সপ্তাহে তিন দিন বা তার বেশি ঘুম না আসা, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া, ঘুমোতে সমস্যা, অল্প সময় ঘুম হওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার পর ক্লান্তি ভাব, সারা দিন খিটখিটে ভাব ইত্যাদি ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রার লক্ষণ। মস্তিষ্কের নিউরোহরমোনাল অসামঞ্জস্য অনিদ্রার অন্যতম কারণ।
এমন সমস্যার কারণে কর্মক্ষমতা, বুদ্ধিমত্তা ও মনোযোগ কমতে পারে। শারীরিক ক্ষতিও হতে পারে। যেমন: ওজনাধিক্য, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হূদেরাগের ঝুঁকি বাড়ায়।
কারণ
১. মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, বিষণ্নতা, মানসিক আঘাত-পরবর্তী পরিস্থিতি।
২. ঘুমের পরিবেশের ব্যাঘাত যেমন: অতিরিক্ত শব্দ, আলো, গরম বা ঠান্ডা।
৩. ঘুমের নিয়মে পরিবর্তন, যা মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হরমোন নিঃসরণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে।
৪. সন্ধ্যার পর ধূমপান, অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল সেবন।
৫. ঘুমের আগে টিভি দেখা, ভিডিও গেমস খেলা।
৬. দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক অসুস্থতা, যেমন: বাত, ক্যানসার, হূদেরাগ, ফুসফুসের রোগ, গ্যাস্ট্রিক, থাইরয়েডের সমস্যা।
পরামর্শ
১. প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। ছুটির দিনসহ প্রতিদিন একই সময়ে ঘুম থেকে উঠে পড়ুন।
২. শোয়ার ঘর কেবল ঘুমের জন্য ব্যবহার করুন। সেখানে যেন অতিরিক্ত শব্দ বা আলো না থাকে।
৩. ঘুমের আগে হালকা গরম পানির গোসল, বই পড়া, মৃদু গান, উপাসনা বা ইয়োগা সাহায্য করতে পারে। বারবার ঘড়ি দেখবেন না।
৪. জোর করে ঘুমের চেষ্টা করবেন না। ২০ মিনিটের মধ্যে ঘুম না এলে উঠে পড়ুন। অন্য ঘরে যান, হালকা কিছু পড়ুন ঘুম না আসা পর্যন্ত।
৫. দুপুরে ৩০ মিনিটের বেশি বিশ্রাম নেবেন না, তা তিনটার আগেই সেরে নিন।
৬. ঘুমানোর চার-ছয় ঘণ্টা আগে ভারী কাজ, ব্যায়াম এবং অ্যালকোহল, কফি, ধূমপান এড়িয়ে চলুন।
৭. ঘুমানোর দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে নিন। এরপর খিদে পেলে এক গ্লাস দুধ খেতে পারেন।
l মেডিসিন বিভাগ, ইউনাইটেডহাসপাতাল।