বেশির ভাগ মানুষেরই রুচি কমে যায়। তাই সব মিলে পানিশূন্যতা তৈরি হয়। তাই এই সময় রোগীর খাবারের প্রতি অনীহা থাকলেও পুষ্টি উপাদান ও পর্যাপ্ত পানির চাহিদা পূরণে রোগীকে সঠিক খাবারদাবার চালিয়ে যেতে হয়।
এ বিষয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোবিন্দ চন্দ্র রায় বলেন, এই সময়ে জ্বর মানেই ডেঙ্গু জ্বর। জ্বর হলেই অতিরিক্ত ক্যালরি ও পানি প্রয়োজন পড়ে শরীরের। আর এবার ডেঙ্গু জ্বরে প্লাটিলেট কমে যাওয়ার পাশাপাশি শক সিনড্রোম বেশি হচ্ছে। প্লাজমা রক্তনালি থেকে বের হয়ে শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হচ্ছে, রক্তচাপ অনেক কমে যাচ্ছে। এর ফলে মাল্টিপল অরগ্যান ফেলিউর হয়ে রোগী মারা যেতে পারে। এ জন্য একজন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর জন্য সঠিক পুষ্টির প্রয়োজন। তাকে যথাযথ তরলজাতীয় খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে দেওয়া গেলে পানিশূন্যতা হওয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
কী খাবেন?
প্রচুর পরিমাণে তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে যেন পানিশূন্যতা তৈরি না হয়। যেমন—ডাবের পানি, লেবুর শরবত, গ্লুকোজের শরবত, ফলের জুস এবং খাবার স্যালাইন গ্রহণ করা যেতে পারে। এমন নয় যে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে, পানিজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। তেল বা চর্বিজাতীয় খাবার, ভাজাপোড়া খাবার এই সময়ে এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। প্রতিদিন ২.৫-৩ লিটার পানি খাওয়াতে হবে। ডাল পাতলা করে, সবজি ও মুরগির মাংস দিয়ে স্যুপ করে দেওয়া যেতে পারে। সব রকম সহজপাচ্য খাবার খেতে দিতে হবে।
পূর্ণ বিশ্রামে কেন?
জ্বর হলে বিশ্রামে থাকতে হবে। জ্বর নিয়ে দৌড়াদৌড়ির ফলে ঘেমে গিয়ে পানিশূন্যতা তৈরি হতে পারে।
হালকা দৈনন্দিন কাজ করলেও প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে। এই সময়ে বাইরে বের হলে সঙ্গে খাবার স্যালাইন, গ্লুকোজের শরবত নিয়ে বের হবেন। মাথা ঘোরালে বা শরীরের রক্তচাপ কমে গেলে খাবার স্যালাইন, গ্লুকোজের শরবত বা যেকোনো তরল খাবার তাড়াতাড়ি খেতে দিতে হবে।
লেখক: চিকিৎসক