ডায়াবেটিস বর্তমানে খুব পরিচিত একটি রোগ। যে শর্করা খাবার থেকে আমরা শক্তি পাই, সেই শর্করা খাবার ভাঙার জন্য খুবই প্রয়োজনীয় হরমোন হলো ইনসুলিন। এটা তৈরি হয় অগ্ন্যাশয় গ্রন্থি থেকে। বিভিন্ন কারণে এই ইনসুলিন তৈরির পরিমাণ কমে গেলে বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে যে রোগ হয়, সেটাই ডায়াবেটিস। টাইপ-১ ও টাইপ-২—দুই ধরনের ডায়াবেটিস হওয়ার মূল কারণগুলো হলো:
অতিরিক্তি ওজন, উচ্চ রক্তচাপ, ট্রাইগ্লিসারাইড বেড়ে যাওয়া, ব্যায়ামহীন জীবন, বংশগত ইত্যাদি।
নিয়মিত যোগভ্যাসের মাধ্যমে অসুস্থ অগ্ন্যাশয় আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠে। ইনসুলিনের ক্ষরণও নিয়মিত হতে পারে। ঠিকমতো ডায়েটের পাশাপাশি সঠিক নিয়মে যোগাভ্যাস করলে অবশ্যই উপকার পাবেন।
কুর্মাসন
যেভাবে যাবেন: বজ্রাসনে বসুন। দুই হাত মুষ্টি করে এমনভাবে স্পর্শ করুন, যেন দুই মুষ্ঠি ও দুই কনুই পরস্পরের সঙ্গে লেগে থাকে। এবার কনুই দুটি নাভির ওপর রেখে আস্তে আস্তে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ুন। থুতনি উঁচুও রাখতে পারেন বা মুষ্ঠির ওপরও রাখতে পারেন। শ্বাস-প্রশ্বাস ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ করুন।
সময়: ৩০ সেকেন্ড করে ৫ বার করুন। অবশ্যই খালি পেটে করবেন।
উপকারিতা: ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। হজমপ্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। ভুঁড়ি কমাতে সাহায্য করে।
অর্ধমৎসেন্দ্রাসন
যেভাবে করবেন: দুই পা টান টান করে দণ্ডাসনে বসুন। ডান পা এমনভাবে ভাঁজ করে রাখুন, যেন ডান পায়ের গোড়ালি নিতম্বের বাঁ পাশ স্পর্শ করে এবং ডান হাঁটু শরীরের মধ্য রেখা বরাবর থাকে। এবার বাঁ পায়ের পাতা ডান হাঁটুর সামনে বা ডান হাঁটুর বাইরের দিকে রাখুন। মনে রাখবেন, যে হাঁটু ওপরে উঠে থাকবে, সেই দিকের হাত পেছনে ঠেস দেবেন। যেহেতু বাঁ হাঁটু ওপরে, তাই বাঁ হাত যথাসম্ভব শরীরের কাছাকাছি রেখে ঠেস দিন। শ্বাস নিয়ে ডান হাত টান টান করে উঁচু করুন এবং শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে বাঁ হাঁটুর বাইরের দিক থেকে নিয়ে ডান হাঁটু ধরার চেষ্টা করুন। দৃষ্টি শরীরের পেছন দিক বরাবর দেবেন। এভাবে একদিকে করার পর হাত-পা পরিবর্তন করে বিপরীত দিকেও করুন।
সময়: ডানে-বাঁয়ে ৩০ সেকেন্ড করে মোট ৩-৫ সেট করুন।
উপকারিতা: ডায়াবেটিস রোগে খুব ভালো ফলদায়ক। কোমরের পার্শ্বভাগের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। মেরুদণ্ড নমনীয় করে।
মন্ডুকাসন
যেভাবে করবেন: বজ্রাসনে বসুন। বৃদ্ধাঙ্গুলি ভেতরের দিকে রেখে দুই হাতে মুষ্ঠি করুন। মুষ্ঠি দুটি পরস্পর স্পর্শ করে এমনভাবে নাভির ওপর রাখুন, যেন বৃদ্ধাঙ্গুলের দিক পেটের সঙ্গে স্পর্শ করে থাকে। আস্তে আস্তে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়ুন, যাতে দুই হাতে কনিষ্ঠা দুই পায়ের ঊরুতে স্পর্শ করে। দৃষ্টি নিচের দিকে বা সামনের দিকে দিয়ে রাখতে পারেন। এ অবস্থায় দম নিতে একটু কষ্ট হয়, তাই খুব ধীরে ধীরে ছোট ছোট শ্বাস-প্রশ্বাস নেবেন।
সময়: প্রথমে ১৫ সেকেন্ড করে শুরু করে ৩০-৬০ সেকেন্ড পর্যন্ত সাধ্য অনুযায়ী থাকতে পারেন। ৩-৫ বার প্রতিদিন অবশ্যই খালি পেটে করবেন।
উপকারিতা: ডায়াবেটিসের জন্য খুবই উপকারী। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, বদহজম দূর করতে সাহায্য করে।
লেখক: যোগব্যায়াম প্রশিক্ষক