চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ছয়টি চক্রের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য ঢুকছে অবাধে। প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও সহজলভ্যতার কারণে খুব সহজেই আসক্ত হয়ে পড়ছে কোমলমতী শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসে বসবাসরত যুবকেরা। পাশের ছয়টি কেন্দ্র (স্পট) থেকে গাঁজা, ফেনসিডিল, বাংলা মদ ও হেরোইনের মতো ভয়াল নেশাদ্রব্য ছড়িয়ে পড়ছে ক্যাম্পাসে। অনুসন্ধানে জানা যায়, সুইসগেট এলাকার ইদ্রিস ও হারুন এবং চবি রেলক্রসিংয়ের ওসমান ও আনিসের কাছ থেকে আসছে গাঁজা ও বাংলা মদ। হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ডের করিম, ফতেয়াবাদ রেলস্টেশনের নজরুল, ফতেয়াবাদ উচ্চবিদ্যালয়ের পেছনের সাবের এবং ১ নম্বর গেটসংলগ্ন মদনহাটের রাশেদের কাছ থেকে আসছে জীবননাশী হেরোইন। গাঁজা ছোট পুরিয়া (পোল্টি) ৩০ টাকা, বড় পুরিয়া ৬০ টাকা, ফেনসিডিল ৪৫০-৫০০ টাকা, বাংলা মদ হাফ স্যালাইন ২০০ টাকা, ফুল স্যালাইন ৪০০ টাকা, হেরোইন ব্রাউন সুগার এক পুরিয়া ১০০ টাকা।সরেজমিন ক্যাম্পাস ঘুরে মাদকসেবীদের বেশ কিছু আস্তানার খোঁজ পাওয়া গেছে। এগুলো হলো সুইসগেট, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ, চবি উচ্চবিদ্যালয়ের পেছনে, মুক্তমঞ্চ (রাতে), কলা অনুষদের ঝুপড়ির পাশের পুকুরপাড়, চবি রেলস্টেশন, শামসুর নাহার হলের ঝুপড়ির পাশে কথিত বাংলাতলা নামক (কড়াই) গাছের নিচে প্রচুর পরিমাণে মাদকসেবন করা হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে জানান, চবিতে অবস্থানকারী শিক্ষার্থী বিশেষ করে ছাত্রলীগ ও স্থানীয় যুবকেরা মাদকের ভয়াল গ্রাসে আক্রান্ত। বড় ভাইয়েরা ছোট ভাইদের হাতে তুলে দিচ্ছে পুরিয়া। এমনকি বিদ্যালয়ের ছাত্রদের হাতেও দেখা যায় গাঁজার পোল্টি।’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যাম্পাসে অবস্থানকারী চবি কর্মকর্তা জানান, ‘মামুন নামের এক যুবক নেশার টাকা জোগাড়ের জন্য পরিবারের সদস্যদের হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছে। আমি নিজেই অনেককে ২ নম্বর গেটসংলগ্ন কাঁঠালতলা ও পরিত্যক্ত পুলিশ ফাঁড়িতে হেরোইন সেবন করতে দেখেছি। ক্যাম্পাসে মাদক আশঙ্কাজনক হারে বিস্তার লাভ করেছে। এ অবস্থায় আমি আমার স্কুল ও কলেজে পডুয়া ছেলেদের নিয়ে ক্যাম্পাসে বসবাস করা নিরাপদবোধ করছি না।’চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসে মাদকসেবন বেড়েছে। আগে নির্দিষ্ট জায়গায় মাদক বিক্রি হতো। কিন্তু এখন মাদক বেচাকেনায় মুঠোফোন ব্যবহার করায় কে বা কারা এ মাদকচক্রের সঙ্গে জড়িত তা খুঁজে বের করা কঠিন।